E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কালীগঞ্জে আ’লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৬

২০১৪ মে ১০ ১৭:১১:২২
কালীগঞ্জে আ’লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৬

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে ছয়জন আহত হয়েছে। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার হিজলা মোড়ে শনিবার সকাল ১০ টা থেকে দফায় দফায়  ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ বোমা হামলা চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। পুলিশ   দু’পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে ১০ রাউ- শর্টগানের গুলি ও চার রাউ- পিস্তলের গুলি ছোঁড়ে। আহতদের সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা হলেন, কালীগঞ্জ উপজেলার ইন্দ্রনগর গ্রামের জহরুল হকের ছেলে তরিকুল ইসলাম (২৬), একই গ্রামের সাম্মত আলী পাড়ের ছলে খায়রুল ইসলাম (২৫), আব্দুর জব্বারের ছেলে চাঁন্দু (২৩), ঘোনা গ্রামের আবুল কাশেম মোড়লের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৫৮), তার ছেলে রহমত আলী (২৩) ও কুদ্দুস মোড়লেল ছেলে মোমিনুর রহমান (২০)।
কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের ইন্দ্রনগর গ্রামের আসমত আলী ও জহিরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি ভূমিহীন জনপদ থেকে ৪০জনেরও বেশি ভূমিহীনকে উচ্ছেদ করে ভূমিহীন নেতা নামধারী জামায়াত কর্মী আশরাফ মীর। পিঠ বাঁচাতে ২০১০ সালের ২০ নভেম্বর নলতা কেবি আহছানিয়া কলেজ মাঠে নলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হকের হাতে সোনার নৌকা উপহার দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেয় আশরাফ মীর। প্রায় একই সময়ে ইন্দ্রনগর গ্রামের আবুল হোসেন বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। সম্প্রতি ভূমিহীন জনপদ চিংড়িখালি ও বৈরাগীর চকে বসবাসরত ভূমিহীনদের কাছ থেকে মাথা পিছ পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা তুলে জারি গান, লাঠি খেলা ও সঙ্গীত শিল্পী মমতাজকে এনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আশরাফ মীর । এক সময়কার ভূমিদস্যু ঘোনা গ্রামের রুহুল কুদ্দুস মোড়লকে সহযোগি হিসেবে পায় আশরাফ মীর। এ নিয়ে তিন সম্পাহ আগে নলতা হাসপাতালের সামনে আশরাফ মীর ও তার প্রতিবেশি সালাউদ্দিনকে পিটিয়ে জখম করে ভূমিদস্যু ও জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া কয়েকজন ভূমিহীন।
তারা আরো জানান, শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী ডা. রুহুল হকের বাড়িতে নব্য আওয়ামী লীগার আবুল হোসেনসহ কয়েকজন উপস্থিত হন। এ সময় ঘোনার কুদ্দুস মোড়ল পূর্ব বিরোধের জের ধরে আশরাফ মীরকে মারপিট করার অভিযোগে আরশাদ আলী নামের একজনকে মারপিট করে। এতে ক্ষুব্ধ আবুল হোসেন ও তার সহযোগিরা সাংসদ রুহুল হক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহেদুজ্জামানের উপস্থিতিতে কুদ্দুস মোড়লকে মারিপট করে। সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে উভয়পক্ষের পাঁচজন প্রতিনিধি নিয়ে শনিবার সকাল ১১টায় উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিসে বসাবসির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হোসেনসহ সাতজন শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কালীগঞ্জ যাওয়ার সময় হিজলা মোড়ে কুদ্দুস মোড়লের সমর্থকরা তাদের উপর হামলা চালায়। এতে আবুল হোসেন গ্রুপের তিনজন জখম হয়। খবর পেয়ে ইন্দ্রনগর গ্রাম থেকে আবুল হোসেনের শতাধিক সমর্থক কুদ্দুস গ্রুপের উপর হামলা করে। হামলায় কুদ্দুস মোড়লের পক্ষের তিনজন জখম হয়। উভয়পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় একাধিক বোমা বিষ্ফোরিত হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগান ও পিস্তলের গুলি ছোঁড়ে। আবুল হোসেনের সমর্থকরা রাস্তার উপর গাছের গুড়ি ফেলে কালীগঞ্জ-সাতক্ষীরা সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। দুপুর একটার দিকে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা অবরোধ সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম রহমান জানান, আওয়ামী লীগের আবুল হোসেন ও কুদ্দুস দোড়লের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে তিনজন জখম হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জনকে সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও একজনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও চার রাউন্ড পিস্তলের গুলি চালিয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় কোন লিখিত অভিযোগ করেনি।
(আরকে/এএস/মে ১০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test