E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হুমকির মুখে মংলা, আটকা পড়েছে সাড়ে ৩শ’ লাইটারেজ জাহাজ

২০১৪ ডিসেম্বর ২৫ ১৮:৫০:০৫
হুমকির মুখে মংলা, আটকা পড়েছে সাড়ে ৩শ’ লাইটারেজ জাহাজ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলের ট্যাঙ্কার ডুবির পর গত ১৫দিন ওই রুট দিয়ে সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে  শরণখোলা, সণ্যাসী, কাউখালী, ঝালকাঠি ও মংলা রুটে তেলবাহী ও মালবাহী সাড়ে ৩শ’ লাইটারেজ জাহাজ আটকা পড়েছে। এর ফলে এসব নৌযানে কর্মরত ৫ হাজার কর্মচারী মানবেতর জবীন যাপন করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূূত্রে জানা গেছে।

এদিকে, পরিস্থিতি নিরসনে সরকারের কাছে নৌযান শ্রমিকদের নেতারা লিখিত আবেদন করেছেন। তবে সরকার এ ব্যাপারে কোন কর্ণপাত করছেন না বলে অভিযোগ নৌযান নেতাদের। তাই চলতি মাসের শেষের দিকে তারা আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রিয় প্রচার সম্পাদত শেখ আবুল কাশেম (মাষ্টার) বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদককে জানান,সুন্দরবনের শ্যালা নৌ- রুট খুলে দিয়ে ৫ হাজার নৌযান শ্রমিককে দুঃসহ জীবন যাপন থেকে মুক্তি, দুর্ঘটনায় নিহত ওটি সাউদার্ন স্টার-৭এর মাষ্টার মোখলেসুর রহমানের পরিবারকে সহযোগীতা,আটক‘ওটি টোটালের’ মাস্টার মোস্তফা, কর্মচারী ফারুক, আক্কাস ও পিয়ার আলী মুক্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনের নেতারা। সোমবার সচিবালয়, নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয় ও স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত ভাবে এ আবেদন জানান তারা। কাশেম আরো বলেন, নিহত মাষ্টার মোখলেছের বাড়িতে এখনো চলছে শোকের মাতন । ইতোমধ্যে শ্যালা নৌ রুট স্বাভাবিক করে মংলা বন্দর সচল করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে শ্রমিকরা। মংলা বন্দর যদি অচল হয়ে যায় তাহলে আমাদের কোন ঠিকানা থাকবে না। ব্যবসা বাণিজ্যে অচল অবস্থা সৃষ্টি হবে।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার মো. আকতারুজ্জামান জানান, মংলা বন্দরে ৮টি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। এর মধ্যে ৬টিই সারবাহী। শ্যালা নদী বন্ধ থাকায় মংলা বন্দরের মালামাল বোঝাই ২০-২২টি লাইটার পশুর নদীতে নোঙর করে রয়েছে। আর সন্ন্যাসী নামক স্থানে মংলা বন্দরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছে অন্তত ৭০টি খালি লাইটার। শিগগিরই এ জটিলতার অবসান না হলে মংলা বন্দর পুরোপুরি অচল হয়ে পড়বে। বিসিআইসি মংলা ট্রানজিট গুদাম ইনচার্জ মো. শহীদুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, বৃহত্তর বরিশাল ও রাজশাহী অঞ্চলে ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হয় মংলা বন্দর দিয়ে। এ বন্দরের জাহাজ থেকে লাইটারে করে এ সার পরিবহন করা হয় নদীপথে। বরিশাল, ভোলা, টেকেরহাট, বাঘাবাড়ি, আশুগঞ্জ ,কাঁচপুর, আমিন বাজার ও ঘোড়াশালসহ বিভিন্ন নৌ ঘাটে লাইটার থেকে সার খালাস করা হয়। আর মংলা বন্দর থেকে ওই সব অঞ্চলে পণ্য পরিহনের একমাত্র সহজ নৌ রুট হচ্ছে শ্যালা নদী।


সুন্দরবনে ৬টি বিষয় পর্যবেক্ষন চালাচ্ছে জাতিসংঘের দল
সুন্দরবনে জাতিসংঘের বিশেষঞ্জ দলটি তৃতীয় দিনের মতো ৬টি বিষয়কে সামনে রেখে পর্যবেক্ষন চালিয়ে যাচ্ছেন। সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া তেলের বিস্তৃতি ও রোধ প্রক্রিয়া, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ, প্রাণীজ ও জলজ উদ্ভিদ, বন্যপ্রাণী ও মানুষের জীবিন-জীবিকাসহ ম্যানগ্রোভ ইকোসিস্টেমের উপর কি প্রভাব পড়েছে কিংবা পড়তে পারে সেসব বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এ সব বিষয়ে পর্যবেক্ষন করছে জাতিসংঘের দেশী-বিদেশী ২৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। ৬টি দলে বিভক্ত হয়ে তারা কাজ করছে বনের বিভিন্ন এলাকায়। আগামী ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা তাদের পর্যবেক্ষণ কাজ চালিয়ে যাবেন। এরপর ফিরে গিয়ে ৩১ ডিসেম্বর তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে তাদের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান এ্যামেলিয়া ওয়ালস্টর্ম। তিনি আরো জানান, এখন যারা পর্যবেক্ষনে এসেছে এটি জাতিসংঘের অগ্রগামী টিম। এ টিমের দাখিল করা প্রতিবেদনের পরই সিদ্ধান্ত হবে এ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষার প্রয়োজন আছে কিনা, তার উপরই নির্ভর করছে মুল গবেষক দল আসবে কিনা। গত ৯ ডিসে¤॥^র সুন্দরবনের শেলা নদীতে ট্যাংকার ডুবে যাওয়ার পর ১৫ ডিসেম্বর সরকার জাতিসংঘের কাছে সহায়তা চেয়ে একটি চিঠি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ এই বিশেষজ্ঞ দল সুন্দরবনে আসে।

এবার বড়দিনের ছুটিতে পর্যটকের আগমন কম
তেল বিপর্যয়ের কারনে বড় দিনের ছুটিতে এবার বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে পর্যটকদের সমাগম কম ঘটেছে। তবে ষাটগম্বুজ মসজিদ ও হযরত খানহাজান (রঃ) মাজারে উপচে পড়া পর্যটকদের সমাগম অনেক বেশি। তেল বিপর্যয়ের ফলে সুন্দরববনে পর্যটকদের আগমন কম থাকার কথা বন বিভাগ নিশ্চিত করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের পর্যটন কেন্দ্র করমজল, হাড়বাড়িয়া, কটকা,কচিখালী ও হিরন পয়েন্ট এলাকায় ইকো-টুরিষ্টদের আগমন কম বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও)আমীর হোসাইন চৌধুরী জানিয়েছেন, সুন্দরবনের চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরুতে বড়দিন উপলক্ষে টানা ৩ দিনের সরকারী ছুটি থাকায় ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ এই বনের নয়ানাবিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য ও চিত্রল হরিন- রয়েল বেঙ্গল টইিগার-কুমিরসহ বন্যপ্রানীর চলাচল উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে কম মানুষ সুন্দরবনে এসেছে। টাইগার পয়েন্টের কচিখালী সমুদ্র সৈকতে বসে সূর্য উদয় ও সূর্যাস্থ দেখার অপূর্ব সুযোগও শ্যালা নদীতে তেল বির্পযয়ের কারনে পর্যটক আসেনি বলে ধারনা করা হচ্ছে।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ২৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test