E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২১ বছর ভাঙ্গা সেতু দিয়ে দুই গ্রামের মানুষের চলাচল !

২০১৫ এপ্রিল ১৯ ১৪:৪৫:৫৬
২১ বছর ভাঙ্গা সেতু দিয়ে দুই গ্রামের মানুষের চলাচল !

ঝালকাঠি প্রতিনিধি:ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার চেচরিরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চেঁচরি ও আমুয়া ইউনিয়নের বাঁশবুনিয়া এই দুই গ্রামের মধ্যে সংযোগকারি জমাদ্দার হাট খালের ওপর তৈরি সেতুর করুন অবস্থা। দুই গ্রামের প্রায় আট হাজার মানুষের একটি সেতু নির্মাণের দাবি গত ২১ বছরেও পূরণ হয়নি।

ভাঙ্গা সেতুটিই দুই গ্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র অবলম্বন। জানাগেছে, কাঁঠালিয়া উপজেলার চেঁচরিরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চেঁচরি গ্রামের জমাদ্দার হাট খালের ওপর ১৯৮৪-৮৫ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) একটি লোহার সেতু (আয়রণ ব্রিজ) নির্মাণ করে। নির্মাণের আট বছর পর ১৯৯৩ সালের শেষের দিকে সেতুর উত্তর অংশ ভেঙ্গে হেলে পড়ে এবং দেবে যায়। ফলে দক্ষিণ চেঁচরি ও আমুয়া ইউনিয়নের বাঁশবুনিয়া গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতেত পড়েন। সেই থেকে এলাকাবাসী ভাঙ্গা আয়রন ব্রিজটি সংস্কার অথবা একটি পাকা ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। সেতু ভেঙ্গে যাওয়ার পর একুশ বছর পার হলেও আজ পর্যন্ত এলজিইডি বিভাগ নতুন সেতু নির্মাণ অথবা সংস্কারের কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন এই ব্রিজটিই হচ্ছে দক্ষিণ চেঁচরি এবং বাঁশবুনিয়া গ্রামের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। অনুপায় হয়ে স্থানীয়রা বাঁশ ও গাছ দিয়ে ব্রিজটি সংস্কার করে কোন রকম চলাচলের উপযোগি করে পারাপার হচ্ছেন তারা। দুই গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে বছরে একবার কোন বছর দুইবার ব্রিজ সংস্কার করে দুইগ্রামের স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করছেন। দক্ষিণ চেঁচরি গ্রামের জমাদ্দার হাট ব্রিটিশ আমল থেকে এ অঞ্চলের ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এ ব্যবসা কেন্দ্রে জমাদ্দার হাট খালের পূর্ব-দক্ষিণে আমুয়া ইউনিয়নের বাঁশবুনিয়া গ্রামের মানুষ এ সেতু পার হয়ে পণ্য কেনা-বেচা করতে আসেন জমাদ্দারহাটে। খালের দুইপারে রয়েছে দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই দুই বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা এ ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে। দক্ষিণ চেঁচরী গ্রামের মানুষ বাঁশবুনিয়া গ্রামের ওপর দিয়ে আমুয়া হাসপাতালে, আমুয়া বন্দর এবং উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন এ ভাঙ্গা সেতুর ওপর দিয়ে। অত্যান্ত ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীসহ গ্রাবাসীদের ভাঙ্গা ও হেলে পড়া এ আয়রন সেতু পার হয়ে শিক্ষা, ব্যবসায়িক কর্মকান্ডসহ নিত্যদিনের কাজ সম্পাদন করতে হচ্ছে। চেঁচরি গ্রামের আ.সোবাহান বলেন “রেডিও-টেলিভিশনে দেশের অনেক উন্নয়নের কথা শুনি মন্ত্রী-মিনিস্টারের কথায়। অথচ আমাদের এলাকায় কোন উন্নয়ন নেই। ২১ বছর ধরে জমাদ্দারহাট খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ হচ্ছে না। চেয়াম্যান মেম্বাররা শুধু বলেন চেস্টা করতেছি, আর কিছু দিন অপেক্ষা করেন। চেঁচরিরামপুর ইউনিয়নের চেয়াম্যান জাকির হোসেন বলেন শুধু জমাদ্দার হাট সেতু নয় আমার ইউনিয়নের একাধিক আয়রণ সেতু চলাচলের অনুপযোগি এব্যপারে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বহুবার বলা হয়েছে কোন কাজ হয়নি। কাঁঠালিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মাহামুদ আল ফারুক বলেন উপজেলায় অসংখ্য আয়রণ সেতু ভাঙ্গা রয়েছে। তহবিল প্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে গুরুত্ব অনুযায়ি মেরামত করা হবে।

(এএম/এসসি/এপ্রিল১৯,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test