E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গুরুদাসপুরে শিক্ষক নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে মামলা

২০১৫ ফেব্রুয়ারি ২৫ ১৭:৪৪:৩১
গুরুদাসপুরে শিক্ষক নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে মামলা

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পোয়ালশুরাপাটপাড়া বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হকের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি নাটোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিম রেজা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মামলার শুনানী শেষে আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে মামলাটি গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় বিদ্যালয়ে জনবলকাঠামোতে শূণ্য পদ না থাকলেও শাখা অনুমোদনের ভূয়াকাগজপত্র তৈরি করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ২০১৩ সালের ২৫মে নয়াদিগন্ত এবং ৪ এপ্রিল নাটোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক জনদেশ পত্রিকায় শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেন। ওই বিজ্ঞপ্তি মারফত মামলার বাদি সেলিম রেজাসহ আরো দুইজন সহকারি শিক্ষক পদে আবেদন করেন। কিন্তু শিক্ষা বোর্ড হতে শাখা খোলার অনুমতিপত্র না পাওয়া সত্ত্বেও প্রধান শিক্ষক একই বছরের ২৯ মে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার আয়োজন করেন। পরে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কথা বলে প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক তার কাছে সাত লাখ টাকা দাবী করেন। এরমধ্যে সেলিম রেজা পাঁচ লাখ টাকা সাক্ষীদের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষকের নিকট প্রদান করেন। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের প্যাডে গত ৩০ জুন ওই ৫ লাখ টাকার প্রাপ্তি স্বীকারও করেছেন।

সেলিম রেজা জানান, পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার পর তাকে সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। গত ২ জুলাই থেকে তিনি সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর প্রদান পূর্বক শিক্ষকতা শুরু করেন। একই পন্থায় অপর দুই শিক্ষক আব্দুল হান্নান ও মোজাম্মেল নামে আরো দুইজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে তাদের বেতনভাতার (মাš্’লি পেমেন্ট অর্ডার) জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করতে গিয়ে জানতে পারেন, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড এর কোন অতিরিক্ত শ্রেণি খোলার অনুমতি না নিয়েই ভূয়াকাগজপত্র তৈরি করে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।

ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী’র বিদ্যালয় পরিদর্শক (স্মারক নম্বর ৪জি-৫৩৫-ম/২০১১/ ৪০৫৩/৪) গত ২০১৪ সালের ২৬ মে অতিরিক্ত শ্রেণি শাখার অনুমোদনপত্র জাল করায় শাস্তি মূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান শিক্ষক আজিজুল হককে তাঁর বেতনবন্ধের জন্য কৈফিয়ত তলব করে চিঠি প্রদান করা হয়। ওই ঘটনার পর প্রধান শিক্ষক চেষ্টা-তদবীর করে কারন দর্শানোর বিষয়টি ধামাচাপা দেন।

সেলিম রেজা আরো জানান, চাকরির কথাভেবে তার শেষ সম্বল একটুকরো জমি বিক্রি করে প্রধান শিক্ষককে ৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই বছরেও তার বেতন-ভাতা না হওয়ায় আর চলতে পারছিলেন না। উপরন্ত ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ছিলেন।
কোন উপায় না দেখে তিনি গত ৫ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক আজিজুল হককে দেওয়া পাঁচ লাখ টাকা ফেরত চান। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তাকে টাকা ফেরত দেননি। উপরন্ত এনিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখান। অবশেষে বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে মামলা করেছেন।

প্রধান শিক্ষক আজিজুল চাকরি দেওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, মামলার বিষয়টি তিনি আইনগতভাবে মোকাবেলা করবেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।

গুরুদাসপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইদুর রহমান জানান, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. ইয়াসমিন আক্তার জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি না থাকায় তিনি কেবল বেতন-ভাতায় স্বাক্ষর করেন। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

(এমআর/এএস/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test