E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অধ্যক্ষের স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলেশনে স্বাক্ষর না দেয়ায় সভাপতিকে মারধর

২০২৪ মার্চ ২৪ ১৮:২১:৩১
অধ্যক্ষের স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলেশনে স্বাক্ষর না দেয়ায় সভাপতিকে মারধর

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : মাদ্রাসার অধ্যক্ষের স্ত্রী নিয়োগের রেজুলেশনে স্বাক্ষর না দেওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে মারধর করে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করার পর সভাপতিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুর ১২ টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার রাতেই অধ্যক্ষ ও সাবেক ইউপি সদস্য সহ মোট ৫ জনের নামে টুঙ্গিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ তৈয়াবুর রহমান।

অভিযুক্তরা হলেন, গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুজাফর মোহাম্মাদ সালেহ (৫৮), সাবেক ইউপি সদস্য মনির শিকদার (৪৫), গজালিয়া গ্রামের বাদশা শিকদারের ছেলে আরিফ সিকদার (২৮), মৃত মুসলিম শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান (৫৫) ও জাকির শেখ (৪৫)।

অভিযোগ বলা হয়েছে, গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষ পদটি দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য ছিলো। বর্তমান অধ্যক্ষ আবুজাফর মোহাম্মাদ সালেহ তার স্ত্রী রওশন আরা পারভীনকে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পায়তারা করে আসছিলেন। তাই ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ওই মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে গত ২০ জানুয়ারি অধ্যক্ষ আবু জাফরের স্ত্রী সহ আরও তিনজন ডামি প্রার্থী পার্শ্ববর্তী একটি মাদ্রাসায় লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষায় শুধুমাত্র অধ্যক্ষের স্ত্রীকেই উত্তীর্ণ করা হয়। তখন অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে সভাপতি শেখ তৈয়াবুর রহমান অধ্যক্ষের তৈরিকৃত রেজুলেশনে স্বাক্ষর দেয়নি। তাই সভাপতিকে মিটিংয়ের কথা বলে মাদ্রাসায় ডেকে স¦াক্ষর করতে বলা হয়। তখন সভাপতি স¦াক্ষর করতে না চাইলে বহিরাগতদের দিয়ে মারধর করায় অধ্যক্ষ।

মারধরের শিকার গিমাডাঙ্গা গজালিয়া মহিলা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ তৈয়বুর রহমান বলেন, গত ২৩ মার্চ (শনিবার) অধ্যক্ষ আবু জাফর শিক্ষক নিয়োগের চাহিদাপত্র সংক্রান্ত আলোচনার জন্য আমাকে মাদ্রাসায় ডাকে। কিছু সময় পরে অধ্যক্ষ তার স্ত্রীর নিয়োগ রেজুলেশনে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি স্বাক্ষর না করলে মাদ্রাসা থেকে বের হতে দেবে না বলেও হুমকি দেন। সেখানে আগে থেকে ওতপেতে থাকা বহিরাগতরা অধ্যক্ষের নির্দেশে আমাকে মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। আমি সুু বিচার পেতে মামলা করেছি।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, সভাপতি তৈয়াবুর মাদ্রাসায় আসার পরে স্বাক্ষর করতে বলেছি। কিন্তু স্বাক্ষর পরে করবে বলে সে জানায়। তখন অন্য শিক্ষকদের বলেছি দেখো তার টাকা-পয়সা নেওয়ার কোন ইচ্ছা আছে কিনা। কারন বিপদ তো আমার, পূনরায় নিয়োগ দিলেই এক লাখ খরচ হয়ে যাবে। ডিজি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি স্বাক্ষর করেছে। সভাপতি কেন স্বাক্ষর করবে না! সবাই মিলে অনুরোধ করার পরেও সভাপতি স্বাক্ষর না দেওয়ায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। তখন একটু হাতাহাতির ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু আমি বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করেছি।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ গোলাম কবির বলেন, বিষয়টি আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে জানতে পারলাম। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করে দেখবেন। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(টিবি/এসপি/মার্চ ২৪, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test