E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মোরেলগঞ্জ অগ্রনী ব্যাংক শাখার গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

২০১৫ মার্চ ০৯ ১৬:৩৬:৪২
মোরেলগঞ্জ অগ্রনী ব্যাংক শাখার গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ অগ্রনী ব্যাংক শাখার এক শ্রেনীর অসাধূ কর্মকর্তা গ্রাহকের নামের ঋণ নবায়ন করে কমপক্ষে ২৫ লাখ টাকা ভাগাভাগি করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই কর্মকর্তারা আরো কয়েকজন গ্রাহকের কিস্তির টাকা লেজারে জমা না দিয়ে আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এঘটনায় অগ্রনী ব্যাংক মোরেলগঞ্জ শাখার ঋন গ্রহকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় ওই ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা নিজ নিজ হিসাবের স্থিতি হাতে নেওয়ার জন্য ভীড় করছেন।
এখবর পেয়ে অগ্রনী ব্যাংক খুলনা সার্কেলের এজিএম কাওসার আহমেদ, বাগেরহাট আঞ্চলিক শাখা ম্যানেজার (এসপিও) দিলীপ কুমার মন্ডল ও খুলনা সার্কেলের প্রিন্সিপ্যাল অফিসার শান্তি দাস মোরেলগঞ্জ শাখা পরিদর্শন করে বিষয়টি খোঁজখবর নেন।
জানাগেছে, মোরেলগঞ্জ শাখায় সদ্য ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন সুভাষ কুমার কুন্ডু। প্রথমে তার নজরে আসে মোহাম্মদীয়া ষ্টোরের নামে ৫’লাখ টাকা লোনের বিষয়টি। লেজারে দেখা যায় মোহাম্মদীয়া ষ্টোরের মালিক নজীর আহমেদ (সিসি লোন নং-১) কিস্তি খেলাপী তালিকায়। এখবর পেয়ে হতবাক ব্যাবসায়ী নজীর আহমেদ শিকদার। একইভাবে ৫ লাখ টাকা তোলা হয়েছে রবি ষ্টোরের নামের সিসি ৩০নং লোন নবায়ন করে। ‘মেডু’ লোন গ্রহিতা এনায়েত ফকির এর নামে লোন নবায়ন দেখিয়ে তোলা হয়েছে ৪৯ হাজার ৫শ’ টাকা। মেডু লোন গ্রহীতা বলাই লাল ভৌমিকের নামের একাউন্ট থেকে জান্নাতী গার্মেন্টস্ এর চেক ব্যবহার করে তুলেছে ৫২ হাজার টাকা।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কম্পিউটারে মোহাম্মদীয়া ষ্টোরের সিসি লেঅন নং-১ থেকে ৫ লাখ টাকা ডেবিট করে সিসি লোন নং-৩৪ এ ২ লাখ ও আইরিন গার্মেন্টস্ এর নামে ৩ লাখ টাকা ক্রেডিট দেখায়।
এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়ে তৎকালীন ম্যানেজার মিসেস শাফিয়া বেগম বলেন, ‘আমি কম্পিউটারের কাজ বুঝিনা। অফিসার ক্যাশ সৈয়দ শিয়ন সাইফ এ কাজগুলো করেছেন। এ বিষয়ে শিয়ন সাইফ বলেন, টাকা আত্মসাৎ নয়, কিছু ভুল হয়েছে তা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, গত ২ বছর ধরে এ শাখায় চলছে এমন অনৈতিক কান্ড। আর এর সাথে জড়িত রয়েছেন মোরেলগঞ্জ শাখার খোদ ম্যানেজারসহ ৩/৪জন পদস্থ কর্মকর্তা। ব্যাংকের সুনাম ক্ষুন্ন হবার মত এই ঘটনাগুলো নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
ব্যাংকের বর্তমান শাখা ম্যানেজার সুভাষ কুমার কুন্ডু বলেন, এঘটনার জন্য গ্রাহকদের কোন সমস্যা হবেনা, ব্যাংক কর্তৃপক্ষই টাকা জমা করে দিবে।
এবিষয়ে বাগেরহাট জোনাল শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এজিএম এসএম সোলায়মান বলেন, গ্রহকদের অজান্তে তাদের লোন নবায়ন করে টাকা তোলার বিষয়টির তদন্ত চলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সিসি ও মেডু মিলিয়ে ৭/৮ টি একাউন্ট থেকে গ্রহকদের অজান্তে টাকা তোলা হয়েছে। জালিয়াতি, বিশ্বাস ভঙ্গ ও অফিসিয়াল নিয়মের বাইরে এভাবে কমপক্ষে ২৫ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলেও তারা জানান।
অগ্রনী ব্যাংক খুলনা সার্কেলের পরিদর্শন দলের প্রধান কাওসার আহমেদ বলেন, মোহাম্মদীয়া ষ্টোরের মালিক নজির আহমেদের সাথে কথা বলেছি। তিনি নির্দোষ। তিনি লোন নবায়ন করে টাকা গ্রহন করেননি। তাকে কোন টাকা পরিষোধও করতে হবে না। কয়েকজন কর্মকর্তা পরিকল্পিতভাবে জালিয়াতির আশ্রয়ে ও বিশ্বাস ভঙ্গ করে গ্রাহকের নামে লোন নবায়ন করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করতে আমরা কাজ করছি’।
(একে/পিবি/মার্চ ০৯,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test