E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুড়িগ্রামে প্রতিদিন কমছে তাপমাত্রা

‘জারতে মুই থর থর করি কাঁপছং, আগুন তোপালেও গাঁও গরম হয় না’

২০২৪ জানুয়ারি ১০ ১৬:৩১:৫৭
‘জারতে মুই থর থর করি কাঁপছং, আগুন তোপালেও গাঁও গরম হয় না’

প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, কুড়িগ্রাম : ‘এ কি ঠান্ডা, জারতে মুই থর থর করি কাঁপছং, আগুন তোপালেও গাঁও গরম হয় না’ কথাগুলো বলছিলো কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বাঁধ রাস্তার খিতাবখাঁ গ্রামের বানু মামুদ (৯০)। বয়য়সের ভারে নুয়ে পড়া ওই ব্যক্তি সামন্য একটু পুরাতন জ্যাকেট পড়ে খরকুটো দিয়ে আগুনে শরীর গরম করার চেষ্টা করলেও তেমন গরম না হওয়ায় কথাগুলো বলছিল। কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা কমতে থাকায়  রাজারহাট উপজেলার ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যায়। মানুষ ঘর থেকে বেড় হতে চায় না। শীতের তীব্রতা বেড়ে যায়। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মতো ঘন কুয়াশা পড়তে থাকে। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে পরদিন দুপুর পর্যন্ত শীতের তীব্রতা থাকে অনেক বেশী। শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষজন। ঠান্ডায়  জিবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের। তাপমাত্রা কমতে থাকায় কুড়িগ্রামে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষজন। ঠান্ডায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।  

বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এদিকে শীতার্ত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ৪৩ হাজার কম্বল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে।

শীত ও কনকনে ঠান্ডায় খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন হত-দরিদ্র মানুষজন। শীত ও কনকনে ঠান্ডায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। গতকালই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়াডে ভর্তি হয়েছে ২০ জন শিশু। সেখানে গাদা-গাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছে আক্রান্তরা। সেখানে সর্বমোট ভর্তি রয়েছে ৪৩ শিশু।

এদিকে উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাহিল হয়েছে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের মানুষগুলো। শীত ও কনকনে ঠান্ডা কাজে যেতে না পারায় কষ্টে পড়েছে শ্রমজীবিরা।

জেনারেল হাসপাতালের ডাইরিয়া ওর্য়াডে ভর্তি রাঁধিয়া নামের এক শিশুর মা রশিদা বেগম বলেন, শিশুর ডাইরিয়া নিয়ে গত পাঁচদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন ডাইরিয়া ভালো হয়েছে। তবে গতকাল আবার পরিক্ষা করে নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে। আরও যে কয়দিন হাসপাতালে থাকা লাগে আল্লাহ জানেন।

সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মাঠের পাড় এলাকার ভ্যান চালক বাদশাহ মিয়া বলেন, দুইদিন থাকি বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। এমন কুয়াশায় কাজে করা যায় না। গতকাল সারাদিনে রোদে উঠে নাই। খুব সমস্যা বর্তমানে কাজ করা।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন এমন থাকবে। তবে এ মাসে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহ এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।

(পিএস/এসপি/জানুয়ারি ১০, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test