E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আগৈলঝাড়ায় অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ গাইড, কোনব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন

২০১৫ ফেব্রুয়ারি ২৬ ১৯:৪৩:৩০
আগৈলঝাড়ায় অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ গাইড, কোনব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন

বরিশাল প্রতিনিধি : সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হলেও বরিশালের আগৈলঝাড়ায় একটি শিক্ষক চক্রের মদদে চলছে নিষিদ্ধ গ্রামার ও গাইড বইয়ের রমরমা বানিজ্য। তবে সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের এ ব্যাপারে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩য় শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন গাইড ও বাংলা-ইংরেজী গ্রামার বই কিনতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অভিযোগ রয়েছে, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক শ্রেণীর শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা সংস্থার সাথে অবৈধ আর্থিক সুবিধা নিয়ে এসব নিষিদ্ধ গাইড ও গ্রামার বই নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে চালু করেছেন। লাইব্রেরিগুলোতে খুঁজে পাওয়া যায় না সরকার নির্ধারিত কোন গ্রামার বই। উপজেলায় ৯৬টি প্রাথমিক, ৩৮টি মাধ্যমিক, ১০টি মাদ্রাসা ও ৭টি কিন্ডার গার্ডেন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কতিপয় অসাধু শিক্ষক এই গাইড ও গ্রামার বইয়ের অবৈধ বানিজ্যের সাথে নিজেদের জড়িত রেখেছেন। এক একটি প্রতিষ্ঠানে শ্রেণী অনুযায়ী শিক্ষকরা গাইড ও গ্রামার বই কিনতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিচ্ছেন বলে অভিভাবকরা জানান। শিক্ষকদের নির্দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীরাও বাদ্য হচ্ছে এসব নিষিদ্ধ গাইড-বই কিনতে। সরকার বিগত মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজী ২য় পত্রের বই বিনামূল্যে প্রদান করছে। কিন্তু উপজেলার বিদ্যালয়গুলো ঘুরে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে অন্যান্য বইয়ের পাশাপাশি শিক্ষক নির্ধারিত গাইড ও গ্রামার বই দেখা গেছে। একইভাবে উপজেলার প্রাথমিক, মাদ্রাসা ও মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি বিধি নিষেধের পরেও কমিশন বানিজ্যের কারণে দেদারসে নিষিদ্ধ গাইড ও গ্রামার বই বেচাকেনা চলছে। অনেক শিক্ষার্থীকে মূল পাঠ্যবই নিয়ে বিদ্যালয়ে না গেলেও গাইড-গ্রামার বই নিয়ে ক্লাসে যেতে দেখা গেছে। শিক্ষকরাও তা যেন দেখছেন না। আবার অনেক শিক্ষক গাইড বই দেখেই প্রাইভেট পড়াচ্ছে শিক্ষর্থীদের। জানা গেছে, প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বিক্রয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কমিশন প্রদান ও বিভিন্ন উপঢৌকনের মাধ্যমে ম্যানেজ করে এসব নিষিদ্ধ বই বাজারজাত করে আসছে। অনেক ক্ষেত্রে এসব প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা ওই বই কিনতে শিক্ষার্থীদের হাতে তালিকা ও মৌখিক নির্দেশ দিয়ে দেন। বর্তমানে বিভিন্ন প্রকাশনীর অবৈধ নোটবই দোকানে তাকে তাকে সাজিয়ে রাখা হয় দোকান গুলোতে। এসব গাইড সরকারী ভাবে বিক্রি নিষিদ্ধ তাকলেও তা মানছে না বিক্রেতারা। শিক্ষার্থীরা বলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্দেশ মতে প্রকাশনীর বই কিনতে হচ্ছে। নির্দেশ মতে বই না কিনলে শিক্ষকদের মন্দ শুনতে হয়। নাম প্রকাশ শর্তে বই বিক্রেতারা জানান, গাইড ও নোট বই শির্ক্ষাথীদের উপকারে আসছে। গাইড ও নোট বই পড়ে না এমন শির্ক্ষাথী খুজে পাওয়া যাবে না। দোষ হয় শুধু প্রকাশনী ও বইয়ের দোকানদারের। অথচ বহু শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তাদের ছেলেমেয়েরাও গাইড ও নোট বই পড়ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অ.দা.) অলি আহাদ সাংবাদিকদের বলেন নোট বই ও গাইড বিক্রি সরকারি নির্দেশ থাকলেও আমার কিছু করার নেই। কারণ বিক্রি নির্শেদের ব্যাপারে আমাদের অফিসে সরকারি ভাবে আমার কোন লিখিত পাইনি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

(টিবি/পি/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test