E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুগ্ধখামার বদলে দিল বিনয় কৃষ্ণের জীবন

২০১৫ মে ০৯ ২০:৩৩:৩৭
দুগ্ধখামার বদলে দিল বিনয় কৃষ্ণের জীবন

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম আমগ্রামের ব্রজেন বিশ্বাসের ছেলে বিনয় কৃষ্ণ বিশ্বাস নিজের প্রচেষ্টা, উদ্যোগ আর মেধাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন দুগ্ধ খামার।

সেই খামারের টাকায় নিজের অভাব দূর করে সংসারে সুখ ও আনন্দ ফিরিয়ে এনেছে্ন। সেই সাথে এলাকায় একজন সফল মানুষ হিসেব সুনাম অর্জনের পাশাপাশি অনেক যুবক তাকে দেখে এ কাজে উদ্ধুদ্ধ হয়েছে।

বিনয় কৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিনয় পরিবারের ৩ ভাই ও দুই বোনের সংসারে সবার বড়। মা বাবার ইচ্ছে ছিল লেখাপড়া শিখে উচ্চ শিক্ষিত হয়ে চাকুরী করে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে। শুরু হয় বেকার জীবন।

তখন স্থানীয় একজন ব্যক্তির পরামর্শে মাদারীপুর যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে ৩ মাস মেয়াদী গবাদীপশু, হাঁসমুরগী পালন মৎস্য চাষ, কৃষি ও প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

প্রশিক্ষণ শেষে সে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য রাজৈর উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কার্যালয় থেকে ৩৬ হাজার টাকা যুব ঋণ গ্রহণ করে। সেই টাকা দিয়ে একটি দেশী জাতের দুগ্ধবতী গাভী কিনে স্বল্প পরিসরে একটি দুগ্ধ খামার গড়ে তুলেন।

কঠোর পরিশ্রম ও মনোবলের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে খামারের পরিধি বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস হতে আরো ৫০ হাজার টাকা যুব ঋণ গ্রহণ করে। সেই টাকা আর পরিবার থেকে কিছু অর্থ বিনিয়োগ করে গড়ে তুলেন একটি বাণিজ্যিক দুগ্ধখামার।

বর্তমানে তার খামারে বিদেশী উন্নত জাতের ৮টি গাভী রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৯ লাখ টাকা। যা থেকে তার যাবতীয় খরচ বাদে মাসে প্রায় ২৫ হাজার টাকা আয় হয়।

বিনয় দুগ্ধ খামারের পাশাপাশি তার পৈত্রিক ৩.৫ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন একটি মৎস্য ঘের। মৎস্য ঘেরের পাশে কলা গাছের বাগান বিনয়ের আর্থিক সমৃদ্ধিতে নতুন আয়ের সঞ্চার করেছে।

সম্প্রতি গরুর খামারের গোবর ব্যবহার করে বিনয় একটি বায়োগ্যাস প্লান্ট গড়ে তুলেছেন। যা দ্বারা তার পরিবারের রান্নার কাজ চলছে। বায়োগ্যাস প্লান্টের বর্জ্য স্থানীয়ভাবে জমিতে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বিনয়ের সকল কর্মকান্ডে তাকে পাশে থেকে সহযোগিতা করছে তার স্ত্রী মেরী বিশ্বাস। আর এই সমন্বিত খামারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ৫ জন লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।

বিনয় কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছে। পরে স্থানীয় একজনের কথামতো উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস থেকে টাকা যুব ঋণ নেই। সেই টাকা আর পরিবার থেকে কিছু অর্থ বিনিয়োগ করে গড়ে তুলি একটি বাণিজ্যিক দুগ্ধখামার। আর এভাবেই আমার অভাব দূর হয়ে যায়।

মাদারীপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, দেশের বেকার যুব সমাজ বিনয়ের কর্মকান্ড অনুসরণ করে বেকার সমস্যা হতে মুক্তি পেতে পারে। গড়ে তুলতে পারে আত্মকর্মসংস্থানমূলক অনেক প্রকল্প। এতে করে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি অপরদিকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিকভাবে আরো এগিয়ে যাবে।

(এএসএ/পিএস/মে ০৯, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test