E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুলাউড়ার বরবটি রফতানি হচ্ছে ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যে

২০১৪ মে ১৩ ১৪:৫৩:০৬
কুলাউড়ার বরবটি রফতানি হচ্ছে ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যে

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ২০টি গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবারের চাষকৃত বরবটি সিলেট বিভাগের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহের পাশাপাশি রফতানি হচ্ছে ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।

বরবটি চাষ করে কুড়িটি গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবার এখন স্বাবলম্বী। তাদের চাষকৃত বরবটি থেকে প্রতিমাসে আয় হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর, কাদিরপুর, আমতৈল, ছকাপন, মেয়ারমহল ও বরমচাল ইউনিয়নের দিঘাইছড়া নদীর দক্ষিণ তীরের অদূরে ৭০ একর জমিজুড়ে চাষ করা হয়েছে বরবটি।

উপজেলার গোবিন্দপুর, মৌলভীগাঁও, হরিণগর, পশ্চিম জালালাবাদ, কোণাগাঁও, শ্রীপুর, নবীনগর, নছিরাবাদ, লামাপাড়া, চকেরগ্রামসহ আশপাশ এলাকার ৩ শতাধিক পরিবারের মানুষ বরবটি চাষে জড়িত রয়েছেন। গ্রামের বাসিন্দা বরবটি চাষী জুবেল মিয়া, রুমন মিয়া, রাসেল আহমদ, সুমন মিয়া, সমছু মিয়া, আব্দুল খালিক, মাসুক মিয়া, লাল মিয়া, সাজিদ মিয়া, সুকুমার চন্দ দেব, নাজু বেগম, আসব আলীসহ অনেকেই বরবটি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

চাষীরা জানান, এক বিঘা জমিতে বরবটি চাষ করতে ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। চাষ প্রক্রিয়া শেষে বিক্রিত সবজি থেকে আয় হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। তবে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে প্রয়োজনীয় সেচ দেয়া সম্ভব হয় না। তাদের দাবি, সরকারিভাবে ৩-৪টি গভীর নলকূপ স্থাপন করে দেয়া হলে তাদের জন্যে অনেক উপকার হয়।

শুধু বরবটি নয়, রবিশস্য এ অঞ্চলের চাষীদের ভাগ্য বদলে দিতে পারে বলে তারা আশাবাদী। অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান তুলে এ জমিতে কৃষকরা বরবটি চাষ শুরু করেন। বীজ রোপণ থেকে তিন মাসের মধ্যে ফসল আসতে থাকে। ফাগুন মাসের শেষদিক থেকে সংগ্রহ ও বিক্রি শুরু হয়। এ সবজি চাষে জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে গাছ পুষ্ট হয়। কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।

পাইকারি হিসেবে মণপ্রতি গড়ে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই লাখ কেজি বরবটি বিক্রি হয় প্রায় ১০ লাখ টাকায়। এ হিসেব অনুযায়ী, এক মাসে বিক্রির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৩ কোটি টাকায়। ফলন এক থেকে দেড় মাস সংগ্রহ করা যায়। প্রতি সপ্তাহে ২-৩ দিন ফসল সংগ্রহ করা হয়।

সিলেট বিভাগের মানুষের প্রয়োজনে সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার পর বিদেশেও রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা হয়। একাধিক রফতানিকারক এখানে উৎপাদিত সুস্বাদু এ সবজি বিদেশে রফতানি করছেন। এ থেকে বিপুল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে বাংলাদেশ। প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে এ সবজির কদও বেশি বলে স্থানীয় কৃষকরা জানান। প্রবাসীদের চাহিদার প্রতি অগ্রাধিকার দিয়ে লন্ডন, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয়।

এ ব্যাপারে বরমচাল ইউপি চেয়ারম্যান ইসহাক চৌধুরী ইমরান, ব্রাহ্মণবাজার ইউপি চেয়ারম্যান রফিক মিয়া ও কাদিপুর ইউপি চেয়াম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান বলেন, কম খরচে বেশি লাভ থাকায় বরবটি চাষে স্থানীয় চাষীরা বিপ্লব ঘটিয়েছেন।

কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খুরশেদ আলম জানান, এসব এলাকার কৃষকরা বরবটি চাষে বেশ আগ্রহী। কৃষি অফিস থেকে তাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার কারণে এ বছর বেশ ভালো ফলন হয়েছে।

(জেএ/এটি/মে ১৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test