E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দিনাজপুরে মহোৎসবে দুই জোড়া বটপাঁকুড়ের বিয়ে

২০২৪ মার্চ ১৪ ১২:৩৬:৪৫
দিনাজপুরে মহোৎসবে দুই জোড়া বটপাঁকুড়ের বিয়ে

শাহ্‌ আলম শাহী, দিনাজপুর : মহোৎসবের মধ্যদিয়ে দিনাজপুরে হয়ে গেল দুই জোড়া বট ও পাঁকুড় গাছের বিয়ে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই দুই বিয়েতে বর- কনে পক্ষের অথিতি ছিল প্রায় ৫ হাজার। এছাড়াও অসংখ্য দর্শনার্থীর পদচারনায় মুখরিত ছিল বিয়ের স্থল। বুধবার (১৩ মার্চ) সকাল ৮ টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মহা ধুমধামে এই বট-পাঁকুড় গাছের বিয়ে দুটি সম্পন্ন হয়েছে দিনাজপুর শহরের রাজবাটিস্থ হিরা বাগান  এবং অপরটি হয়েছে সদর উপজেলার ৫ নং শশরা ইউনিয়নের দাসাপাড়া গ্রামে।

দাসাপাড়া গ্রামের বিয়েটিতে অতিথিদের নিমন্ত্রণপত্র পত্র দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দুই বিয়েতেই অতিথি আপ্যায়নে ছিল নিরামিষ খাবার। ৫ হাজার অতিথি আপ্যায়ন করানো হয় দু'টো বিয়েতে। ঢাক-ঢোল,সানাইয়ের সূর আর উলুধ্বনিতে মুখরিত ছিলো বিবাহ অঙ্গন। গেট আর সামিয়ানা টানিয়ে অপূর্ব সাজে সাজানো হয় দু'টি আয়োজন। বিয়ে ব্যাপক সাজসজ্জা ও আলপোনা এঁকে তৈরি করা হয় ছাদনাতলা ও মাড়োয়া। বিয়ে পড়ান ৪ জন করে ৮ জন পুরোহিত। অতিথিদের বসার ব্যবস্থা আর আপ্যায়নে নিয়োজিত ছিলো সেচ্ছাসেনবক দল।

শহরের রাজবাটিস্থ হিরা বাগান এলাকায় বিয়ের আয়োজক কালু মহন্ত জানান, বুধবার দুপুরে গায়ে হলুদের আয়োজনের মধ্যদিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। চলে রাত পর্যন্ত।

বর বেশে: পাকুড়গাছ, পিতাঃ শ্রী জগদিস দেবনাথ ও , মাতা: পুতুল দেবনাথ, ঠিকানা: রাজবাড়ী হিরাবাগান পুকুর পাড়া , সদর, দিনাজপুর।

আর কনে সেজে: কুমারী বটগাছ, পিতা: কালু মহন্ত ও মাতা: আলপোনা মহন্ত, ঠিকানা: হিরা বাগান পুকুর পাড়া, সদর, দিনাজপুর।

ছেলের বাবা শ্রী জগদিস দেবনাথ ও মাতা: পুতুল দেবনাথ বলেন, তাদের কোন ছেলে সন্তান নেই। তারা চার কন্যার জনক-জননী। তাই তারা পূণ্যের আশায় ছেলে বেসে পাকুড় গাছকে বিয়ে দিয়ে ঋণ পরিশোধ করেছেন।

অপরদিকে মেয়ের বাবা কালু মহন্ত ও মাতা: আলপোনা মহন্ত জানান, তাদের কোন কন্যা সন্তান নেই। তাদের দুই ছেলে। তাই তারা বট গাছকে মেয়ে সেবে বিয়ে দিয়ে দুনিয়াতে মেয়ে বিয়ের দায় পরিশোধ করছেন।

পুরহিত বিজয় শ্রী নারায়ন চন্দ্র ঝাঁ জানান, লোকাচার মেনে সনাতন রীতি অনুযায়ী ছেলে মেয়েদের যে ভাবে বিয়ে হয় সেভাবেই বট-পাঁকুড়ের বিয়ে দেয়া হলো । এটিকে বিয়ে বললেও আসলে এটি হলো বট-পাঁকুরড়কে এক সঙ্গে স্থাপন করা। কারণ বট-পাঁকুড় কন সময় এক সঙ্গে জন্মায়না। তাই তাদের বিয়ে দেয়া হয়।

একই রীতিতে সদর উপজেলার ৫ নং শশরা ইউনিয়নের দাসাপাড়া গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে হয়েছে। সেখানে পাকুড়ে গাছের অথ্যাৎ ছেলের বাবা ছিলেন দয়াল চন্দ্র রায় ও বট গাছের অথ্যাৎ মেয়ের বাবা ছিলেন প্রভাত চন্দ্র রায়। এই বিয়েতে প্রধান পুরহিত ছিলেন জয়ন্ত ব্যানার্জি।

এদিকে জাকজমকপূর্ণ ব্যাতিক্রমি এই বিয়ে দুটি দেখার আশেপাশের লোকজনসহ হাজারো মানুষ ভিড় জমায় ।

পুরোহিত অলক ব্যানার্জি জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের অমঙ্গল থেকে রক্ষা করার বিশ্বাস থেকে বটপাকুড়ের বিয়ে। অর্থাৎ অশ্বত্থাদিবৃক্ষ বটেশ্বরি-পাকুড়েশ্বর প্রতিষ্ঠা করা।

দুই বিয়েতে প্রায় ৫ হাজার অতিথিকে আপ্যায়ন করা হয়েছে।

(এসএএস/এএস/মার্চ ১৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test