E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভুল চিকিৎসায় সন্তানসহ মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ

২০১৪ ডিসেম্বর ৩১ ১৯:৩৭:৩৯
ভুল চিকিৎসায় সন্তানসহ মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের নিউ জমজম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মঙ্গলবার রাতে ভুল চিকিৎসায় পেটের সন্তানসহ মা নন্দিতা মন্ডলের(২৪) মৃত্যু হয়েছে বলে পারিবারিকভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয়রা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গোপালগঞ্জ জেলার সুধাংশ মন্ডলের সাথে রাজৈর উপজেলার বৌলগ্রামের তৈলক্ষ বালার মেয়ে নন্দিতার বিয়ে হয়। তার সুমন মন্ডল নামে ২ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের জন্য নন্দিতা বাবার বাড়িতে আসে। স্বামী সুধাংশ মন্ডল জানায়, মঙ্গলবার সকালেও নন্দিতা সুস্থ ছিল। নিজে হেঁটে হাসপাতালে যায়। মালিক পক্ষের একজনের মধ্যস্থতায় ১১ হাজার টাকার চুক্তিতে তাকে নিউ জমজম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে নন্দিতাকে সিজারের (অপারেশন) জন্য ওটিতে নেয়া হয়। সেখানে ডা. মনিরুজ্জামান ও তার স্ত্রী ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস এবং সেবিকা মিতালী উপস্থিত হয়ে রোগীর চিকিৎসা শুরু করে।

নন্দিতার মা সুবালা জানায়, আমার মেয়েকে কয়েকটি ইনজেকশন দেয়া হয়। এরপরই সে বমি করে এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় মালিকপক্ষ, ডাক্তার এবং হাসপতালে কর্মরত সেবিকারা জোর করে রোগীকে গাড়ীতে তুলে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় স্বামী সুধাংশ মন্ডল বাধা দিলে তার সাথে ক্লিনিকের লোকজনের ধস্তাধস্তি হয়। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে কিছুদিন যাবার পর নন্দিতা মারা গেছে নিশ্চিত হলে তাকে নিয়ে আবার ঐ হাসপাতালে ফিরে আসে রোগীর স্বজনরা। এসময় কৌশলে হাসপাতাল থেকে ডাক্তার, সেবিকাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই পালিয়ে যায়।

এতে করে বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা এই ঘটনার বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও হাসপাতালে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। খবর পেয়ে রাজৈর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহজাহান খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিলীপ কুমার দাস, পুলিশ এসআই কামাল ও আলমগীর উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে পাঠায়।

পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান হাসপাতালটি সিলগালাসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। সেবিকা দিপালী দত্ত জানায়, ইনজেকশন দেয়ার সময় দুই ডাক্তার উপস্থিত ছিল। তাদের কথামতোই ইনজেশন দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিলীপ কুমার দাস জানান, নিউ জমজম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোন লাইসেন্স নেই। এরা অবৈধভাবে এসব কাজ করছে। তদন্ত করে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, টেকেরহাটের ক্লিনিকগুলিতে বার বার রোগীর মৃত্যুর ঘটনা সত্যিই অমানবিক। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এসিএ/পি/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test