E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গোসাইরহাটে কিশোরীকে গণধর্ষণ, আটক ১

২০১৫ মার্চ ০২ ১৭:৫৩:৪৫
গোসাইরহাটে কিশোরীকে গণধর্ষণ, আটক ১

শরীয়তপুর  প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে দুলাভাই ও তার সহযোগিরা মিলে ৭ম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে (১৩) গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার রাত ৮টার দিকে গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড শাইক্ষ্যা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করে । মেয়েটির বক্তব্য অনুযায়ী ধর্ষণের সাথে জড়িত একজনকে আটক করেছে গোসাইরহাট থানা পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের শাইক্ষ্যা গ্রামে এসে অন্যের জমিতে ঘর তুলে বসবাস শুরু করেছে কয়েক বছর থেকে। মেয়েটির বাবা-মা দু’জনেই মেঘনার দক্ষিন পাড়ের চরে কৃষি শ্রম বিক্রি করেতে গিয়ে সেখানে রাত দিন অবস্থান করছেন গত একমাস যাবৎ । মাঝে মাঝে দিনের বেলা তারা বাড়িতে আসে। তাদের মেয়ে স্থানীয় কাশিখন্ড দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছোট ভাইকে নিয়ে বাড়িতে থাকে । এই সুযোগে আপন বড় বোনের স্বামী ও কিছু বখাটে রাতের বেলা মাঝে মাঝেই মেয়েটির ঘরে উকিঝুঁকি মারত এবং উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করতো। রবিবার সন্ধ্যায় মেয়েটির ভাই পাশ্ববর্তী দোকানে গেলে আপন বড় বোনের স্বামী কাশেম হাওলাদার ও তার ৩-৪ জন সহযোগি মিলে মেয়েটিকে জোর করে পাশ্ববর্তী ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়েটির ডাক-চিৎকার শুনে স্থানীয় রহমান হাওলাদার ও রাসেল ফকির সহ কয়েকজন মহিলা ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। সেখান থেকে মেয়েটিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে। বাড়ির লোকজন ও স্থানীয়রা মিলে রাত ৯ টার দিকে মেয়েটিকে গোসাইরহাট থানায় নিয়ে আসে। থানা থেকে মেয়েটিকে প্রথমে গোসাইরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে রাত ১টার দিকে শরীয়তপুর আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে রাত ২টার দিকে শরীয়তপুর আধুনিক সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। সোমবার দুপুর ২টার দিকে ডা. সাজেদা খাতুনের তত্ত্বাবধানে মেয়েটির মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কিশোরীটি বলেন, ‘বাড়িতে একা পেয়ে মাঝে মাঝেই দুলাভাই ও তার বন্ধুরা মিলে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতো। রবিবার সন্ধ্যার পরে দুলাভাই এসে ঘরের দরজা খুলতে বলে। দরজা খুললে আমাকে জোর করে বাড়ির পাশে একটি ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ৪-৫ জনে মিলে আমাকে নির্যাতন করে। তারপর কি হয়েছে আমি কিছুই বলতে পারিনা।’

মেয়েটির বাবা বলেন, আমার নাবালিকা মেয়েটিকে যে পাষন্ডরা এভাবে অত্যাচার করেছে আমি তাদের উপযুক্ত বিচার চাই। কোন আইনের ফাঁক দিয়ে তারা যেন বের হয়ে যেতে না পারে।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার বাচ্চু কাজী বলেন, মেয়েটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে গোসাইরহাট থানায় নেয়া হয়। থানা থেকে মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে আসতে বলা হলে মেয়েটিকে প্রথমে গোসাইরহাট উপজেলা হাসপাতাল ও পরে গভীর রাতে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত প্রচলিত আইনে তাদের বিচার হোক এটা আমাদের প্রত্যাশা।

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আহত অবস্থায় রবিবার রাতে মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসে। মেয়েটি অসুস্থ থাকার কারণে কিছু বলতে পারেনি। আমরা মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে মেডিকেল রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলেছি। আমাদের অফিসার হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির খোঁজখবর নিয়েছে। কোন লিখিত অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। মেয়েটির বক্তব্য অনুযায়ী ঘটনার সাথে জড়িত ইয়াকুব মালতের ছেলে মনু মালতকে আমরা আটক করেছি। অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

(কেএনআই/এএস/মার্চ ০২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test