E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

থানছির ২ ইউনিয়নে খাদ্য সংকটের আশংকা

২০১৪ মে ০৪ ১৬:৩৪:৩৯
থানছির ২ ইউনিয়নে খাদ্য সংকটের আশংকা

বান্দরবান প্রতিনিধি : পার্বত্য বান্দরবানের দুর্গম থানছি উপজেলার রেমাক্রী ও তিন্দু ইউনিয়নে খাদ্য সংকটের আশংকা দেখা দিয়েছে। নির্বিচারে বন ধংস ও প্রচণ্ড তাপদাহে সাঙ্গু নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় খাদ্য সংকটের কবলে পড়তে যাচ্ছে প্রায় কয়েক হাজার উপজাতি পরিবার। আগামী দু’এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হলে বয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা।

সিঙ্গাফা মৌজার হেডম্যান মু শোয়ে থুই মারমা জানান, রেমাক্রী ইউনিয়নের অতিদুর্গম বড়মদক এলাকায় ৫০ কেজির এক বস্তা চাল নদী পথে পরিবহণ করতে ব্যয় হচ্ছে ৫‘শত টাকা। থানছি সদর থেকে বড়মদক পর্যন্ত প্রতিকেজি চালের উপর পরিবহন ব্যয় হয় ১০ থেকে ১২ টাকা। ফলে বড়মদক বাজারে নিন্মমানের ১ কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। তিনি আরো জানান, প্রকৃতির এই পরিস্থিতির জন্য মানুষই দায়ী। রির্জাভ ফরেষ্ট হতে নিবির্চারে বাঁশ ও গাছ কাটার ফলে অনেকগুলো ঝিরি ইতিমধ্যে মরে গেছে। ঝিরিতে পানি না থাকায় সাঙ্গু নদীও শুকিয়ে গেছে। ফলে নৌ পথে চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহন করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। প্রকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় নির্বিচারে বনজসম্পদ ধংসের খেলা দ্রুত বন্ধ করার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন হেডম্যান মু শোয়ে থুই মারমা।
রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান মালিরাম ত্রিপুরা জানান, রেমাক্রী ইউনিয়নের আড়াই হাজার পরিবারের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম নৌপথ। চলতি শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে নদীতে নৌকা চলাচলের মতো পানি না থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে স্থানীয়রা পায়ে হেঁটে চলাফেরা করছে। নৌকা যোগে চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহন করতে পারছে না। ফলে খাদ্য সংকটের আশংকাও তীব্রতর হচ্ছে। ইতিমধ্যে তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দুর্গম পল্লীতে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। চেয়ারম্যান মালিরাম আরো জানান, সরকারি ও বেসরকারি বনাঞ্চলের পানির উৎস স্থালের জায়গা থেকে নির্বিচারে গাছ বাঁশ কেটে ফেলার কারণে পানির উৎস স্থল ধংস হয়ে গেছে। যার মারাত্বক প্রভাব পড়েছে প্রকৃতির উপর। এ ছাড়াও স্মরণকালের অতিরিক্ত তাপদাহের কারণে পানির লেয়ার নীচে নেমে যাওয়ায় সাঙ্গু নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে শুকিয়ে গেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে নৌযান চলাচল করতে পারছে না এই রুটে। খাদ্য সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের জরুরী হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
ইদুর ও শুকরের আক্রমনে জুমের ধানসহ বিভিন্ন ফসল ধ্বংস হওয়ায় গত ১১-১২ অর্থবছরে থানছি উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন চরম ভাবে খাদ্য সংকটের কবলে পড়ে। ঐ সময় স্থানীয় উপজাতি পারিবার গুলো পাহাড়ী আলু ও কলাগাছ খেয়ে দিন পার করেছিল। সরকারিভাবে জরুরী খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি বিশ্ব খাদ্য কর্মসুচীর উদ্যোগে প্রায় ৪ হাজার পরিবারকে ৬ মাসের খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়। এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার এক বছরের মাথায় আবারো খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে রেমাক্রী ও তিন্দু ইউনিয়ন। চলতি মাসে বৃষ্টি না হলে ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
(এএফবি/এএস/মে ০৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test