E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বগুড়ায় ওয়াক্ফকৃত পৌনে ৪০০শ’ বিঘা সম্পত্তি বেদখল

২০১৫ জানুয়ারি ২৩ ১৩:৩৪:৫৯
বগুড়ায় ওয়াক্ফকৃত পৌনে ৪০০শ’ বিঘা সম্পত্তি বেদখল

নন্দীগ্রাম(বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে সিংড়া খালাশ জামে মসজিদের নামে পৌনে ৪শ বিঘা সম্পত্ত্বি থাকা সত্ত্বেও ৭২বছরে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মসজিদের চারপাশের ইটের দেয়ালে ছোট-বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির দিনে টিন চুঁয়ে পানি পড়ে। মসজিদের চারপাশে জরাজীর্ণ অবস্থা। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য ব্যবহৃত আযানের মাইকটাও অকেজো হয়ে পড়ে আছে।

এনিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। তথ্যানুসন্ধানে ও স্থানীয় এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের সিংড়া খালাশ গ্রামে ১৯৩৭সালে মসজিদটি স্থাপিত হয়। ইবাদত বন্দেগী ও নামাজ আদায় করার নিমিত্বে ওই গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসলিরা মসজিদটি নির্মান করেন। পরবর্তীতে ১৯৪২সালে সৈয়দ মানিক উদ্দিন মিয়া নামের ব্যক্তি সিংড়া খালাশ জামে মসজিদের উন্নয়ন করার শর্তে ১২৬ একর ৪৮শতক জমি ওয়াক্ফ করে দেন। ওয়াক্ফকৃত সম্পত্তি দিয়ে মসজিদের উন্নয়ন করার কথা থাকলেও আজতক পর্যন্ত ওই মসজিদের কোন উন্নয়ন হয়নি। দীর্ঘ ৭২বছরের মধ্যে কোন প্রকার সংস্কার হয়নি বলে গ্রামের অনেক মুসলিমরা এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
মসজিদের নামে বহুল সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও উন্নয়ন হচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মুসলি-দের মাঝে। উপজেলার রিধইল, সিংড়া খালাশ, উত্তর শুকানগাড়ী, পাশ্ববর্তী কাহালু উপজেলার পিপড়া ও তালোড়া মৌজায় এই মসজিদের ওয়াক্ফকৃত ৩৭৯বিঘা ১৫শতক জমিগুলো রয়েছে। সৈয়দ মানিক উদ্দিনের মৃত্যুর পর সম্পত্তিগুলো দেখভাল করার দ্বায়িত্ব পায় তার ওয়ারিশগণ। তবে মোতাওয়ালী নিয়োগ নিয়ে অনেক মতভেদ এমনকি বেশ কয়েকটি মামলা-মকদ্দমাও চলমান রয়েছে। যার ফলে মসজিদের উন্নয়নের দিকে তেমন কেউ নজর রাখছেনা বলে মন্তব্য করেছেন ওই গ্রামের মুসলিম আব্দুল মজিদ।
তিনি বলেন, সিংড়া খালাশ জামে মসজিদের নামে ওয়াক্ফকৃত অনেক সম্পত্তিই বেদখল রয়েছে। অনেকেই ওই সম্পত্ত্বি নিজের দাবি করে পত্ত্বনি দিয়ে খাচ্ছে। মসজিদে বর্তমান মোতাওয়ালী হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন কাহালু উপজেলার পিপড়া গ্রামের মৃত মোছাব্বর রহমান মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন ও সহকারি মোতাওয়ালী নন্দীগ্রাম উপজেলার সিংড়া খালাশ গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মকলেছুর রহমান মন্টু। প্রধান মোতাওয়ালী নির্ধারন নিয়ে বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করে মকলেছুর রহমান মন্টু। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৪সালের ১৬নভেম্বর (বরাত: ১১২২৯, বগুড়া) ৩,৪/১৪৪(১) স্বারকে ওয়াক্ফ প্রশাসন কর্তৃক চিঠি পাঠানো হয়। ৩০নভেম্বর প্রধান মোতাওয়ালী নিয়োগ বিষয়ক শুনানীর দিন ধার্য করে। এরপরে আজতক পর্যন্ত প্রধান মোতাওয়ালী নিয়োগ হয়নি বলে জানিয়েছেন মকলেছুর রহমান মন্টু। মুসলিম আফসার আলী, ইব্রাহীম, হেলাল উদ্দিনসহ বয়স্ক বৃদ্ধরা জানিয়েছেন, সৈয়দ মানিক উদ্দিন মিয়া অনেক আশা আকাঙ্খা ও স্বপ্ন নিয়ে ওই মসজিদের উন্নয়ন কল্পে পৌনে ৪শ বিঘা সম্পত্তি ওয়াকফ্ করেছেন। কিন্তু ৭২বছর পেরিয়ে গেলেও মসজিদের তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অথচ প্রতিবছর ওইসব সম্পত্তি থেকে লাখ লাখ টাকা পত্ত্বনির মাধ্যমে আসছে। উর্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সঠিক মোতাওয়ালী নির্ধারণসহ বেদখলকৃত সম্পত্তি উদ্ধার করে মসজিদের উন্নয়ন করার দাবি জানিয়েছেন ওই গ্রামের মুসলিরা।

(এমএনস/পিবি/জানুয়ারি ২৩,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test