E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

'আঙ্কেল, আপনার অতিরিক্ত লাভের টাকা জোগান দিতে আমার বাবার কষ্ট হয়’

২০২৪ মার্চ ১২ ১৪:৩৯:০৭
'আঙ্কেল, আপনার অতিরিক্ত লাভের টাকা জোগান দিতে আমার বাবার কষ্ট হয়’

রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : পবিত্র রমজান মাস শুরু। রজমানে সারা দেশে প্রায় প্রতিবছরই দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ে। সরকার সতর্ক করার পরেও এবারও অনেক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসায়ীদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে ভিন্নধর্মী এক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন।

রমজানে নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে স্কুল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে সোমবার বাজার মনিটরিং ও সচেতনতা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা।

সোমবার বেলা ১টার দিকে শহরের চকবাজার এলাকাসহ আশপাশের মার্কেটগুলোতে এই কার্যক্রম পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। এ সময় পণ্যের দাম নিয়ে কারসাজির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও ব্যাবসায়িক সংগঠনগুলোকে সতর্ক করা হয়। শহরের নিউমার্কেট, চকবাজার ফল পট্টি, মুদি বাজার, কাপড়পট্টি ও থানা রোডসহ বিভিন্ন দোকান, ফুটপাত ও শপিং মলে ব্যবসায়ীদের পণ্যের দাম এবং মূল্য তালিকা যাচাই করা হয়। এ ছাড়া রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে ক্রেতাদের নিকট থেকে অতিরিক্ত দাম না নেওয়ার অনুরোধ করা হয়।

এ সময় স্কুল শিক্ষার্থীদেরকেও হাতে প্লাকার্ড নিয়ে বাজার মনিটরিংয়ে অংশ নিতে দেখা যায়। প্ল্যাকার্ডে লেখা– ‘প্রিয় আঙ্কেল, প্লিজ দাম বাড়াবেন না, আমাদের কষ্ট হয়’, ‘আঙ্কেল, আপনার অতিরিক্ত লাভের টাকা জোগান দিতে আমার বাবার কষ্ট হয়’, ‘ব্যবসায়ীরা গরিবের বন্ধু, বন্ধুকে বাঁচাতে সাহায্য করুন’, ‘আঙ্কেল পোশাকের দাম বাড়িয়ে আমার ঈদের আনন্দ নষ্ট করবেন না’ ইত্যাদি।

বাজার মনিটরিং নিয়ে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘বিভিন্ন দপ্তরের বাজার মনিটরিংয়ের টিম নিয়ে পণ্যের দাম যাচাই করেছি। কিছু মসলার দামের ফারাক পেয়েছি। আগামীকাল থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। রমজান উপলক্ষ্যে পণ্যের দাম অতিরিক্ত নিলে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়াও ফুটপাত দখলকারীদের উচ্ছেদ করা হবে। বাজার ও মার্কেটগুলোতে মাসব্যাপী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ সকল ধরনের তদারকি অব্যাহত থাকবে।’

শিক্ষার্থীদের হাতে আবেদনময়ী প্লেকার্ড নিয়ে বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এই রমজানের সময় কিছু অসাধু ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের হৃদয়ে স্পর্শ করাতে একটু ভিন্ন আয়োজন ছিল। শিশুদের আবেদনের প্রেক্ষিতে কিছু পাষান মানুষেরও যাতে একটু হৃদয় গলে আরকি। প্রশাসনের রুটিন ওয়ার্ক তো করাই হয়ে থাকে। তবে শিশুদের আবেদনে ব্যাবসায়ীদের একটু মোটিভেট করার চেষ্টা করেছি মাত্র। এই কর্মসুচীতে শহরের ময়েজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণ করে।’

এই কার্যক্রমে আরও উপস্থিত ছিলেন– স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইয়াছিন কবির, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ব্যবসা ও বাণিজ্য শাখা) মো. মুজিবুল ইসলাম, জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখ, কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. শাহদাত হোসেন, কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান, টিআই তুহিন লস্করসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ বেশ কিছু পুলিশ সদস্য।

(আরআর/এএস/মার্চ ১২, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test