E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দীর্ঘ ১৪ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মনির হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়নি

২০১৫ ফেব্রুয়ারি ০১ ১৮:৫১:১৭
দীর্ঘ ১৪ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মনির হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়নি

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : দীর্ঘ ১৪ বছরেও উদঘাটন হয়নি কলাপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মনির (১৮)হত্যা রহস্য। নৃশংস এ হত্যা মামলাটি ২০০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পটুয়াখালীর ডিবি পুলিশ চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেছে। কিন্তু মনিরের পরিবারের পক্ষ থেকে এরপর আপিল না করায় মামলাটি ফাইলের নিচে চাপা পড়ে যায়।

২০০০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আলীপুর থেকে মনিরকে ডেকে নেয়া হয়। পরের দিন বিকেলে আলীপুর বাজার থেকে পুর্বদিকে ধান ক্ষেতে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। মুগুর দিয়ে পিটিয়ে মনিরের মুখমন্ডল থেতলে দেয়া হয়। চোখ বের হয়ে যায়। সিগারেট দিয়ে পুড়িয়ে শরীর ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। তৎকালীন পুলিশের এসআই মাসুদ লাশটি উদ্ধার করেছিল। লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই ফুট লম্বা একটি কাঠের মুগুর, মনিরের একটি দাঁত, রক্তমাখা মাটি উদ্ধার করে। তখন ১৫ জনকে আসামি করে তার পিতা ছত্তার মুন্সী হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পর্যায়ক্রমে সাত আসামিকে গ্রেফতার করে। এমনকি দুই আসামির কাছ থেকে রক্তমাখা পাঁচশ’ ও একশ’ টাকার কয়েকটি নোট উদ্ধার করা হয়। কিন্তু তথ্য প্রমানের অভাবে সবাই জেল থেকে বের হয়ে আসে।

এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ওই সময় আলীপুর-মহিপুর ও কুয়াকাটায় বিক্ষোভ হয়। সাতদিন সকল দোকানপাটে কালো পতাকা উত্তোলন করেন এলাকাবাসী। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বদল হয়েছে ৯ জন। সবশেষ চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের এসআই মোসলেহ উদ্দিন। তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, খুনের ঘটনা সত্য। পুলিশি কৌশলে হত্যারহস্য উদঘাটন করা যায়নি। ভবিষ্যতে উদঘাটনের সম্ভাবনা কম থাকায় মামলাটি মূলতবি রয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, পুলিশ শুধু মনিরের হত্যাকান্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই ছিল সচেষ্ট। এক এক করে ৯ জন তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছে। কেউ তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন নি ওই রাতে একটি ঝুপড়ি ঘরে পিকনিক চলছিল। তারই পাশে মনিরের লাশ পাওয়া যায়। কারা পিকনিক করছিল, তাদের কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। সংসারের যোগান দেয়া সন্তান খুন হওয়ার পরে বার্ধক্যের ভারে আরও ন্যুয়ে পড়েন বাবা ছত্তার মুন্সি। ছেলের বিচার না পেয়ে কিংবা খুনিদের গ্রেফতার তো দুরের কথা শণাক্ত না হওয়ায় ধুঁকে ধুঁকে পুত্র শোকে তিনি মারা যান। মনিরের বৃদ্ধা মা এখনও সন্তানের কথা বলে চোখের পানিতে বুক ভাসায়। কেউ আর ঘাটেনি মনির হতারহস্য।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কলাপাড়া কমান্ডের আহ্বায়ক বদিউর রহমান বন্টিন ও সদস্য হাবিবুল্লাহ রানা দাবি করেন পুলিশ একটু সচেষ্ট হলেই এ হত্যা রহস্য উদঘাটন সম্ভব।

(এমকেআর/পি/ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test