E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চৌমুহনীতে ২০ দলীয় জোটের কর্মীদের তান্ডব, নিহত ২

২০১৫ জানুয়ারি ০৭ ২১:০২:২১
চৌমুহনীতে ২০ দলীয় জোটের কর্মীদের তান্ডব, নিহত ২

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীতে পুলিশ ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।

এসময় মিজানুর রহমান রুবেল (৩০) ও মাইন উদ্দিন মহসিন (২৮) নামের দুইজন নিহত হয়েছে। এছাড়া পুলিশের এস.আই সাইফুল সিকদার, দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চারজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত মিজানুর রহমান রুবেল সেনবাগ উপজেলার শীবপুর গ্রামের তোফায়েল আহমদের ছেলে। সে চৌমুহনীর মনহরী ব্যবসায়ী ও মইন বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর গ্রামের খোরশেদ বাবুর্চির ছেলে। তবে নিহত ও আহতদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অপর দিকে হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসারতদের মধ্যে জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৫) বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে, একই গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে মাকসুদুর রহমান, গণিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সাহাব উদ্দিন (২৬), সোনালী ব্যাংক চৌমুহনী শাখার আনসার সদস্য ঝিনাইদহ জেলার আমজাদ মোল্লার ছেলে কামাল হোসেন। অপর আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া না গেলেও তাঁরা বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

চৌমুহনীর পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও অবস্থা রয়েছে থমথমে। পুলিশ বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।

অপরদিকে বুধবার জেলা শহর মাইজদীর পৌর কল্যাণ এলাকায় বেলা সাড়ে ১১টা ও উত্তর ফকিরপুর চুল্লার চা দোকান এলাকায় দুপুর ১২টায় পুলিশের গুলিতে বিউটি পার্লার কর্মি মারজাহান, পথচারী জহির, মিলন, জিএম মার্কেটিং কোং এর কর্মকর্তা দেলওয়ার ও তামিম, চা দোকানের শ্রমিক হৃদয়, মোটর সাইকেল ওয়ার্কশপের মালিক রিয়াজ গুলিবিদ্ধ হয়।
এ ছাড়া জেলা শহর মাইজদী ও বৃহত্তর বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীতে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মিরা দফায় দফায় অবরোধের পক্ষে মিছিল বের করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বিকেলে ২০ দলীয় জোটের পূর্বনির্ধারিত মিছিল করতে গেলে পুলিশ বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে অবরোধকারীরা অতর্কিতে পুলিশের ওপর আক্রমন করে। পুলিশ এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করলেও অবরোধকারীদের তান্ডব বেড়ে যায়। শুরু হয় ব্যাপক তান্ডব। এ সময় অবরোধকারীরা ৫টি মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও দোকান, অটোরিকশাসহ ব্যাপক ভাংচুর করে। এমন তান্ডবের একঘন্টা পেরিয়ে গেলে এক পর্যায়ে পুলিশ এ্যকশনে যায়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গুলিবর্ষণ করে। ঘটনাস্থলে বিকাল সোয়া ৫টার দিকে বিজিবি এসে পৌছে। এর মধ্যে মিজানুর রহমান রুবেল, মইনসহ ২০জনের মতো গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রুবেল, মইনসহ অপরাপরদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান দৌলা, সহকারি পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর ও বেগমগঞ্জ থানার ওসি আইনুল হকের নেতৃত্বে বর্তমানে চৌমুহনীতে অভিযান অব্যহত রয়েছেন।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুইজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. ফরিদ উদ্দিন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, দুইজনের লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এই দুইজনই গুলিবিদ্ধ ছিল। এ ছাড়া আরও ৪জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বেগমগঞ্জ থানার ওসি আইনুল হক জানান- পুলিশের গুলির হিসাব এখনো করা হয়নি। তবে; এসআই সাইফুল শিকদারসহ ৩ জন পুলিশ আহত হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করেছে বলেও জানান তিনি।

(জেএইচবি/অ/জানুয়ারি ০৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test