E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাজৈরের টেকেরহাট-কদমবাড়ী সড়কটির বেহাল দশা

২০১৫ মে ১৯ ১৮:০৪:৪১
রাজৈরের টেকেরহাট-কদমবাড়ী সড়কটির বেহাল দশা

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট-কদমবাড়ী এই আঞ্চলিক সড়কটির বেহালদশা। ফলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দে ভরে গেছে এ সড়কটি। প্রায়ই ঘটছে দুঘর্টনা।

এছাড়াও আগামী ১৩ জ্যৈষ্ঠ কদমবাড়ীতে উপমহাদেশের অন্যতম কুম্ভ মেলায় এ সড়কে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ ভক্তের যাতায়াত নিয়ে এলাকাবাসী ও আশ্রম কমিটির সদস্যবৃন্দ শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিন ঘুরে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই যুগ আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট-কদমবাড়ীর প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

কয়েক বছর আগে যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত এ সড়কের কার্পেটিং ও পিচ ঢালাইয়ের কাজ করা হলেও এ সড়কের আর কোন উন্নয়ন হয়নি। অপ্রশস্ত ও খানা খন্দকে ভরা এ সড়কে যাত্রীবাহী মাহিন্দ্র, ইজিবাইক ও অন্যান্য ছোট যানবাহনকে সাইড দিতে গিয়ে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা।

এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত রাজৈর উপজেলা ও কদমবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় পঞ্চাশটিরও অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করলেও মেরামতের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। জরাজীর্ণ এ সড়কে মাহিন্দ্র, ইজিবাইক ও অন্যান্য যানবাহনকে শিশু, বৃদ্ধ ও রোগী নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে অত্যন্ত ঝুকি নিয়ে। চলতে হচ্ছে মালামালবাহী ভারী যানবাহনকে।

এ দিকে আগামী ১৩ জ্যৈষ্ঠ কদমবাড়ীর দিঘিরপাড় মহামানব শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রমে উপমহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কুম্ভ মেলায় লাখ লাখ ভক্তের আগমন ঘটবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় তীর্থ যাত্রীরা যথাসময়ে কুম্ভ মেলায় উপস্থিত হতে পারবে কি না এ নিয়ে আগত ভক্ত, স্থানীয়রাসহ মন্দির কমিটির সদস্যদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী কুম্ভ মেলার আগে সড়কটি মেরামতের জন্য নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সড়ক মেরামতের জোর দাবি জানিয়েছিলেন।

মাদারীপুর এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে সড়কটি মেরামতের জন্য বরাদ্দও পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সড়কের কার্পেটিং এর প্রস্ততা কম হওয়ায় হেড কোয়ার্টারের নির্দেশ মোতাবেক ১৮ ফুট কার্পেটিং এর প্রসস্ত বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। ১৫-১৬ অর্থ বছরে বরাদ্দ আসলে জরাজীর্ণ সড়কের মেরামত করা সম্ভব হবে। এ দিকে সড়কটি প্রসস্ত করার জন্য দুই পাশের্^ ৬ কিলোমটিারে মত মাটি কাটার কাজ শেষ করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

স্থানীয় সুমন কর্মকার, রঞ্জিত পোদ্দার, চয়ন সাহাসহ একাধিক গ্রামবাসী জানান, সড়কটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ায় অধিকাংশ লোক কদমবাড়ীর রথবাড়ী হয়ে ভেন্নাবাড়ী দিয়ে গোপালগঞ্জের-সাতপাড়-টেকেরহাট পথে যাতায়াত করছে।

আবার অনেকে নটাখোলা হয়ে সাতপাড় স্টেশন উঠে রাজৈরের টেকেরহাট সড়ক পথে যাতায়াত করে থাকে। এমনকি নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান গত ১১ এপ্রিল কদমবাড়ীর নটাখোলা মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় বিদ্যুৎ লাইন উদ্বোধন ও সুধী সমাবেশে বক্তব্য শেষে নটাখোলা সড়ক পথ দিয়ে গোপালগঞ্জের সাতপাড় সড়কপথে রাজৈরের টেকেরহাট আসেন। সড়কটি যোগাযোগের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ায় মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ দুই জেলার কয়েক হাজার মানুষের নিয়মিত যাতায়াতে অবর্নণীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

কদমবাড়ী গ্রামের সাবেক অধ্যক্ষ শচীন্দ্র নাথ কির্তনীয়া জানান, রাজৈর-কদমবাড়ী সড়কের যে জরাজীর্ণ অবস্থা এ পথে কুম্ভ মেলায় লাখ লাখ ভক্তের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে। সড়কটি মেরামতের জন্য দীর্ঘ ৩ বছর আগ থেকে উচ্চ পর্যায়ে এবং নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খানের কাছে কদমবাড়ীর জনগণ একাধিকবার অনুরোধ করেছে। কিন্তু ১৩ জ্যৈষ্ঠের আগে সড়কটি মেরামত করা সম্ভব হলো না। সড়কটি মেরামত না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

মাদারীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী নির্মল কুমার বিশ্বাস জানান, চলতি অর্থ বছরে ১৯শ ফুট রাস্তা পাকা করণের জন্য অনুমোদন পাওয়া গেলেও কার্পেটিং এর প্রশস্ততা কম হওয়ায় হেড কোয়ার্টারের নির্দেশে মোতাবেক ১৮ ফুট কার্পেটিং এর প্রশস্ত ধরে নতুন প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হচ্ছে। ১৫-১৬ অর্থ বছরে বরাদ্দ পেলেই ১২ কিঃ মিঃ রাস্তার মেরামত করা সম্ভব হবে। আর এতে জনগণের যাতায়াতের পথ সুগম হবে।

(এসএএস/এএস/মে ১৯, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test