E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জলাবদ্ধতা নিরসনে সরানো হয়েছে জিয়া খালের মাটি, কৃষকের স্বস্তি

২০১৫ জানুয়ারি ২০ ২০:২২:৪২
জলাবদ্ধতা নিরসনে সরানো হয়েছে জিয়া খালের মাটি, কৃষকের স্বস্তি

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার হালতি বিলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে অবশেষে খোলাবাড়িয়া গ্রামের জিয়া খালের ভরাট করা মাটি ও হালতি এলাকায় বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। ফলে জলাবদ্ধ স্থান থেকে পানি নামতে শুরু করায় কৃষকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে।  আগামী দুই-একদিনের মধ্যে জলাবদ্ধ স্থান থেকে পানি নেমে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন। সম্প্রতি দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকায় হালতিবিলে জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে রয়েছে এমন সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসে।

মঙ্গলবার দুপুরে নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জাহানের নির্দেশে পিপরুল ও মাধনগর ইউনিয়নের কর্মসৃজন প্রকল্পের এক’শ জন শ্রমিক খাল খননে অংশ নেয়। দিনব্যাপী এসব শ্রমিকরা জিয়া খাল খনন শেষে হালতি গ্রামে একটি বাঁধ কেটে দেয়। এতে পানি প্রবেশের সকল বাধা অপসারণ হয়। এ সময় পিপরুল ইউপি চেয়ারম্যান দেবজ্যোতি দেবু, মাধনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আমজাদ হোসেন দেওয়ান, ইউপি সদস্য মহির উদ্দিন,ইউপি সদস্য একাব্বর হোসেনসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ হালতিবিলের খোলাবাড়িয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া জিয়া খালের প্রবেশ পথে মাটি ফেলে ভরাট করায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হালতি বিলের নিচু এলাকার বিশাল অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এতে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা যাচ্ছিল না। এ ব্যাপারে কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে খালের ভরাট করা মাটি অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। চলতি বোরো মৌসুমেও মাধনগর ইউনিয়নের বাঁশিলা,তেঘরিয়া,সোনাপাতিল,মাধনগর সহ ১০ গ্রামের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমি জলাবদ্ধতার কারনে জমি চাষ করতে পারেনি কৃষকরা। গত ১২ জানুয়ারী ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করে খাল থেকে দখল মুক্তসহ জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে। নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও গত এক সপ্তাহে কোন সুরাহা হয়নি। বিষয়টি জানার পর নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জাহান মঙ্গলবার সরেজমিন এলাকায় গিয়ে জলাবদ্ধ নিরসনে উদ্যোগ গ্রহন করেন। তিনি এলাকাবাসীদের নিয়ে পানি নিস্কাসনে ব্যবস্থা গ্রহণে স্ব-শরীরে হাজির থেকে ভরাট হওয়া খালের উৎস মুখ থেকে মাটি সরানোর কাজ তদারকি করেন। পিপরুল ও মাধনগর ইউনিয়নের কর্মসৃজন প্রকল্পের শতাধিক শ্রমিক এই খালের পানি নিষ্কাশন কাজে অংশ নেয়।

সোনাপতিল গ্রামের কৃষক মহসিন আলী, বাঁশিলা গ্রামের কৃষক আফসার আলী জানান, জলাবদ্ধতার কারনে অনেকের জমি এখনও পানির নিচে। এতে তারা সময় মত বোরো চাষ করতে পারছেন না। অথচ বিলের অন্যান্য স্থানে বোরো চাষ সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোথাও ধান কালো বা বড় আকার ধারন করেছে। কিন্তু এসব জলাবদ্ধ জমিতে বোরো চাষের সময় পার হয়ে যাচ্ছে। বিলম্বে চাষ হলে ফলনে বিপর্যয় ঘটার আশংকা রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন তারা।

নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জাহান জলাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে জানান, খোলাবাড়িয়া গ্রামে জিয়া খালের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা পুনঃখনন করে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে এই সমস্যা থাকবেনা। আগামীতে স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ভবিষ্যতে এই খাল আর কেউ যাতে মাটি ভরাট করতে না পারে সে ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।’

(এমআর/পি/জানুয়ারি ২০, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test