E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নড়াইলে জুলেখা হত্যার ঘটনায় আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন

২০১৪ মে ১২ ১৯:৩৬:৫৬
নড়াইলে জুলেখা হত্যার ঘটনায় আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন

লোহাগড়া(নড়াইল) প্রতিনিধি : মৃত্যুর ২ মাস ১৩ দিন পর নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের স্কুলছাত্রী জুলেখার (১৫) প্রকৃত হত্যা রহস্য উদঘাটনের জন্য কবর থেকে লাশ তার উত্তোলন করা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়। স্কুলছাত্রী জুলেখার (১৫) লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বেগম তাসমিন ফারহানা, কালিয়া থানার ওসি মতিয়ার রহমান, মৃত জুলেখার পিতা মাতা সহ এলাকার অসংখ্য নারী পুরুষ । চাপা কান্না সহ্য করে রুকু শেখ নিজের মেয়ের কবর খুড়ে ময়না তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্টদের হাতে তুলে দেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার (৬/৫/১৪) কাঞ্চনপুর গ্রামের স্কুলছাত্রী জুলেখা (১৫) হত্যা ঘটনা নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহনের জন্য কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নড়াইলের কালিয়া নালিশী আদালতের বিচারক মোঃ আরিফুল ইসলাম এ আদেশ দেন। আদালত বলেন নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহন পূর্বক আগামী ১৮/৫/১৪ ইং তারিখে প্রতিবেদন আকারে অত্রাদলতে দাখিল করার নির্দেশ প্রদান করেন। এ সময় মামলার বাদী নিহত জুলেখার পিতা রুকু শেখ সহ অন্যন্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলা নং এমপি ২৮/১৪ ধারা ১৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩০২/৩৪ দঃ বিঃ। মামলায় আসামী করা হয়েছে কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত আকরাম শেখের পুত্র রিকাইল শেখ, নাসির শেখ, হাসমত শেখ, নাসির শেখের পুত্র মুকুল শেখ, ও একই গ্রামের কালাম শেখের পুত্র বুলু শেখ,রমজান শেখ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের নাসির শেখের পুত্র মুকুল (২২) বেশ কিছুদিন ধরে একই গ্রামের রুকু মিয়ার কন্যা জুলেখাকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে উত্যাক্ত করে আসছিল। মুকুলের অব্যাহত কথার ছলচাতুরীতে জুলেখা সাড়া না দেওয়ার উপায় থাকে না। এক পর্যায়ে চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি মাসের ১৮ তারিখে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জুলেখাকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায় মুকুল। দুইজন একত্রে বসবাস করার পর ফেব্র“য়ারীর ২৮ তারিখে দুইজনে গ্রামে ফিরে জুলেখাকে গ্রামের কালাম শেখের বাড়িতে রাখে । একই সাথে মামলার আসামী রমজান শেখ জুলেখার মা বাবাকে কালাম শেখের বাড়িতে যেতে বলে। এ সময় জুলেখার মা হাজেরা বেগম কালাম শেখের বাড়িতে গেলে আসামীরা মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলে। হাজেরা বেগম মেয়েকে গ্রহন করতে আপত্তি জানালে শুরু হয় উভয় পক্ষের তর্ক বিতর্ক। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আসামীরা জুলেখাকে বেধকড় মারপিঠ শুরু করে। এ সময় তাদের আর্তচীৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে আসামীরা চলে যায়। এ সময় জুলেখার অবস্থার অবনতি হলে পল্লী চিকিৎসক ডাঃ একলিম হোসেন ও ডাঃ সালেহা বেগমের নিকট নিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়ার এক পর্যায়ে তাদের সামনে জুলেখার মৃত্যু হয়।

প্রভাবশালীরা কথিত শালিশের নামে খুনীদের বাঁচানোর চেষ্টা করতে থাকে। ঘটনার পরদিন বাবরা-হাছলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন লিকু, মাউলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফিরোজ খান কাঞ্চনপুর গ্রামের মাহাবুব, রসুল, কালাম, বুদু, ফায়েক, লয়েক, সজিব মাতববরসহ গ্রামের কথিত সাংবাদিক জামাই, কালিয়া থানার এস আই নজরুল শালিশে অংশনেয়। পুলিশ, সাংবাদিক ও স্থানীয় মাতববরদের সহযোগীতায় করে ময়না তদন্ত ছাড়াই জুলেখার মৃতদেহ দাফন করা হয়। পাশাপাশি জুলেখার পরিবারকে মুখ না খোলার জন্য হুমুকি অব্যাহত রাখে। এ ঘটনায় কালিয়া থানায় তারিখ ১ মার্চ একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-০৩/১৪ ।

(আরএম/অ/মে ১২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test