E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও ননদের লাঠিপেটায় দিপিকা এখন হাসপাতালে

২০১৫ ফেব্রুয়ারি ২৫ ১১:৪৬:৫৪
যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও ননদের লাঠিপেটায় দিপিকা এখন হাসপাতালে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : গৃহবধূ দিপিকা মন্ডল হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। কষ্টের কথাটুকু জানানোর একজনই জীবিত আছেন, সেও পাশে নেই।

পিতৃহীন দিপিকার মায়ের ফোন নম্বরটাও মনে নেই। মমতাময়ী মাকে তার এ দূরাবস্থার কথা জানিয়ে খবর দিবেন তারও উপায় নেই। যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও ননদের বেধড়ক লাঠিপেটায় সমস্থ শরীর থেতলে যাওয়া দিপিকার ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের বিছানায়। ব্যাথার যন্ত্রণায় ঠিকমত কথাও বলতে পারছেন না তিনি। গুরুতর আহত দিপিকাকে মঙ্গলবার রাতে ইউপি সদস্য আলমঙ্গীর হোসেন হাসপাতালে এনে ভর্তি করেছেন। কিছুক্ষণ পরে হয়তো তিনিও চলে যাবেন। ঔষুধ কেনা কিংবা প্রয়োজনে কারো সাহায্য নেওয়ার মতো আপন জন বলতে কেউ থাকছেনা তার পাশে। ভরসা অন্য রোগীর লোকজন। ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে যেন এমনটিই বোঝাচ্ছিলেন তিনি। দিপিকা মন্ডল ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার বাদলশো গ্রামের মৃত গোপী মন্ডলের এক মাত্র মেয়ে। মা দিপালী মন্ডল পরের বাসায় কাজ করেন। তার পক্ষের জামাইয়ের ১লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া সম্ভব না। বড় আশা করে ৮বছর আগে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বেজপাড়া গ্রামের জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের ছেলে সঞ্জয় বিশ্বাসের সাথে বিয়ে দেন তার। তারাই যৌতুকের টাকার জন্য পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন দিপিকাকে। দিপিকা জানান, বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে স্বামী সঞ্জয় যৌতুকের জন্য প্রায় তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। মায়ের সামর্থ নেই জামাইয়ের দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দেওয়ার। তাই মুখ বুজে নির্যাতন সহ্য করতেন গৃহবধু দিপিকা। মঙ্গলবার রাতে স্বামী ও ননদ দুইজনে মিলে বেধড়ক পিটিয়েছে তাকে। লাঠির আঘাতে সমস্থ শরীর থেতলে দিয়েছে। ইউপি সদস্য আলমঙ্গীর হোসেন ও প্রতিবেশিদের সহায়তায় তিনি হাসপাতাল পর্যন্ত এসেছেন। দিপিকার ৫বছরের একটি কণ্যা সন্তান আছে। ব্যাথায় কাতরাচ্ছে এবং বারবার তার কথা বলছে।উপজেলার সুন্দরপুর-দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য আলমঙ্গীর হোসেন জানান, যৌতুকের জন্য দিপিকাকে তার স্বামী প্রায় মারধর করতো। আজ লাঠি দিয়ে অতিরিক্ত মারপীট করেছে। প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় প্রতিবেশিদের সহায়তার দিপিকাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তিনি। তিনি আরো জানান গত দুই বছর আগেও এমন নির্যাতনের কারণে দিপিকার মায়ের অভিযোগের আলোকে বিচার শালিশ করা হয়। আলমঙ্গীর জানান, অসহায় মেয়েটিকে দেখার কেউ নেই। তার চিকিৎসা খরচ চালানোর জন্য তিনি সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন।এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমঙ্গীর হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান আপনাদের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পারলাম। আমি দ্রুত খোঁজ খবর নিচ্ছি। এ ব্যাপারে কেউ আইনী সহায়তা চাইলে তাকে দেওয়া হবে বলে ওসি জানান।
(জেআর/পিবি/ফেব্রুয়ারি ২৫,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test