E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভৈরবে ফাঁসিতে ঝুলে যুবকের আত্মহত্যা

২০২৪ জানুয়ারি ২৪ ১৪:৩৭:৪৩
ভৈরবে ফাঁসিতে ঝুলে যুবকের আত্মহত্যা

সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : ভৈরবে স্ত্রী বাবার বাড়ি থেকে না ফেরায় রাব্বি মিয়া (২০) নামে এক যুবক ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে দশটায় পৌর শহরের কমলপুর পঞ্চবটি এলাকায় মইক্কার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। রাব্বি মিয়া ওই এলাকার বেনু মিয়ার ছেলে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিহত রাব্বি মিয়ার সঙ্গে একই এলাকার জামাল হোসেনের মেয়ে নিঝুম আক্তারের গত ২ মাস ১৭ দিন আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। রাব্বি রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। তার স্ত্রী দুই মাসের অন্তসত্ত্বা ছিল। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়ির সাথে সম্পর্ক ভাল ছিল না রাব্বি মিয়ার। এ নিয়ে স্ত্রীর নিঝুমের সাথে প্রায়ই ঝগড়া করতো। ঝগড়া করে মাস খানেক আগে বউ বাবার বাড়িতে চলে যায়। বউকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে বাবা মায়ের সাথে প্রায়ই কথা কাটাকাটি করতো রাব্বি।

স্থানীয়রা আরো জানান, গত বছর ৬ নভেম্বর নিঝুম আর রাব্বির বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও নিঝুমের বয়স ১৪ ও রাব্বির বয়স ১৯ হওয়াতে তখনকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজের উপস্থিতিতে বাল্য বিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বর ও কনের অভিভাবকদের সাথে কথা বললে দুই পক্ষই তাদের ভুল স্বীকার করে এবং সরকারি আইন অনুযায়ী বিয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেনা বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা দেন। ওই দিন বাল্যবিয়ে দেয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা করে কনে ও বর পক্ষকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছিল। পরে আবার তাদের পরিবার প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু দিন যেতে না যেতেই তাদের বিয়ে দিয়ে দেন।
এ বিষয়ে নিহতের স্ত্রী নিঝুম ও তার পরিবারের সাথে কথা বলতে চাইলে কেউই কথা বলতে রাজি হয়নি।

এ বিষয়ে নিহতের বাবা বেনু মিয়া বলেন, রাতে আমার ছেলে হাসি মুখেই ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশে তার শ্বশুর বাড়িতে বউ আনতে যায়। সেখান থেকে হঠাৎ ঘরে এসেই দরজা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর গিয়ে আমি ডাকাডাকি করলে সে আর দরজা খুলে না। দরজা ভেঙ্গে দেখি রাব্বি ফাঁসিতে ঝুলে আছে। পরে তাকে ফাঁসি থেকে নামিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর মুমিনুল হক রাজু বলেন, আমাকে ফাঁকি দিয়ে রাব্বি ও নিঝুমের পরিবার তাদের বিয়ে দেয়। প্রথম বিয়ের আয়োজন করলে ইউএনও মহোদয়ের সেই বিয়ে পণ্ড করে দেয়। উনার কাছে তারা মুচলেকা দিয়ে ছিল। বিয়ের পর থেকে তাদের সংসারে কলহ লেগেই থাকতো লোক মুখে শুনেছি। ভয়ে আমার কাছে শালিশের জন্যও আসতো না। বাল্য বিয়ে দেয়াতেই এমন অঘটন ঘটেছে।

এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে লাশ হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে আসি। লাশের প্রাথমিক সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের পর বোঝা যাবে হত্যা না আত্মহত্যা। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের প্রক্রিয়া চলছে।

(এসএস/এএস/জানুয়ারি ২৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test