E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুন্দরবনে বনবিভাগের বিশেষ অভিযান

ট্রলার, স্পীড বোর্ট, জার্মানী বন্দুক, হরিণের মাংসসহ আটক ৪

২০১৪ মে ০৪ ২১:৫৭:২৬
ট্রলার, স্পীড বোর্ট, জার্মানী বন্দুক, হরিণের মাংসসহ আটক ৪

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : বনবিভাগের বিশেষ অভিযানে সুন্দরবনের কুখ্যাত হরিণ শিকারী সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি গ্রামের সাত্তার মোড়েলের চার সহযোগিকে আটক করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে খুলনা রেঞ্জের পাট কোষ্টা ফরেষ্ট অফিসের আওতাধীন পাঠাকাটা নামক স্থানে এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় সাত্তার মোড়লসহ তার সাত সহযোগী পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়। অভিযান শেষে বনবিভাগ সাত্তার মোড়লের মালিকানাধীন একটি স্পীড বোর্ড, একটি আধুনিক ট্রলার ছাড়াও আজিজ শিকারীর লাইসেন্সকৃত একটি জার্মানে তৈরি বন্দুক, ৪৮ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, দু’রাউন্ড বন্দুকের গুলির খোসা, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ও ২০ কেজি কাচা ও পাঁচ কেজি রান্না করা হরিণের মাংস আটক করেছে।

আটককৃতরা হলো, সাত্তার মোড়লের বাড়ির কেয়ার টেকার সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি গ্রামের আব্দুর রহিম মোড়লের ছেলে হাসান মোড়ল(২৫) , নোয়াখালি জেলার বেগমপুর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের এবিএম জয়নাল আবেদীনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম স্বপন(৫০), খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার ছোট আংটিহারা গ্রামের কওছার গাজীর ছেলে আকবর গাজী(২৫) ও একই জেলার পাইকগাছা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের শেখ আব্দুল বারিকের ছেলে বাবলুর রহমান(৫০)।
বনবিভাগের হাতে আটককৃত খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় হরিণ শিকারী আব্দুস সাত্তার মোড়লের বাড়ির কেয়ারটেকার হাসান মোড়ল রোববার দুপুর একটায় খুলনা জেলার দাকব থানায় স্বীকারোক্তি প্রদানকালে (এক্সট্রা জুডিশিয়াল তদন্ত) পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানান, তার গৃহকর্তা সাত্তার মোড়লসহ ১২ সদস্যের একদল হরিণ শিকারী সুন্দরবনের গত শুক্রবার বিকেলে সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনি খেয়াঘাট থেকে একটি ট্রলার ও একটি স্পীড বোর্টে করে সুন্দরবনে হরিণ শিকার করতে যান। শিকারের জন্য শ্যামনগরের কুখ্যাত হরিণ শিকারী ও সাত্তার মোড়লের শিক্ষা গুরু শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালি গ্রামের আজিজ শিকারীর জার্মানে তৈরি বন্দুক ছাড়াও তিনটি বন্দুক ও তিনটি পিস্তল সঙ্গে নেওয়া হয়। হরিণ শিকার অভিযানের সকল আয়োজন করেন সাত্তার মোড়লের অন্যতম দেহরক্ষী জনৈক সুভাষ ঘোষ। ট্রলার চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তার প্রতিবেশি ছৈলদ্দিন শেখের ছেলে বাচ্চু শেখ।
হাসান মোড়ল আরো জানান, তিনটি হরিণ শিকার শেষে শনিবার বিকেলে তারা খুলনা রেঞ্জের নলিয়ান এলাকায় পাট কোষ্টা টহল ফাঁড়ির নিকটে পাঠাকাটা নামকস্থানে হরিণ শিকারের জন্য অবস্থান করছিলেন। এ সময় খুলনা রেঞ্জের বনসংরক্ষক(ডিএফও) মোঃ জহিরউদ্দিনের নেতৃত্বে বনবিভাগের কর্মকর্তারা তাদেরকে ধাওয়া করে। এ সময় সাত্তার মোড়লসহ আটজন শিকারী তড়িঘড়ি করে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বনের মধ্যে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা আজিজ শিকারীর বিদেশী বন্দুকসহ প্রচুর পরিমানে গোলাবারুদ, কিছু পরিমান কাচা ও রান্না করা হরিণের মাংস, ট্রলার ও স্পীড বোর্ডে রেখে পালিয়ে যায়। ঝাঁপ দিলেও তাদের চারজনকে ধরে ফেলে বনবিভাগ। সাত্তার মোড়লসহ আটজনকে পালাতে সাহায্য করে জনৈক বনকর্মী মিলন।
খুলনা রেঞ্জের সহকারি বনসংরক্ষক(এসিএফ) তৌফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেলে পাঠাকাটা নামক স্থানে অভিযান চালিয়ে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের বন্দকাটি গ্রামের কুখ্যাত হরিণ শিকারী সাত্তার মোড়লের চারজন সহযোগী বনশিকারী, সাত্তার মোড়লের মালিকানাধীন একটি অত্যাধুনিক ট্রলার, একটি স্পীড বোর্ড, শ্যামনগরের পাতাখালি গ্রামের আব্দুল আজিজের একটি জার্মানী বন্দুক, ৪৮ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, দু’রাউন্ড বন্দুকের গুলির ব্যবহৃত খোসা, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ২০ কেজি কাচা ও পাঁচ কেজি রান্না করা হরিণের মাংস আটক করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পাটকোষ্টা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাহারুল হক বাদি হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ অজ্ঞাতনামা আটজনের নামে বনআইনে রোববার একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাত্তার মোড়ল, বাচ্চু শেখসহ কয়েকজনকে আসামী হিসেবে অভিযোগপত্র দাখিলের সময় সম্পৃক্ত করা হবে।

(আরকে/অ/মে ০৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test