E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৬, আটক ১১

২০২৪ মার্চ ১৮ ১৩:৪২:১১
সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৬, আটক ১১

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত  ১৬ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এঘটনায় একপক্ষের নেতা উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ ইমারত হোসেন পিকুল মোল্যাসহ উভয়দলের ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

রবিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত উপজেলার রামকান্তুপুর ইউনিয়নের মদনদিয়া এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রামকান্তুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইশারত হোসেনের সঙ্গে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ইমারত হোসেন পিকুলের দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল।

ইশারত ও পিকুল আপন মামাতো-ফুফাতো ভাই। তারা দুই জন গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনে ইরাশত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তাদের বিরোধ আরও তীব্র হয়। এই বিরোধের জেরে ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই দিন আগে পিকুলের সমর্থক ফজলু মাতুব্বরের সঙ্গে ইশারতের সমর্থক ওমর মোল্যার কথাকাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি নিয়ে কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় উত্তেজনা চলছিল।

একপর্যায় রবিবার সন্ধ্যায় ইফতারের পর উভয় গ্রুপের কয়েক'শ সমর্থক দেশীয় অস্ত্র ঢাল, কাতরা, ভেলা, টেটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত উভয় গ্রুপের দফায় দফায় চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এ সময় পুরো এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত ১৬ জন আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম পাওয়া সম্ভব হয়নি।

সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফায়েজুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির সংবাদ প্রাপ্তির পর এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উভয় পক্ষের প্রধানদের থানায় ডেকে যাতে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সে লক্ষ্যে তারা অঙ্গীকারনামা প্রদান করে যায় গত দুই দিন আগে। কিন্তু তারা তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে গতকাল এক পক্ষ আরেক পক্ষ অর্থাৎ পাল্টাপাল্টি আক্রমণ করে ইট পাটকেল ছুড়ে এবং ঢাল কাতরা সহ পাল্টাপাল্টি হামলা চালায়। সংবাদ পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ঘটনাস্থল থেকে প্রিভেন্টিভ মেজর হিসেবে ঘটনার সাথে জড়িত উভয় পক্ষের ১১ জনকে আটক করে। সেখানে একটি দোকান ঘরের মালামাল হামলা করে ওলট-পালট করে ফেলে দেয়। বর্তমানে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

একপক্ষের নেতা ইমারত হোসেন পিকুল মোল্যার আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, পিকুল মোল্যাকে আটক করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ ইউপি চেয়ারম্যান ইশারত হোসেনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল গণমাধ্যমকে বলেন, খবর পেয়ে ওসিসহ সঙ্গীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ১০রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৬টি টেটা, ১০টি কাতরা, ১১ টি বাঁশের লাঠি, ৫ টি ঢাল ও ১ টি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় এক গ্রুপের নেতা পিকুল মোল্যাসহ ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ইশারত হোসেনসহ সংঘর্ষে জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(এএনএইচ/এএস/মার্চ ১৮, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test