E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে কৃষি লোনের নামে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

২০১৪ মে ০২ ১৮:১৫:০৪
বাগেরহাটে কৃষি লোনের নামে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে সহজ শর্তে কৃষি লোন বিতরণের নামে দেড় কোটি টাকা অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের গোয়ালমাঠ শাখায় প্রায় কোটি টাকার অনিয়ম ধরা পড়েছে। প্রায় ১ মাস ধরে এই অনিয়মের তদন্ত চলছে। বিভিন্ন নামে, বেনামে ও একাধিক ভূয়া নামে ঋণ দেখিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা যোগসাজসে এই টাকা আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে কোটি টাকার উপরে আত্মসাতের অভিযোগের পর বাগেরহাট অগ্রণী ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটি তদন্তের নামে এখন সময় ক্ষেপন করে এর অন্তরালে এই আত্মসাতকৃত টাকা সমন্বয় করছে বলে একটি পক্ষ অভিযোগ করেছে।

অগ্রণীব্যাংকের একটি পক্ষ জানান, সহজ শর্তে কৃষি লোনের নামেঅগ্রণী ব্যাংকের বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গোয়ালমাঠ শাখা হতে ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত স্বনির্ভর এনজ্ওি’র মাধ্যমে ১ কোটি সাতাত্তর লক্ষ ছাপ্পান্ন হাজার আটশত তের টাকা বিতরণ করা হয়। যার অধিকাংশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজসে ব্যাংক ম্যানেজারসহ উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ ও মাঠ পর্যায় থেকে আত্মসাত করা হয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গোয়ালমাঠ শাখার ব্যবস্থাপক এমদাদ হোসেনের অবসর প্রস্তুতি জনিত (পিআরএল) ছুটিতে গেলে ওই শাখায় মলয় কিশোর বিষ্ণু নামের একজন নতুন ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু পিআরএল ছুটিতে যাওয়া এমদাদ হোসেন ঋণ ও অন্যান্য বিভাগের ডকুমেন্ট বর্তমান ব্যবস্থাপককে বুঝিয়ে না দিয়ে গড়িমসি শুরু করে। এক পর্যায়ে ডকুমেন্টসহ সমস্ত লেজার সুষম করার সময়ে ঋণের টাকা বিতরণের অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়।

ব্যাংকের একাধিক ব্যক্তি জানান,অগ্রণী ব্যাংকের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজসে প্রায় দুই কোটি টাকা নামে, বেনামে ও ভূয়া ঋনগ্রহীতা দেখিয়ে আত্মসাত করা হয়েছে। আর এই কাজে ব্যাংক ব্যবস্থাপক এমদাদ হোসেন স্বনির্ভর বাংলাদেশ নামের একটি এনজিওর ম্যানেজার সরদার আলমগীর হোসেনকে কাজে লাগায়। এই আলমগীর হোসেন এক সময়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা বনে যায়। এমনকি এই আলমগীরও ব্যাংকের এই টাকার একটি অংশ আত্মসাত করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। ব্যাংকে নতুন ব্যবস্থাপকের আনাগোনা টের পেয়ে আলমগীর হোসেন ৩১ মার্চ থেকে আত্মগোপনে চলে যায়।
সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, স্বরির্ভর ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের অধীনে বাগেরহাটেরঅগ্রণী ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা, জনতা ব্যাংকের অধীনে ১৮ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা, সোনালী ব্যাংকের অধীনে ২৫ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা এবং কৃষি ব্যাংকের অধীনে ৬৩ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা সহজ শর্তে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়। আর এই সকল ঋণ বিতরণের মধ্যে ব্যাংকের অসাধূ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিজেদের নামে, বেনামে ও ভূয়া নাম ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাত করেছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের উর্ধ্বতন অডিট টিমের মাধ্যেমে সনাক্ত করা সম্ভব। দুই-একজন কৃষক নামে মাত্র ঋণ পেলেও তা সুদ-আসলে পরিশোধ করতে অনেক কৃষকের হালের বলদ পর্যন্ত বিক্রি করতে হচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন মাঠ পর্যায়ের অনেক কৃষক দাবি করেন, বাগেরহাটের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে সহজ শর্তে ৫০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের সুযোগ থাকলেও ব্যাংক গুলো এই টাকা বণ্টন না করে নিজেরাই সুযোগ মত আত্মসাত করার সুযোগ নিচ্ছেন।
এদিকে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার শুধুমাত্র গোয়ালমাঠ শাখা থেকে ১ কোটি ৭৭ লক্ষাধিক টাকা বিতরণ করা হয়। যার সম্পূর্ন কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী আত্মসাত করে। এ ব্যাপারে বাগেরহাট অগ্রনী ব্যাংকের আঞ্চলিক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আনোয়ার হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকের কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই ধরনের দূর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত করেছে। এমন খবর পেয়ে ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার দিলিপ কুমার মন্ডল, আব্দুল মালেক ও আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত টিমের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(একে/এএস/মে ০২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test