E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলাপাড়া হাসপাতালে ডাক্তারদের কোন্দলে দুর্ভোগে রোগীরা

২০১৫ এপ্রিল ১৭ ১৫:২১:০৪
কলাপাড়া হাসপাতালে ডাক্তারদের কোন্দলে দুর্ভোগে রোগীরা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : কলাপাড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার ঘটনায় হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জুনাইদ হোসেন লেলীনের অপসারন ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তাররা।

তাকে অপসারণ না করলে কর্মবিরতি পালনসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে হাসপাতালের সাত ডাক্তার পটুয়াখালী সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। ডাক্তারদের মধ্যে অভ্যন্তরীন কোন্দল প্রকাশ্যে রুপ নেয়ায় দূর্ভোগে পড়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা।

বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী সিভিল সার্জনের কাছে প্রেরিত লিখিত অভিযোগে ডাক্তাররা উল্লেখ্য করেন, ডা. লেলীনের কারনে কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। তিনি হাসপাতালের অন্য ডাক্তারদের দায়িত্বে পালনে বাঁধা প্রদানসহ প্রকাশ্যে রোগীদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে ভিজিট গ্রহন করছে। তার কারণে হাসপাতালে শুরু হয়েছে অবৈধ সার্টিফিকেট বানিজ্য। হাসপাতালের অভ্যন্তরে দালাল রেখে অবৈধ প্রাকটিস করছেন।

সর্বশেষ কলাপাড়ার হাসপাতালের ডিএসএফ’র রুমে নিজের চেম্বার করতে বাঁধা দেয়ায় হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম ফরহাদকে মুঠোফোনে প্রাণনাশের হুমকি ও পরিবারের উপর হামলার হুমকি দেন।

এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রেফায়েত হোসেন, ডা. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, ডা. মো. হাবিবুর রহমান, ডা. মানস মজুমদার, ডা. উম্মে জান্নাতুল ফেরদৌসী, ডা. তামান্না রহমান শান্তা ও ডা. মোহসীনা গুলনাহার তার অপসারন ও শাস্তির দাবিতে সিভিল সার্জনের কাছে অভিযোগ করেন। এমনকি তাকে অপসারন না করলে ধারাবাহিক কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে তারা সাংবাদিকদের জানান। তাদের অভিযোগ এক ডাক্তারের সেচ্ছাচারিতার কারনে কেন তারা দুর্নামের ভাগ নিবেন। তার কারনে প্রায় প্রতিদিনই হাসপাতালে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ব্যহত হচ্ছে।

এদিকে ডাক্তার লেলীনের বিরুদ্ধে একাধিক ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ গত ২৪ মার্চ কলাপাড়ার টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া গ্রামের আবু বকর সিদ্দিক নামের এক রোগী এ্যাপেনডিস এর ব্যাথায় আক্রান্ত হয়ে ডা. লেলীনের কাছে চিকিৎসা নিতে যায় (রেজি নং-২৪৬২/২৫)।

তিনি রোগীকে চারদিন বিভিন্ন পরীক্ষা করার পর তার এ্যাপেনডিস অপসারন না করে ভুল করে খাদ্যনালী কেটে ফেলেন। এতে রোগী আরও অসুস্থ্য হয়ে পড়লে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হলে রোগীর স্বজনরা জানতে পারেন তার খাদ্যনালী কেটে ফেলা হয়েছে। এতে রোগীর স্বজনরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে ডা. লেলীন রোগীর স্বজনকে পাঁচহাজার টাকা চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে শান্ত করেন। এছাড়াও তার নির্ধারিত ডায়গনষ্টিক ক্লিনিকে রোগীরা বিভিন্ন টেষ্ট না করলে তাদের চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডা. মো. জুনায়েদ হোসেন লেলীন জানান, তিনি ডিএসএফ’র রুমে বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অন্য ডাক্তাররা নিষেধ করায় আর বসেন নি। তার সাথে অন্য ডাক্তারদের কোন বিরাধ নেই। তবে তিনি কাউকে হুমকি কিংবা রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট গ্রহন করেন না। এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

এ কলাপাড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মো. গোলাম ফরহাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে এ বিষয়ে কথা বলতে নিষেধ করেছে। আগামী ২/১দিনের মধ্যে গোটা ঘটনার তদন্ত হবে বলে তিনি জানান।

(এমআর/এএস/এপ্রিল ১৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test