E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ

২০২৪ ফেব্রুয়ারি ০৫ ১৪:০১:৫১
সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : দুই বছর ধরে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঈশ্বরদীর দূর্গম চরাঞ্চলের ১০ গ্রামের মানুষ। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় নির্মাণাধীন সেতুর রডে মরিচা ধরে গেছে। এলাকাবাসী সেতুর কাজ ‌দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন । ২০২১ সালে ৪ এপ্রিল আট কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরকুড়লিয়া গ্রামে পদ্মার শাখা নদীর ওপর ৯৬ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পিলার বসানো ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। প্রকৌশল অফিস এরইমধ্যে ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। ঠিকাদারের গাফিলতির জন্য উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে দায়ি করেছেন এলাকাবাসী।

পদ্মার বিস্তীর্ণ চরঞ্চলে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে উৎপাদিত সবজিসহ অন্যান্য ফসল এই পথ দিয়ে ঈশ্বরদী ও পাবনা শহরে আনা-নেওয়া করা হয়। সেতু না থাকায় বর্ষাকালে ঝুঁকি নিয়ে নৌকা ও ভেলায় চড়ে নদী পারাপার হতে হয়। শুকনো মৌসুমে নদীর ঢালু পাড় দিয়ে গরু/মহিষের গাড়ি ছাড়া আর কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এতে ফসল আনা-নেওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে লক্ষীকুন্ডার কয়েকটি গ্রাম ছাড়াও পদ্মার তীরবর্তী পাবনা সদর উপজেলার চরভবানীপুর গ্রাম ও কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের সাত গ্রামের মানুষের যাতায়াতের পথ সুগম হবে বলে এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন।

সেতু নির্মাণ বিষয়ে ঈশ্বরদী এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, যশোরের আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড সেতু নির্মাণের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হলেও সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন ফুল মিয়া, জয়, নুরুজ্জামান খোকনসহ কয়েকজন ঠিকাদার। ঠিকাদারদের দাবি সবধরনের নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কারণে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।

কৃষক আরব আলী বলেন, নদীর ওপারে আমার বেশ কয়েক বিঘা জমি রয়েছে। প্রতিদিনই নদী পাড়ি দিয়ে ওপারে যেতে হয়। বর্ষাকালে গামছা ও হাফপ্যান্ট পরে সাঁতরে নদী পার হতে গিয়ে দুর্ভোগের শেষ থাকে না।

স্থানীয় ইমরান মন্ডল জানান, সেতুটি নির্মাণ শুরুর ছয় মাস পর থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রায় তিন বছরে কয়েকটি পিলার ছাড়া কোনো কাজ হয়নি। উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সাথে যোগসাজেশ থাকায় ঠিকাদার নির্মাণ কাজে গাফিলতি করছে।

চরকুড়লিয়ার কৃষক ময়েজ শেখ বলেন, বর্ষাকালে নদীতে ডুবো পানি থাকে। কখনো ভেলা আবার কখনো সাঁতার কেটে নদী পাড়ি দিতে হয়। ওপারে হাজার হাজার একর জমিতে ফসল হয়। এসব ফসল এই পথে আনতে হয়। আমাদের অসহনীয় কষ্ট নিজ চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না।

লক্ষীকুন্ডা ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার তরিকুল ইসলাম জানান, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে চলে যান। তবে কয়েকদিন হলো মালামাল আনতে শুরু করেছেন।

ঠিকাদার ফুল মিয়া জানান, খুব শিগগির সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে। ঈশ্বরদী ও পাবনা এলজিইডি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবির বলেন, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদাররা কাজ বন্ধ রেখেছিলেন। কাজের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন। আশা করছি, খুব শিগগির আবার কাজ শুরু করবেন।

পাবনা জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুর রহমান মন্ডল বলেন, দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুরু না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এসকেকে/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test