E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁয় ঝড় ও শিলা-বৃষ্টিতে ধান ও আমের ব্যাপক ক্ষতি

২০১৫ এপ্রিল ২৩ ১৮:০৯:৩৭
নওগাঁয় ঝড় ও শিলা-বৃষ্টিতে ধান ও আমের ব্যাপক ক্ষতি

নওগাঁ প্রতিনিধি : বৈশাখের শুরু থেকেই এবার যেন আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব শুরু হয়েছে। প্রবল ঝড়, বজ্রসহ শিলা বৃষ্টি যেন লেগেই আছে। সারাদিন কোনভাবে ভাল কাটলেও রাতে যেন নিস্তার নেই। হয় ঘুর্ণিঝড়, নয়তো শিলা-বৃষ্টি।

সেই সঙ্গে পিলে চমকানো বিদ্যুৎ চমকানো আর বিকট শব্দে আকাশের ডাক তো রয়েছেই। মঙ্গলবার নওগাঁ জেলার ওপর দিয়ে তৃতীয় দফার কাল বৈশাখী বয়ে যাবার পর বুধবার দিনগত মধ্যরাতে ঝড়ো-হাওয়ার পাশাপাশি শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। জেলার মাঠ ভরা পাকা বোরো ধান দু’চার দিনের মধ্যেই শুরু হবে পুরোদমে কাটা-মাড়াই।

কৃষক আগাম লাগানো বোরো ধান কাটার প্রস্তুতিও নিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই এই শিলা-বৃষ্টি আর ঝড় ক্ষেতের ধান শুয়ে ফেলেছে। শিলার আঘাতে অনেক ধান ঝড়ে পড়েছে ক্ষেতেই। সেই সঙ্গে জেলার পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুরসহ জেলা জুড়ে আমের ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। শিলার আঘাতে আমের গুটি ঝড়ে পড়ার পাশাপাশি পচন ধরবে আমে। এতে বাগান মালিকদের মাথায় হাত উঠেছে।

মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে উত্তর-পশ্চিম দিকে থেকে তৃতীয় দফায় ধেয়ে আসে কালবৈশাখী। প্রায় ৪৫ মিনিট স্থায়ী এ ঝড়ে মান্দা উপজেলার মান্দা সদর, পরানপুর, কুসুম্বা, ভারশোঁ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অন্য ইউনিয়নগুলোও। ঝড়ে কুসুম্বা ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মোজাহার হোসেন মন্ডল, মান্নান মন্ডল, বাবলু মন্ডল ও আব্দুল জব্বারের বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। নব- গ্রামের নুরুল ইসলাম ও চকমোনসব গ্রামের জিয়ার দেওয়ানের বাড়ির টিনের ছাউনি সমুদয় উড়ে গেছে। এছাড়া টিনের চাউনি উড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি। এসব মেরামত করতে না করতেই বুধবার দিনগত রাত পৌনে ১১ টার দিকে জেলা জুড়ে শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া আর শিলাবৃষ্টি। মানুষের কষ্টের যেন অন্ত নেই।

কালবৈশাখীর তৃতীয় দফার তান্ডবে এবং বুধবার রাতের শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষেতের বোরো ধান। পাকা ও আধা-পাকাসহ সবগুলো ক্ষেতের ধান মাটিতে পড়ে গেছে। শিষ থেকে ঝরে গেছে পাকা ও আধাপাকা ধান। এ অবস্থায় ধান ঘরে তোলা নিয়ে কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

নওগাঁ অঞ্চলে তৃতীয় দফায় কালবৈশাখীর তান্ডবে ভেঙ্গে ও উপড়ে পড়েছে হাজার হাজার গাছপালা। খুঁটি ভেঙ্গে ও তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ উপজেলাগুলোতে। অপরদিকে ধামইরহাট উপজেলার মঙ্গলকোটা গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, তার লাগানো প্রায় ১০ বিঘা জমির সম্পূর্ণ ধান বুধবার মধ্যরাতের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মাটিতে শুইয়ে গেছে। ১০ বিঘা জমির চাষাবাদ খরচ প্রায় লক্ষাধিক টাক। ওই জমিতে প্রায় ৪ শ’ মন ধান পাওয়ার আশাবাদি ছিলেন কৃষক আশরাফুল। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে প্রায় অর্ধেক ধান তার ঘরে উঠবে কিনা, এমন হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

(বিএম/এএস/এপ্রিল ২৩, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test