E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আটকা পড়েছে দুই হাজার কনটেইনার

মংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামা বন্ধ ১১ জাহাজে

২০১৫ মে ২৪ ২০:৩৫:৩০
মংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামা বন্ধ ১১ জাহাজে

বাগেরহাট প্রতিনিধি : পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে হয়রানি বন্ধসহ ৩ দফা দাবিতে মংলা কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস (সিঅ্যান্ডএফ) অ্যাসোসিয়েশনের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের পঞ্চম দিনে রবিবার মংলা বন্দরে আটকা পড়ে রয়েছে দুই হাজার কন্টেইনার।

আর মংলা বন্দর জেটিসহ বহির্নোঙ্গরে অপেক্ষমান ১১টি জাহাজে পন্য ওঠানামা বন্ধ হয়ে গেছে।

অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের কারণে মংলা বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি পণ্য সরবরাহ, শুল্কায়ন ও ডিউটি পেমেন্টসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছে বন্দর ব্যবহারকারী আমদানি-রফতানিকারকরা।

মংলা কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুলতান হোসেন খান জানান, বুধবার থেকে শুরু হওয়া সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস মালিক ও কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট রবিবারও অব্যহত আছে।

এর ফলে মংলা বন্দরে আমদানি-রফতানি পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। বন্দর জেটি থেকে আমদানি পণ্যের কোনো চালান খালাস হয়নি। আটকা পড়ে রয়েছে দুই হাজারের অধিক কন্টেইনার। বন্দর জেটিতে বর্তমানে ১টি জাহাজ মেশিনারি পন্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। আর বহির্নোঙ্গরে অপেক্ষমান রয়েছে আরও ১০টি জাহাজ।

তিনি দাবী করেন, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন খুলনা শাখা, বাগেরহাট ও খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের আন্দোলন কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

মংলা কাস্টমস কিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আহসান টিটো বলেন, শুল্ক কর্মকর্তারা আমদানি করা পণ্যের কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে আমাদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে। যার ফলে আমরা সময়মতো পণ্য ছাড় করতে পারছি না। এতে একদিকে আমাদের ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে অন্যদিকে সরকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এছাড়া আমদানিকারকদের কাছ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় এই বন্দরে অধিকমূল্য ও শুল্কায়ন আদায় করা হচ্ছে। তাই অবিলম্বে মংলা শুল্ক বিভাগের ওই কর্মকর্তাদের হয়রানি বন্ধ, আরা যারা সিএন্ডএফ এজেন্টদের হয়রানি করছে তাদের অন্যত্র বদলী এবং মংলা বন্দরে যারা চট্টগ্রাম থেকে অধিক মূল্য ও শুল্কায়ন করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, মংলা বন্দরকে অকার্যকর করতে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

কিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. খালেদ রবি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে যে সব মালামাল ১০ শতাংশ পরীক্ষা করা হয় সে সব পণ্য মংলা বন্দরে শত ভাগ নিরীক্ষার নামে চরম হয়রানি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, শতভাগ পরীক্ষা করতে হলে এক্সরে ও আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানিং প্রয়োজন। এ যন্ত্র ছাড়া একটি একটি করে হাতে হাতে পরীক্ষা করার কারণে অযাচিতভাবে সময়ক্ষেপণ ও হয়রানি করছে কাস্টমসের কর্মকর্তারা।

কাস্টমসের হয়রানিমূলক এসব কর্মকাণ্ডের কথা লিখিভাবে ফ্যাক্স বার্তার মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি আকারে দেয়া হয়েছে। তার কোন উত্তর দেয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়ে।

কাস্টমস হাউসের মংলা বন্দর ইউনিটের সহকারী কমিশনার (এসি) সাইফুর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে স্বাভাবিক নিয়মেই তারা অফিসের কার্যক্রম সম্পাদন করছেন।

মংলা বন্দরে শত ভাগ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় এক্সরে মেশিন ও আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানিং মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি না থাকার বিষয়ে তার দৃষ্টি আর্কষন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপক (ট্রাফিক) কাজী মোক্তাদির হোসেন বলেন, বর্তমানে মংলা বন্দর জেটি ও বহির্নোঙ্গরে সার, কিংকার, গ্যাসসহ মোট ১১টি জাহাজ অবস্থান করছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসরা ধর্মঘটের কারনে পণ্য ডেলিভারীর কাজ বন্ধ রেখেছে।

(একে/পিএস/মে ২৪, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test