E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিক্ষক সংকটের কবলে নওগাঁর সাপাহার সরকারী ডিগ্রী কলেজ

২০১৫ মার্চ ০৫ ১৬:০৮:২৫
শিক্ষক সংকটের কবলে নওগাঁর সাপাহার সরকারী ডিগ্রী কলেজ

নওগাঁ প্রতিনিধি : প্রয়োজনীয় শিক্ষক সংকটের কবলে পড়েছে নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার সর্ববৃহৎ ও এক কালের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ সাপাহার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী কলেজ। ব্যাহত হয়ে পড়েছে এই বিদ্যাপীঠের পাঠদান কার্যক্রম। ফলে, ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া ও ভবিষ্যত জীবন স্থবির হয়ে পড়েছে ।

সাপাহার উপজেলার গৌরব হিসেবে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই কলেজটি। এলাকায় শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসে। সে সময়ে এলাকায় বড় এবং ভাল কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে না উঠায় স্বল্পসময়ে চারিদিকে কলেজটির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে কলেজটিকে সরকারি হিসেবে ঘোষনা করা হয়। এর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি কলেজটিকে। ছাত্র শিক্ষকের সমাগমে জাকজমকপূর্ণ ভাবে চলতে থাকে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। বিগত ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত বি এ, বিএসসি, বিএসএস পাশ পরীক্ষায় অত্র কলেজ থেকে মোঃ জুয়েল হক নামে একছাত্র ও মোসাঃ জান্নাতুন ফেরদৌস নামে এক ছাত্রী সম্মিলিত মেধা তালিকায় সারাদেশের মধ্যে ১ম ও ৫ম স্থান অধিকার করে কলেজের মুখ আরও উজ্জ্বল করে। এর পর পুনরায় ২০০২সালে অনুষ্ঠিত বিএ, বিএসসি, বিএসএস পাশ পরীক্ষায় সারা দেশের ফলাফলের ভিত্তিতে কলেজটি রাজশাহী বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এর পর কলেজের লেখাপড়া ও বরেন্দ্র এলাকার সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় ও স্থানীয় এমপি সাধন চন্দ্র মজুমদারের নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে ৮টি বিষয় নিয়ে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ রুপে ঘোষনা দেন। এদিকে বেশ কিছু দিন ধরে কলেজের শিক্ষক সংকট চরম আকার ধারন করেছে। ফলে কলেজে শিক্ষার্থী সংখ্যাও তুলনা মুলক হারে হ্রাস পেয়ে অত্র কলেজের শিক্ষাব্যবস্থা একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে। অত্র কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ হোসেন সহিদ মাহবুবুর রহমান শিক্ষক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, কলেজটি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হলেও অতীতে কলেজের সকল রেকর্ড ভাল ছিল। বর্তমানে অনেক শিক্ষক কলেজটিতে পোষ্টিং নিয়ে আসলেও তারা মফস্বল এলাকা ভেবে এখানে থাকতে চাননা। এখানে কয়েক দিন চাকুরি করেই অন্যত্র বদলী নিয়ে চলে যান। ফলে কলেজটিতে প্রয়োজনীয় শিক্ষক পেলেও সব সময় শিক্ষক সংকট লেগেই থাকে। বর্তমানে কলেজটিতে ৫৬টি সৃষ্ট পদ ও অনুমোদিত ৬টি বিষয়ে ২৪টি পদ সহ সর্বমোট ৮০টি শিক্ষকের পদের বিপরীতে মাত্র ৩১ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। ৪৯ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে শূন্য। বর্তমানে কলেজটিতে ভর্তিকৃত ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী কলেজে আসা ছেড়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ধারণা যে কলেজে অধিকাংশ বিষয়ে শিক্ষক নেই সে কলেজে নিয়মিত ক্লাশ করে কি হবে? তাই তারা নিয়মিত ক্লাশে যান না। কলেজের অধ্যক্ষ বলেছেন, প্রয়োজনীয় শিক্ষক পেলে ও সব শিক্ষক কলেজে থাকলে উপজেলার এই বৃহৎ বিদ্যাপীঠ কে তিনি নওগাঁ জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে গড়ে তুলবেন। এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে ও কলেজে শিক্ষার্থী ধরে রাখতে জরুরী ভিত্তিতে এই কলেজে শিক্ষক সরবরাহসহ দীর্ঘ সময় কলেজে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করনে কলেজের অধ্যক্ষসহ এলাকার শিক্ষানুরাগী মহল শিক্ষা মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

(বিএম/পিবি/মার্চ ০৫,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test