E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এসএসসির ফরম পূরণে ১৫ হাজার টাকা !

২০১৪ নভেম্বর ২৫ ১৬:০৪:০৬
এসএসসির ফরম পূরণে ১৫ হাজার টাকা !

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি ফরম পূরণে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় এবং নির্বাচনীয় পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে জামানত আদায়ের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ১১টার সময় জামানতের কথা শুনেই ফরম পূরণ করতে সোলতানা আক্তার এলমা, নারগিস আক্তারসহ কয়েক পরীক্ষার্থী জ্ঞান হারালে তাদেরকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এঘটনায় খবর পেয়ে ইউএনও ওই বিদ্যালয় এসে পরিচালনা কমিটির সাথে রুদ্ধদার বৈঠক করে অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। এদিকে ১-২ বিষয় অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী বিদ্যালয় অবস্থান করে থাকেন। ২৬ নভেম্বর ফরম পূরণের শেষ দিন।

পৌর শহরের এলএম পাইলট উচ্চ বিদ্যায়ল ও রায়পুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় গিয়ে দেখা গেছে, ফরম পূরণে তিন হাজার ৫০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও ১-২ বিষয় অকৃতজ্ঞ হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা জামানত হিসেবে অতিরিক্ত আদায় করছেন।

মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার-নির্ধারিত ফি এক হাজার ১৫০ টাকা। অথচ বিদ্যালয়গুলো শুধু ফরম পূরণের জন্য চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে আদায় করছে। উপজেলার ২৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে। ফরম পূরণে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের জন্য বোর্ড ফি নির্ধারণ করে দেয় এক হাজার ১৫০ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য এক হাজার ২৫০ টাকা। গত কয়েক দিনে ৬০ শতাংশ পরীক্ষার্থী ফরম পূরণের টাকা জামা দিয়েছে। অর্থ-সংকটের কারণে অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে ওই টাকা জোগাড় করা সম্ভব হবে না।

অভিভাবক শ্যামলী কুরি জানান, তাঁর মেয়ে পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যায় থেকে নির্বাচনীয় পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দুই বিষয় অকৃতকার্য করে। পরে তার ফরম পূরণের জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষক অতিরিক্ত ১৫ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করায় তিনি এখনো ফরম পূরণের টাকা দিতে পারেননি। একই অভিযোগ করেন, শাহাজান পাটোয়ারী, বেলাল, আরিম হোসেন ও পরীক্ষার্থী নাহিদা সুলতানা, আফসার মিলি আনিকা, বৈশাখী কুরিসহ একাধিক অভিভাবক। এতে তাঁদের মেয়ের পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

অভিভাবক বেলাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফরম পূরণে তিন-চার গুণ বেশি টাকা আদায় করে এবং জামানত হিসেবে আবার ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ধার্য করেছেন। এ কারণে অনেক পরীক্ষার্থী এখনো ফরম পূরণ করতে পারেনি। শিক্ষকেরা জাতির পথপ্রদর্শক। অথচ তাঁরা পরীক্ষার্থীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন।


পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যায়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মনজুরু কাদের বলেন, কোচিংসহ অন্যান্য খরচের জন্য অরিতিক্ত কিছু টাকা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও নির্বচনী পরীক্ষায় এক-দুই বিষয় অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জামানত হিসেবে অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা নেয়ার জন্য পরিচালনা কমিটি সিন্ধান্ত দিয়েছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে যদি কোন বিদ্যালয় জামানত হিসেবে ১ টাকাও আদায় করেন, তবে সম্পূর্ণভাবে অন্যায় করেছেন। ১০-১৫ হাজার টাকা তো প্রশ্নেই আসে না। এছাড়ও বৈঠক করে শিক্ষকদের বোর্ডফির বাইরে কোনো অর্থ না নিতে বলা হয়েছে। এর পরও কেউ অতিরিক্ত অর্থ নিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আলম জানান, ফরম পূরণে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় এবং অকৃতকার্যদের কাছ থেকে জামানত নেয়ার খবর পেয়ে ওই বিদ্যালয় গিয়ে অনিয়ম না করার জন্য পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(এমআরএস/এএস/নভেম্বর ২৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test