E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাসারের জয়বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড জয়ের গল্প

২০১৫ মে ০৬ ১৫:৩৩:৫৬
বাসারের জয়বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড জয়ের গল্প

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : মানুষের কাছে অসাধ্য কিছু নেই। অসাধ্য সাধনের নেপথ্যে নাকি থাকে একটা বড় স্বপ্ন। ঠিক তেমনি এক স্বপ্নকাতর তরুণ ময়মনসিংহের গৌরীপুরের এইচ এম খায়রুল বাসার। যাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘সোস্যাল ইউনিটি ফর নার্সিং’ বা সান নামের সংগঠনটি স্বেচ্ছাশ্রম কার্যক্রমের মাধ্যমে এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে পরম বন্ধুর মতো। একাগ্র চেষ্টায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ নানা কাজের  মাধ্যমে সংগঠনটির সদস্যরা সমাজের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

তবে এলাকার কেউ কি কখনো ভেবে ছিলো বাসারের স্বপ্ন তাকে নিয়ে যাবে অনেক দূর। কাজের প্রতিদান স্বরূপ পাবেন জয়বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনিস্টিটিউটে ‘ইয়াং বাংলা’ আয়োজিত কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ক্যাটাগরিতে ‘জয়বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন সান এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এইচএম খায়রুল বাসার। তিনি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকে অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর তাই বাসারের অনুভূতিটা ছিলো একটু অন্যরকম। তিনি বলেন, আমি স্বপ্ন দেখি। ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন না। কাজের মধ্য দিয়ে স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে আনার চেষ্টা করি। আমি স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখতে চাই। সারা জীবনই তা করে যাব। আমার এই পুরষ্কার গৌরীপুরের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা অরুণ চাচা ও গৌরীপুরের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসর্গ করলাম। তিনি আরো বলেন, অরুণ চাচার চা ষ্টলে ২০০৬ সালে গৌরীপুরের উদ্যোমী তরুণ স্বপ্নবাজ সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে সান সংগঠনটি আমি গড়ে তুলি।
২০০৬ সালে সান প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে তাঁদের কাজের ব্যাপকতা ইতোমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে সচেতন মহলে। ঝরে পড়া শ্রমজীবি শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়াতে সানের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিদ্যালয়। প্রান্তিক এলাকায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁরা তরুণদের মধ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার প্রয়াস নিয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে তিনি একটি করে পাঠাগার স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে ২টি ইউনিয়নে গ্রাম পাঠাগার স্থাপন করেছেন। যেখানে প্রতিদিন শতাধিক পাঠক বই পড়ে ও সৃজনশীল কাজে যুক্ত হওয়ার প্রেরণা পায়। তিনি প্রতিটি গ্রামে একটি করে সমবায় সংগঠন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত ৩টি এলাকায় ৩টি সমবায় সংগঠন ও তার উদ্যোগে দুইটি সমবায় খামার স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোতে প্রায় ৪৬ জন তরুণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। যারা সময়কে জয় করার চেষ্টায় সংগ্রাম করে যাচ্ছে। গড়ে তোলেছেন একটি সমবায় কিন্ডার গার্টেন। গ্রাম পর্যায়ে সমবেত উদ্যোগে আধুনিক শিক্ষা প্রসারে এ ধরণের উদ্যোগ সম্ভবত এই প্রথম। গ্রামের দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আইনের আশ্রয় লাভের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে গ্রামের মানুষ প্রায়ই হয়রানির শিকার হন। তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াতেই এই প্রচেষ্টা নিয়েছে সান। এ পর্যন্ত দুই শতাধিক দরিদ্র মানুষকে সরকারি আইনগত সহায়তা প্রাপ্তিতে সান সহযোগিতা করেছে।
‘ভিশন ২০২১’ গড়ার সাথে সংগতিপূর্ত এ উদ্যোগের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন দরিদ্র পরিবারের অন্তত ৭৩ জন তরুণ।
খায়রুল বাসারের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের কৃষ্টপুরে। বাবা এটিএম গোলাম রব্বানী পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক। মাতা হাফিজা রব্বানী পেশায় একজন গৃহীনী। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে বাসার দ্বিতীয়। তিনি আনন্দমোহন কলেজ থেকে ২০১২ সালে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। সান এর পাশাপাশি বাশার সাংবাদিকতা পেশার সাথেও জড়িত। বর্তমানে তিনি গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার এই সাফল্যে প্রেসক্লাবে তার সমকর্মীরাও দারুন আনন্দিত।
গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, এইচ এম খায়রুল বাসার জয়বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় আমরা অনেক আনন্দিত। প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে বাসার ও তার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সান এর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
(এসআইএম/পিবি/ মে ০৬,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test