E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরগুনায় খালার হত্যাকারীকে পালাতে টাকা দিলেন হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী গ্রাম পুলিশ

২০২৪ ফেব্রুয়ারি ২৭ ১৮:০৪:১২
বরগুনায় খালার হত্যাকারীকে পালাতে টাকা দিলেন হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী গ্রাম পুলিশ

মোঃ শাজনুস শরীফ, বরগুনা : বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলাতে জমিজমার বিরোধে আপন খালাকে হত্যা করে তার কানের রিং বিক্রি করে সহযোগী খুনিকে পালাতে সহায়তা করেন আঃ মালেক (৩৮) নামের এক গ্রাম পুলিশ।

ওই ঘটনায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সকালে তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা বাজার থেকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী গ্রাম পুলিশ আঃ মালেককে গ্রেপ্তার করেছে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার রাতে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত মুল অপরাধী করিম খাঁকে মোংলা পৌরসভা এলাকা থেকে আটক করা হয়।

বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার উপ পরিদর্শক ও ক্লুলেস হত্যা মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল রাত আটটার সময় সাফিয়া বেগম বিকাশে টাকা তোলার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়।এরপরে ৬ এপ্রিল শারিকখালীর ধোপার ভিটার পূর্ব পাশে কালিরখালের কেওড়াগাছের নীচ থেকে নিখোঁজ সাফিয়া বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে তালতলী থানা পুলিশ।

এই ঘটনায় নিহত সাফিয়া বেগমের বোনের ছেলে গ্রাম পুলিশ আঃ মালেক ও তার আপন মামা পটুয়াখালী জেলার ছোট বিঘাই গ্রামে বসবাসরত ইউনুস চৌকিদার মরদেহ উদ্ধারের দিনই তাদের সঙ্গে জমিজমা বিরোধ রয়েছে বলে ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলো সোনা মিয়া, জাফর, সিদ্দিক ও ফারুক ঘরামী।

সাফিয়া খাতুন হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে ২০২৩ সালের জুন মাসে মামলাটি তদন্ত করতে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা সংস্থার উপর ন্যাস্ত করা হয়।

এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, নিহত সাফিয়ার বিভিন্ন তথ্য জানতে গিয়ে তার ঘনিষ্ঠ ও নির্ভরশীল ব্যক্তি স্হানীয় ফকির করিম খাঁ ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ। তাকে খুঁজে পেতে গোপনে বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা চালানোর পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার মংলা পৌরসভা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

দীর্ঘদিন পরে হত্যার আসল রহস্য উন্মোচন হওয়ায় সাফিয়ার পরিবার সঠিক বিচারের দাবি করেন।

হত্যার মূল আসামী করিম খাঁ ডিবি পুলিশকে জানায়, গ্রাম পুলিশ মালেকের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল তার খালা সাফিয়া বেগমের সাথে। সেই জমি দখল করতে ঘাতক করিমকে ৪০ হাজার টাকায় ভাড়া করেন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী গ্রাম পুলিশ আঃ মালেক।

ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে সাফিয়া বেগম তার বাড়ির সামনে বিকাশে টাকা তোলার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে আসলে তাকে ধরে পাশের সূর্যমুখী ক্ষেতে নিয়ে যায় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী গ্রাম পুলিশ আঃ মালেক ও ঘাতক করিম। সেখানে খালা সাফিয়াকে মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে আঃ মালেক ও করিম খাঁ হত্যা করে খালের পাশে মাটি চাপা দিয়ে পুঁতে রাখে। পরে আঃ মালেক নিহত খালা সাফিয়ার কানের স্বর্ণের রিং বিক্রি করে ঘাতক করিম খানকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ২০ হাজার টাকা ও পরে আরো ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে। বাকী ১৫ হাজার টাকা আর পরিশোধ করেনি।

এ ঘটনা নিয়ে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ বশিরুল আলম বলেন, বিভিন্ন সোর্স ও ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে তালতলীর সাফিয়া বেগম হত্যাকাণ্ডের মূল ঘাতক করিম খাঁকে মোংলা পৌরসভা এলাকা থেকে আটক করি। ঘাতক করিমকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী গ্রাম পুলিশ আঃ মালেকের নাম জানতে পারি। ঘাতক করিম খাঁ আটকের সংবাদে মালেক পালিয়ে যাবার সময় শনিবার ২৪ ফেব্রুয়ারী সকালে কচুপাত্রা বাজার থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। বিধি মোতাবেক তাদের বিরুদ্বে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

(এসএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test