E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আগৈলঝাড়া হাসপাতালের শুরু থেকেই অপারেশন থিয়েটার বন্ধ

২০১৫ মে ১৮ ১৬:১০:২৯
আগৈলঝাড়া হাসপাতালের শুরু থেকেই অপারেশন থিয়েটার বন্ধ

বরিশাল প্রতিনিধি : একজন বিশেষজ্ঞ সার্জন ও একজন এ্যানেসথেশিয়া ডাক্তারের অভাবে শুরুর পর থেকে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দু’টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার (ওটি) আজও চালু হয়নি। সরকারি ৫০ শয্যায় এ হাসপাতালে নীচ তলা ও দোতলায় আধুনিক অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করলেও তা রোগীদের কোন কাজে আসছেনা। দীর্ঘ দিন যাবত অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকার কারণে অপারেশন থিয়েটারের মেশিনপত্র ও সার্জিক্যাল সরঞ্জামাদিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, এলাকার জনসাধারনের চিকিৎসা সেবাদানের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা এলাকায় ৩১শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার সময় এর নীচ তলায় আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ ১টি অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করা হয়। কিন্তু একজন সার্জন ও একজন এ্যানেসথেসিয়া (অজ্ঞান করার) ডাক্তারের অভাবে শুরু থেকে গত ৪৪ বছর অপারেশন থিয়েটারটি বন্ধ রয়েছে।
২০০৪ সালে ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনটির গা ঘেষে আরেকটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয় এবং একই সাথে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডা. সেলিম মিয়া জানান, গত ১১ বছর যাবত মেশিনপত্রে সাজানো অপারেশন থিয়েটার পড়ে রয়েছে অলসভাবে। নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় পোষ্ট-অপারেটিভ রুমসহ ৫টি রুম নিয়ে তৈরি করা হয় নতুন ভবনে আরো একটি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার। ওই বছর অপারেশন থিয়েটারটি চালুর জন্য সরকার আরো একটি আধুনিক মেশিন ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি আগৈলঝাড়া হাসপাতালে পৌছে দেয়। হাসপাতালে চিকিৎসকদের ২১টি পদের বিপরীতে বর্তমানে মাত্র ১২ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে রয়েছে আধুনিক সুবিধার ব্লাড ব্যাংক রেফ্রিজারেটর, অপরোশন লাইট সিলিং, অটো ক্লিপ, বেবী কিউরেটর, ৩০০এমএ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এক্স-রে মেশিন, ১২ চ্যানেলের ইসিজি মেশিন, ২০ কিলোবাইটের সয়ংক্রিয় জেনারেটর, দুটি এ্যাম্বুলেন্স। এত কিছু থাকার পরেও একজন অভিজ্ঞ সার্জন ও একজন এ্যানেসথেসিয়া ডাক্তারের অভাবে রোগীদের অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছেনা। অন্যদিকে ডেন্টাল ইউনিট গত পাঁচ বছর যাবত নষ্ঠ থাকায় ওই বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক জনগনের স্বাস্থ্য সেবা দিতে পারছেনা। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগন। অন্যদিকে দুই জন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত ডাক্তার থাকার পরেও একটি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনের অভাবে চিকিৎসা সেবা মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে।
ফলে এ হাসপাতালে ২টি অপারেশন থিয়েটার থাকা সত্ত্বেও মাত্র একজন সার্জন ও একজন এ্যানেসথেশিয়া ডাক্তারের অভাবে দুই লক্ষাধিক জনগনের কোন কাজে আসছেনা। সামান্য অপারেশনের জন্য রোগীদের বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক বা জেলা শহর থেকে রাজধানী ঢাকায় যেতে হচ্ছে। অন্যদিকে কর্তব্যরত কয়েকজন অসাধু চিকিৎসকদের অর্থের বিনিময়ে “গুরুতর জখম” সার্টিফিকেট বানিজ্যর কারণে এলাকায় মিথ্যা মামলার সংখ্যা বেড়েই চলেছে বলে থানা সূত্র দাবি করেছে।
সরেজমিন আগৈলঝাড়া হাসপাতালে দেখাগেছে, ২টি অপরেশন থিয়েটার তঅলাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। প্রায় একযুগ যাবত অপারেশন থিয়েটারের মেশিনপত্র অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকার কারণে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে হাসপাতালের প্যাথলজি ও ডায়গনষ্টিক থাকলেও হাসপাতালের সামনে থাকা প্যাথলজি ও ডায়গনষ্টিক সেন্টার গুলোর সাথে ডাক্তারদের অবৈধ সক্ষতার কারণে রোগিদের বাধ্য হয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষর জন্য যেতে হচ্ছে হাসপাতালের বাহিরের ডায়াগনিস্টিক সেন্টার গুলোতে।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম মিয়া বলেন, হাসপাতালে ওটি চালু ও শুন্য চিকিৎসক নিয়োগের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বহুবার আবেদন করা হলেও এ ব্যাপারে সাড়া মিলছেনা।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপ-পরিচালক বাসুদেব দাস বলেন, বিষয়টি তারা অবগত আছেন। ডাক্তার নিয়োগ মন্ত্রণায়লয়ের অধীনে থাকায় তিনি কিছু করতে পারছেননা। তিনি আরও বলেন বিষয়টি স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর দৃষ্টি আকর্ষণ করা গেলে সমাধান সম্ভব।

(টিবি/পিবি/মে ১৮,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test