E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুর্গাপুরে মুক্ত দিবস পালিত

২০১৪ ডিসেম্বর ০৬ ১৩:০৯:১৫
দুর্গাপুরে মুক্ত দিবস পালিত

দুর্গাপুর(নেত্রকোণা)প্রতিনিধি :নেত্রকোণার দুর্গাপুরে র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে পালিত হল দুর্গাপুর মুক্ত দিবস।

উপজেলা প্রশাসন চত্বরে সকাল ১০ টায় দুর্গাপুর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার আলহাজ্ব রুহুল আমীন চুন্নু,উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমদাদুল হক খান,উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুকের নেতৃত্বে এক বর্নাঢ্য র‌্যালি পৌর শহরের প্রধান প্রধান রাস্তা প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়।

এর পর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা চেয়ারম্যান এমদাদুল হক খান এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের বক্তব্য রাখেন প্রবীণ ব্যাক্তিত্ব দূর্গা প্রসাদ তেওয়ারী ,মেয়র শ,ম,জয়নাল আবেদীন, অধ্যক্ষ ড.ভবানী সাহা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আল আজাদ,রুহুল আমীন চুন্নু ,সোহরাব হোসেন তালুকদার,সিদ্দিক আহাম্মেদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি আব্দুল্ল্যাহ হক প্রমূখ। উল্লেখ্য যে, বর্নাঢ্য র‌্যালিতে অংশ গ্রহন করেছে উপজেলার স্কুল /কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ,সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি সহ সকল মুক্তিযোদ্ধারা।

দুর্গাপুর ১৯৭১ সালে ৬ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয়েছিল যেভাবে :

৬ ডিসেম্বর দুর্গাপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল ছেলেরা ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় সশস্্র রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে নেত্রকোণার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরকে মুক্ত করে। পাক হানাদার বাহিনীর মেজর সুলতানের নেতৃত্বে দুর্গাপুরের মিশনারীজ এলাকা বিরিশিরিতে একটি শক্তিশালী পাকসেনা ঘাঁটি গড়ে উঠেছিল ,আর এখানে বসেই পাকসেনারা বাংলার কুখ্যাত দালাল, আলবদর, রাজাকারদের সহযোগিতায় নিয়ন্ত্রন করত দুর্গাপুর সদর সহ কলমাকান্দার সীমান্ত এলাকা লেংগুড়া,নাজিরপুর এবং দুর্গাপুরের বিজয়পুর। সেইসাথে রাতের আধাঁরে বিরিশিরির বধ্যভূমিতে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হতো মুক্তিকামী মানুষদের।

যাদের সর্বপ্রথম হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে রয়েছে দুর্গাপুর কৃষাণ কলেজের অধ্যক্ষ আরজ আলী, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আশুতোষ সান্যাল, এম,কে,সি,এম পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আওয়াল, দুর্গাপুরের তদানিন্তন এম,এন,এ পুরাকান্দুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা, কুল্লাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আলী হোসেন ও আশুতোষ সান্যাল,ধীরেন্দ্র পত্রনবিশ উল্লেখযোগ্য।

দুর্গাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব রুহুল আমীন চুন্নু জানান, ১৯৭১ সালের ৪ মে ২ জন পাক সেনা গাঁওকান্দিয়া গ্রামে গিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে নারী ধর্ষনের চেষ্টা চালালে ছোট্রুনীর নেতৃত্বে গ্রামবাসীরা তাদের ধরে কুপিয়ে হত্যা করে। এরই জের ধরে ৫ মে বিরিশিরি ক্যান্টনমেন্ট থেকে এক ঝাঁক পাক সেনা গাঁওকান্দিয়া গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষ সহ ১৯ জন গ্রামবাসীকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে গুলি করে ও পুড়িয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। এ ছাড়া সুসং ডিগ্রী কলেজের ছাত্র দিলদার হোসেন ,কৃষক ইমাম হোসেন ,বিল্লাল হোসেন সহ নাম না জানা আরো অনেককেই হত্যা করা হয়েছিল।

সীমান্তবর্তী বিজয়পুর সংলগ্ন স্থানে আমাদের সোনার ছেলেরা মুক্তিবাহিনীর একটি ব্রাশ ফায়ারে ১০জন পাক সেনাকে হত্যা করে আনন্দ উল্লাসে জয় বাংলা ধ্বনি উচ্চারন করে এগিয়ে আসতে থাকলে ওৎ পেতে থাকা পাক হায়নাদের গুলি এসে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সন্তোষ বিশ্বাসের মাথায় আঘাত করলে তৎক্ষনাৎ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তারই নামানুসারে দুর্গাপুর সদরে নির্মিত হয় শহীদ সন্তোষ পার্ক। দুর্গাপুরে মুক্তিযুদ্ধে আরো ২জন শহীদ হয়ছিলেন তিনারা হলেন সুধীর হাজং ও আব্দুল জব্বার।


(এনএস/এসসি/ডিসেম্বর০৬,২০১৪)


পাঠকের মতামত:

১২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test