E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

১ যুগেও এমপিও ভুক্ত হয়নি নওগাঁর শাংশৈল আদিবাসী স্কুল

২০১৫ মে ১৩ ১৬:০৭:০০
১ যুগেও এমপিও ভুক্ত হয়নি নওগাঁর শাংশৈল আদিবাসী স্কুল

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা শাংশৈল আদিবাসী স্কুল এ্যান্ড কলেজের বেহালদশা। দীর্ঘ ১ যুগেও এমপিওভুক্ত হয়নি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

জানা গেছে, বিগত ২০০৪ সালে ১ জানুয়ারিতে বিদ্যালয়টির চালু করা হয়। ৫শ’ ৫০জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। এ ছাড়াও নানা প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে আদিবাসীদের শিক্ষা গ্রহনেরএই প্রতিষ্ঠানটি। নিয়ামতপুর উপজেলা সদর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪শ’ ৬৬জন। এসব নানা সমস্যার কারণে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বিগত ৩ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১২ সালে জেএসসিতে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছিল ৭৬ জন, পাশ করেছিল ৬০জন। ২০১৩ সালে জেএসসিতে অংশগ্রহন করেছিল ৪৪ জন, পাশ করেছিল ৩৯ জন। ২০১৪ সালে জেএসসিতে অংশগ্রহন করেছিল ৬৩ জন, পাশ করেছিল ৬০জন এবং বর্তমান ২০১৫ সালে জেএসসিতে অংশ নেবে ১শ’ ৩৬জন। শাংশৈল আদিবাসী স্কুল এন্ড কলেজ ২০১৪ সালে প্রথম নিজ নামে এসএসসিতে অংশগ্রহন করে। টেষ্ট পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৩২জন, পাশ করেছিল ২৫জন।
ফলাফলের দিক দিয়ে দেখা গেছে, স্কুলে শিক্ষার মান সন্তোষজনক। বিদ্যালয়ে কোন বিল্ডিং নাই। নিজস্ব অর্থায়নে টিন শেড কিছু ঘরে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করা হয়। পর্যাপ্ত বেঞ্চের অভাবে একটি বেঞ্চে ৬/৭জন করে বসে ছাত্র/ছাত্রীরা লেখাপড়া করছে। প্রতিষ্ঠানে আজ পর্যন্ত বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয় টি ১১জন শিক্ষক এবং ৪জন কর্মচারী দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। খেয়ে না খেয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান দিয়ে আসছে তারা। পেটে ক্ষুধা রেখে তারাই বা কতটুকু শিক্ষা দিতে পারবে, এমন প্রশ্ন এলাকার সচেতন মহলের। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জীবন আহমেদ বলেন, ‘আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমস্যার অন্ত নাই। তবে মূল সমস্যা হলো, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন না হওয়া। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন নিয়ে পাঠদান করছেন। অথচ আমরা একই রকম পাঠদান করছি বিনা বেতনে। এ রকম আর কতদিন চলতে পারে? সম্প্রতি স্থানীয় এমপি সাধন চন্দ্র মজুমদার ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস করার সমস্ত কার্যক্রম শেষ করে এনেছেন। অনতিবিলম্বে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ এনামুল হক তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বিদ্যালয়ের উন্নতি কল্পে ৫০ হাজার টাকা এবং জেলা প্রশাসক ১ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সুনজর রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি। কিন্তু তার পরেও ১২ বছরেও এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা। এলাকাবাসী, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের দাবী, অবিলম্বে শাংশৈল আদিবাসী স্কুল এ্যান্ড কলেজেটিকে এমপিও ভুক্ত করা হোক।
(বিএম/পিবি/মে ১৩,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test