E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মংলায় বাড়ছে মাদকাসক্তি, নেই প্রশাসনের নজরদারি

২০১৫ মে ০৬ ১৯:৪২:৫৭
মংলায় বাড়ছে মাদকাসক্তি, নেই প্রশাসনের নজরদারি

মংলা প্রতিনিধি : মংলা শহর ও শহরতলীর অলি-গলিতে ক্রমশই বাড়ছে মাদকাসক্তদের সংখ্যা। দিনের শেষে সন্ধ্যা নামলেই শহরতলীর অন্ধকার গলিতে শুরু হয় মাদকাসক্তদের অবাধ বিচরন। চলে রাত ভর বিকিকিন ও মাদক সেবনের মহোৎসব।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে জানলেও নিশ্চিুপ থাকছে। ফলে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের দাপটের কাছে স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবার-পরিজন নিয়ে দারুন অসহায় হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মংলার পূর্ব কবরস্থান রোড, রিমঝিম সিনেমার হলের সম্মুখভাগ, রাতারাতি কলোনী, বালুর মাঠ, ছাড়া বাড়ি, পরিত্যাক্ত পোট হেলথ কমপ্লেক্স, ফেরীঘাট, মাদ্রাসা রোড়, নদী সংলগ্ন বেড়িবাধে গড়ে উঠেছে গাজা, হেরোইন ও ইয়াবাসহ হরেকরকম মাদক সেবন ও বিকিকিনির একাধিক আস্তানা।

এ সব আস্তানায় প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার মাদক বেচাকেন হয় বলে সংশ্লিস্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে। সন্ধ্যা হলেই এ সব স্থান সমূহে শুরু হয় উঠতি বয়সের কিশোর ও মাদকাসক্ত বখাটেদের আনাগোনা।

বিশেষ করে মংলার বস্তিগুলোতে বেড়ে চলেছে মাদক আসক্তের সংখ্যা। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বস্তির নেশা গ্রস্থ বখাটে ছেলেরা আশেপাশের মহল্লার অন্ধকার সড়কে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে মাদক সেবন ছাড়াও দলবদ্ধ ভাবে ঘুরে বেড়ায়।

শহরের রাতারাতি কলোনী থেকে সাত্তার লেন বাই পাস সড়কে কোনো আলোর ব্যবস্থা না থাকায় এই এলাকায় এদের অবাধ বিচরণ রয়েছে। সঙ্গবদ্ধ মাদক আসক্ত ও বখাটেদের দাপটের কাছে এলাকাবাসী অসহায়। কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না তাদের ভয়ে।

বিভিন্ন সময় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে এলাকাবাসী জানালেও কোন সুফল মেলেনি। উল্টো মাদকাসক্তদের তৎপরতা দিনকে দিন বেড়েই চলছে।

এ দিকে মংলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক মামলায় ৩২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত (জামিনে মুক্ত) তারা বেগমকে গত ৩ মে গাজাসহ আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই দিন দুুপুরে শহরতলীর মাছমারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক সাম্রাজ্ঞী তারা বেগম (৪০) ও তার ছেলে হিরো (১৮) কে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ২শ গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে মংলাসহ আশপাশের এলাকায় নানা কৌশলে গাজা, হেরোইন ও ইয়াবা বিক্রি করে আসছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে।

একাধিক মাদক মামলার আসামী তারা বেগমকে আদালত সম্প্রতি ৩২ বছরের সাজা দেয়। বেশ কিছুদিন জেলে থাকার পর হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে বের হয়ে এসে আবারো মাদকের ব্যবসা শুরু করে এই নারী মাদক ব্যবসায়ী তারা ও তার পরিবারের সদস্যরা। তারা মাছমারা এলাকার মৃত রুমি সরদারের স্ত্রী। তারা বেগম আটক হওয়ার পর এলাকায় আনন্দ মিছিল করেছে গ্রামবাসী।

এ অবস্থায় স্কুল-কলেজগামী শিশু-কিশোরদের ভবিষৎ নিয়ে অজানা শংকার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে অভিভাবকরা। তাদের দাবি স্থানীয় প্রশাসন নজরদারি করলে স্থানীয়রা মাদকাসক্তদের কবল থেকে নিস্তার পাবে।

একই সাথে স্থানীয়দের প্রত্যাশা, যে সব এলাকায় বিদ্যুৎ লাইট ও বাল্ব নেই সে সব এলাকায় জরুরী ভাবে বৈদ্যুতিক বাল্ব স্থাপন কাজে মনোযোগী হবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।

তবে মংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: বেলায়েত হোসেন দাবি করেন, মাদক বিকিকিনি ও আসক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের অব্যাহত অভিযান চলছে।

(জেএইচ/পিএস/মে ০৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test