E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হয়রানী ও দুর্ভোগের আবর্তে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা

২০১৪ ডিসেম্বর ০৩ ১৫:৩৩:১৬
হয়রানী ও দুর্ভোগের আবর্তে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা

মেহেরপুর প্রতিনিধি :ব্যাপক হয়রানি ও দূর্ভোগের কবলে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা । যদিও মুক্তিযোদ্ধাদের যোগ্য সম্মান প্রদান সহ মূল্যায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার । তথাপিও  সরকারের চোখ এড়িয়ে কিংবা সরকারকে বিভ্রান্তিতে রেখে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে চরমভাবে নাজেহাল, অপমান ও বঞ্চিত করা হচ্ছে ।

আর তা করছে সরকারেরই কোন সংস্থা দপ্তর এবং কর্তা স্থানীয় কোন ব্যাক্তি মনগড়া অযুহাতে ও বিভ্রান্তির ধুম্রজাল ছড়িয়ে পদে পদে মুক্তিযোদ্ধাদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে আরো হয়রনি বঞ্চনা ও দুর্ভোগের অতল গহব্বরে ।

বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে প্রবর্তন করেছিলেন যুদ্ধাহত রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা । প্রবর্তিত ভাতার রাষ্ট্রীয় নীতিমালার আওতায় ১৯৯৬-২০০১ সালে যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্ত তথ্য সংগ্রহ সহ যাচাই বছাই শেষে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের নিবন্ধিত করা হয়। ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি সম্পর্ণ হওয়ার শেষ পর্যায়ে সরকার পরিবর্তিত হয়। ৪ দলীয় জোট সরকার ২০০২ সালে পরিবর্তন করে ভাতার নীতিমালা । সেনাবাহিনী উচ্চ পর্যায়ে একটি কমিটি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে পূর্ণ যাচাই-বাচাই ও পরীক্ষা-নিরিক্ষা সস্পূর্ণ করে । যে আলোকে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা প্রচলিত রাষ্ট্রীয় প্রথা অনুযায়ী ২০০৩ সাল থেকে যুদ্ধাহত সম্মানী ভাতা পেয়ে আসছে।

কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রানালয়ে হঠাৎ করে গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রচলিত এই ভাতা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেই প্রথমত: বিস্ময়ে হতবাক দ্বিতীয়ত : ক্ষোভে ফেটে পড়ে যুদ্ধাহত (ডি) মুক্তিযোদ্ধারা । গত ২২ অক্টোবর ক্ষুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সম্মুখে অবস্থান নিলে মন্ত্রীমহোদয় তাতক্ষনিক ভাবে আদেশটি প্রত্যাহার করেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি গেজেট ও যাচাই-বাচাই সংক্রান্ত খোঁজের অযুহাত তুলে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেছেন ।

এ প্রসঙ্গে ক্ষুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধারা বলেছেন এক মুরগী কতবার জবাই হয়? আর কতবার আমাদেরকে দাঁড়াতে হাবে আসামীর কাটগড়ায় ? ১৮ বছর পূর্বে এই সরকারেরই ১৯৯৬-২০০১ সময়ে ব্যপক পরিকল্পনা ও কর্মসূচীর আওতায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচই সম্পূন্ন হয়েছে। কেন্দ্র থেকে তৃনমূল পর্যšত ¯তরে ¯তরে, পর্যায়ে-পর্যায়ে, প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাকে পূনঃ পূনঃ যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া সম্পূর্ন করেই তালিকা (মুক্তিবার্ত লালবই) প্রণীত হয়েছে। ২০০৫ সালে একই মুক্তিযোদ্ধকে পূনঃ যাচাই করে গেজেট ভূক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও একই মুক্তিযোদ্ধাকে পূনরায় “যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা” হিসাবে ২০০০/২০০১ সালে এবং ২০০৩ সালে পৃথক পৃথক ভাবে যাচাই বাছাই সম্পন্ন করা হয়েছে।

এ কথায় বলা যায় সকল প্রক্রিয়া একাধিকবার সম্পূর্ন করেই প্রায় ১২ বছর ধরে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিশ্চিত করা হয়েছে। ভাতা সংক্রান্ত গেজেট করনের দায়-দায়ীত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। অথচ অদৃশ্য কোন কারনে গড়িমসি করে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বর্তমানে সেই গেজেটের-ই অজুহাত তুলে যুদ্ধাহত ডি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ রাখার অপপ্রয়াস চলছে। পক্ষাšতরে আবারো যুদ্ধাহতদের যাচাই-বাছাইয়ের ধোঁয়া তুলে গেজেট করনকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিলম্বিত ও বিতর্কিত করে তোলা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সকল মহল আশা করছেন- যুদ্ধাহত ডি মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অযথা হয়রানী, অসম্মান ও বঞ্চনা করার এই প্রবনতা অথবা চক্রান্ত’র দিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তথা সরকার স্বত্বর নজর দেবেন, খতিয়ে দেখবেন এবং আশু সমাধানের পদক্ষেপ নেবেন। অন্যথায় মুক্তিযুদ্ধের ৪৩ বছর পরে মুক্তিযুদ্ধেরই সরকারের সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবিচার, আপমান, বঞ্চনা ও হয়রানী করার অভিযোগে সৃষ্ট অসন্তোষ ও ক্ষোভ আরো প্রকট আকার ধারণ করবে। আর এর দায়ভার সরকারের ঘাড়েই চেপে বসবে। কলংকিত হবে সরকারের মুক্তিযুদ্ধের ভাবমূর্তি।

(এনবি/এসসি/ডিসেম্বর০৩,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test