E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

স্নান না করেই শেষ হলো বারুণী স্নানোৎসব

শ্যামনগরে ইটভাটার রাবিশ ও পোল্ট্রি মুরগির বর্জ্য যমুনায় 

২০২৪ এপ্রিল ০৭ ১৮:৩৬:১১
শ্যামনগরে ইটভাটার রাবিশ ও পোল্ট্রি মুরগির বর্জ্য যমুনায় 

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সোনার মোড়ে যমুনা নদীর পাড়ে অনুষ্ঠিত হলো সনাতন ধর্মের অনুসারীদের ১৩৩ বছরের বারুণী পূজা, স্নানোৎসব ও মেলা। গত শনিবার শ্যামনগর উপজেলার সোনার মোড় নামক স্থানে যমুনা নদীর পাড়ে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সমাগম হয় হাজারো মানুষের। পুরান মতে, চৈত্রমাসে কৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে শতভিষা নক্ষত্র যোগ হলে সে তিথি বারুণী যোগ বলা হয়। এবং হিমালয় কন্যা গঙ্গার অপর নাম বারুণী তাই বারুণী স্নান এখানে গঙ্গা স্নানের প্রতিরুপ শাস্ত্র মতে, ঐদিনটি যদি শনিবার হয়ে থাকে তবে বারুণী স্নান অসাধারণনত্ব লাভ করে। সেই বিশ্বাসে উপজেলার বর্তমান সোনার মোড় বারুনী মেলার পরিচালনাকারী বরুণ ঘোষের দাদা সনাতন ঘোষের হাত ধরে যমুনা নদীর তীরে বারুণী মেলার সূচনা হয় এবং সনাতন ঘোষের নাম অনুসারে সোনার মোড় নাম করণ হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে শতবর্ষী বারুণী মেলার চারিপাশে ঘুরে দেখা যায়, যমুনা নদীর বিপরীত পাশে থাকা ভাটার ক্যামিকাল মেশানো পুড়ানো কয়লার রাবিশ যমুনা নদীতে ফেলার কারণে ভরাট হয়ে আছে দর্শনার্থী সহ পূর্ণার্থীদের স্নান করার ঘাটের পাশে এবং অপর অংশে সোনার মোড় মাছের সেট (বাজার) পোল্ট্রি মুরগি পাখনা ও বর্জ্য ফেলার কারণে দূর্গন্ধে কালো ঘোলা জলে পূর্ণার্থীরা স্নান করতে পারিনি বলে অভিযোগ করেন। এমন কি যমুনা জল স্পর্শ ও করতে গন্ধে বমি করতে দেখা যায় মেলায় আসা বাদঘাটা গ্রামের সবিতা বালাকে। নতিনি বলেন,বারুনী স্নান করতে জল দেখে নামতে পারলামনা মাথায় যে দেব কালো জল মুরগীর পাখনা পাঁচার গন্ধে বমি করে ফেলছি।

এ বিষয়ে বারুণী মেলার আয়োজক বরুণ ঘোষের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাদার হাতে প্রতিষ্টিত যমুনা পাড়ে বারুনী মেলা কেন্দ্র করে উপজেলার হাজার হাজার পুণ্যার্থীরা আসে যমুনার পবিত্র জলে স্নান করতে কেও আবার মাথায় সিটিয়ে দেয় পুন্যের আশায়, কিন্তু এবছর দেখেন ভাটার কয়লার রাবিশ ফেলে যমুনা নদী প্রায় ভরাট করে দিয়েছে। সাথে প্রতিদিনের সোনার মোড় বাজারের পোল্টি মুরগির পাখনা বর্জ্য ফেলে কালো পঁচা জলে এবার আর কেউ স্নান করতে পারিনি। আমি মানা করলে ও কেউ শুনেনা আমার কথা, শতবর্ষী পার করা এই মেলা টিকিয়ে রাখা বড় দ্বায়।

তিনি আরো বলেন, আমি সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম আতাউল হক দোলন, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রভাষক সাঈদ-উজ-জামান সাঈদ, জেলা পরিষদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বাংলা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা ডলি, ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শোকর আলী আসছিল। তাদের সরজমিন সব দেখিয়েছি। এমপি সাহেব দেখে সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর অফিসে ফোন দিয়েছিলেন। তারা আশ্বাস দিয়েছেন সোমবার সরজমিন এসে ব্যাবস্থা নিবে।

সাতক্ষীরা -৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এস এম আতাউল হক দোলন বলেন, আমরা ছোটবেলায় এই মেলায় বেড়াতে আসতাম, অনেক মজা করতাম অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এখানে। খুব দ্রুতই এর সমাধান করা হবে। যাতে করে ভক্তরা আবারও বারুণী পূজায় যমুনা নদীতে স্নান করতে পারে।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা শাখার উপপরিচালক সরদার শফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার অফিসে যেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরকে/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test