E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যেখান থেকে টেনে চড়লে টিকিট লাগে না!

২০১৫ মে ০৮ ১৫:০৬:১০
যেখান থেকে টেনে চড়লে টিকিট লাগে না!

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : স্টেশন আছে, ট্রেনও থামে যথারীতি। যাত্রীও উঠা-নামা করে। তবে কোন টিকিট বিক্রি হয়না। নেই কোন স্টাফ। উড়ে না লাইন বন্ধ রা ক্লিয়ারের লাল-সবুজের পতাকা।

অযত্ন-অবহেলায় ধ্বংস ও লুট হচ্ছে সরকারের কোটি টাকার সম্পদ। প্রভাবশালীদের দখলে বেহাত হচ্ছে রেলওয়ের সম্পত্তি। অফিস আছে, কোয়াটার আছে, নেই শুধু কোন স্টাফ। রেলওয়ে ভবন জুয়ারী, মাদকসেবী আর ভাসমান পতিতাদের কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এটি ময়মনসিংহ-গৌরীপুর রেলপথের বিসকা রেলস্টেশন ও ময়মনসিংহ-গৌরীপুর-চট্টগ্রাম রেলপথের বোকাইনগর রেল স্টেশনের দশা। বন্ধ দু’স্টেশনের কার্যক্রম। এমন বেহাল দশায় প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে রেলওয়ের সম্পদ!

ময়মনসিংহ-গৌরীপুর রেলপথের তারাকান্দা উপজেলার বিস্কা রেলওয়ে স্টেশনের একটি কক্ষ মলমূত্র ত্যাগের কারণে গণল্যাট্রিনে পরিণত হয়েছে। অবশিষ্ট কক্ষগুলোতে ঝুলছে তালা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলো অযতœ-অবহেলা বিনষ্ট হচ্ছে।

এ স্টেশনে জারিয়া, মোহনগঞ্জ, ভৈরবগামী ১৬টি ট্রেনের যাত্রী উঠানামা করে। আন্তঃনগর হাওর ও আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন অতিক্রমের সময় উড়ে না লাল-সবুজের পতাকা। যাত্রীরা টিকেট ছাড়া ট্রেনে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার ট্রেনে উঠে ভ্রাম্যমাণ আদালত বা টিকেট চেকারদের নিকট দিতে হচ্ছে দ্বিগুন থেকে ১০গুন ভাড়া। জনবল সংকটে এ স্টেশনে রেলক্রসিং না হওয়ার কারণে প্রতিটি ট্রেন প্রায় ১ঘন্টা গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন বা শম্ভুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে আটকে থাকতে হচ্ছে।

গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর রেলওয়ে স্টেশনে প্রতিদিন ভৈবর ও ময়মনসিংহগামী ৪টি ট্রেন যাত্রা বিরতি দেয়। রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের জন্য বসার আসন, রেলের স্লিপার, রেললাইন ইতিমধ্যে চুরি হয়ে গেছে। চলছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন, রেলওয়ে জংশনের অফিস ভবনের মূল্যবান জিনিসপত্র লুঠপাট। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, স্টেশন মাস্টার ও বুকিং মাস্টারের রুমগুলো এখন ভাসমান পতিতাদের অবৈধ কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। দিনে এ কক্ষগুলোতে চলে গাঁজা সেবন, মাদক সেবন ও বিক্রিসহ নানা অপকর্ম। এ দু’টি স্টেশনে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচীতেও নেই কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোঃ তারেক জানান, বোকাইনগর রেলওয়ে স্টেশনে বুকিং মাস্টার ৩জন, পোর্টার ম্যান ১জন, সুইপার ১জন ও বিসকা স্টেশনে মাস্টার ৩জন, পয়েন্টস ম্যান ৬জন, পোর্টার ম্যান ২জন ও ২জন সুইপারের পদ রয়েছে। তবে শুধুমাত্র বিসকা স্টেশনে একজন পয়েস্টস ম্যান আছে। জনবল সংকটের কারণে দু’স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে সিএসএম ২জন, পয়েন্টস ম্যান ৫জন, পোর্টার ৩জন, বুকিং ক্লার্ক ৩জন, সুইপার ২জন, টিসি ৭জন, সাংটিং ৬জনের পদ শূন্য থাকায় যাত্রীসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।

দু’টি স্টেশনে জনবল নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন, ট্রেন অবরোধসহ নানা কর্মসূচী পালন করেছে এলাকাবাসী। গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতিন মাস্টার জানান, দু’টি স্টেশনে জনবল সংকটের কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে আর যাত্রীরা চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

(এসআইএম/এএস/মে ০৮, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test