E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গাজীপুরে যুবকের হাতে নারী খুন, গণপিটুনিতে খুনিরও মৃত্যু

২০১৫ মে ২৭ ১৮:২৪:৩৯
গাজীপুরে যুবকের হাতে নারী খুন, গণপিটুনিতে খুনিরও মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : গাজীপুরে মানসিক ভারসম্যহীন এক যুবকের দায়ের কোপে আকলিমা বেগম নামে এক নারী খুন হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন তাঁর স্বামী আলাউদ্দিন (৫৫)।

পরে জনতার গণপিটুনিতে আহত ওই যুবকেরও হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। গৃহকর্তা আলাউদ্দিনকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর ভানুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ঘাতক মোকারম হোসেন (২০) গাজীপুরের কালীগঞ্জের নরুন গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

নিহত আকলিমা বেগমের (৫০) মেয়ে লিপি আক্তার (৩২) জানায়, ঘাতক মোকারম তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর বড় ভাই মোহাম্মদ আলীর ছেলে। ৪-৫ দিন আগে সে তাদের ভানুয়ার বাড়িতে বেড়াতে আসে। বুধবার সকালে তাঁর মা-বাবা মোকারমকে ঘরে ডেকে এনে নাস্তা খাওয়ায়। সকাল ৮টার দিকে বাবা আলাউদ্দিন বাড়ির আঙ্গিনায় দা দিয়ে বাঁশ কাটছিলেন। পাশেই বসে ছিল মোকারম। হঠাৎ হাত থেকে দা কেড়ে নিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তার বাবার ঘাড়ে ও বুকে কোপাতে শুরু করে। বাবার চিৎকারে বাড়ির ও আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে মোকারম ‘আল্লাহু আকবার’ বলে দা উচিয়ে তাদের দিকেও তেড়ে যায়।

এসময় মা আকলিমা বেগম এগিয়ে গেলে একই কথা বলে তাকেও এলাপাতাড়ি কোপায় সে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মায়ের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর ঢিল ছোড়ে এবং চারদিক থেকে ধাওয়া করে মোকারমকে আটক করে বেঁধে রাখা হয়। পরে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা আলাউদ্দিনকে প্রথমে গাজীপুর তাজউদ্দিন আহামদ হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ডাক্তারের পরামর্শে ঢাকা মেডিকল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তাকে আইসিওতে রাখা হয়েছে। তিনি গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী।

এদিকে খুনের খবর পেয়ে পুলিশ সকাল ১১টার দিকে আকলিমা বেগমের লাশ উদ্ধার করে মর্গে এবং খুনি মোকারকে আহত অবস্থায় গাজীপুর তাজউদ্দিন আহামদ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

মোবারকের বাবা স্থানীয় মাদ্রাসার আহাম্মদ আলী জানান, তার ছেলে কালীগঞ্জের আওড়াখালী বাগে জান্নাত হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ত। ১৬ পারা মুখস্তের পর ২০১১ সালে মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এজন্যে ডাক্তার এবং কবিরাজের কাছে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গত মার্চ মাসে তার পাগলামির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ১৫-২০দিন শিকল দিয়ে ঘরে বেঁধে রাখা হয়েছিল। গত ২ সপ্তাহ আগে সে সুস্থ হয়। কয়েক দিন আগে কাউকে কিছু না জানিয়ে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে মোবাইল ফোনে জানতে পারি বোন রাবেয়া আক্তারের শ্বশুর বাড়ি ভানুয়ায় আছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জানতে পারেন সে বোনের শ্বাশুড়িকে খুন এবং শ্বশুরকে কুপিয়েছে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছেলের মৃত্যুর খবর পান। দুই ছেলের মধ্যে সে ছোট ছিল।

জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, মোকারম মানিসিক ভারসম্যহীন ছিল। এ ঘটনায় আলাদা দু’টি মামলা দায়ের করা হবে।

(এসএএস/এএস/মে ২৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test