E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে চিংড়ি পোনা সংকটে খামারীরা

২০১৫ জুন ১৩ ২০:৫৯:১৯
বাগেরহাটে চিংড়ি পোনা সংকটে খামারীরা

বাগেরহাট প্রতিনিধি : মৌসুমের শুরুতে পোনা সংকটের কারণে বাগেরহাটের চিংড়ি চাষীরা মহাবিপাকে পড়েছেন। চিংড়ি চাষ মৌসুমের এক মাস পার হলেও অধিকাংশ গলদা চাষীরা আজও তাদের ঘেরে চাহিদা মত পোনা ছাড়তে পারেননি।

নদ-নদীতে এ বছর পোনার স্বল্পতা এবং দেশীয় হ্যাচারিগুলোতে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন কম হওয়ার কারণে প্রধানত এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া নানা বিধি-নিষেধ, ঘাটে-ঘাটে চাঁদাবাজি, ঝুঁকিমুক্ত মানসন্মত হ্যাচারীর পোনার অভাবেও সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এ অবস্থায় যা সামান্য পোনা পাওয়া যাচ্ছে তার দাম অস্বাভাবিক।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, লবণ পানি অধ্যুষিত বাগেরহাটে প্রায় আড়াই যুগ আগ থেকে ধানের পরিবর্তে বছরের প্রায় ৮ মাসই বাগদা চিংড়ি চাষ হয়ে আসছে। ৭১ হাজার ৪৭ হেক্টর জমিতে বাগদা, গলদা ও সাদা মাছের চাষ হয়। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে ঘেরের সংখ্যা ৭৪ হাজার ৯৯২টি। আর এসব ঘেরে প্রয়োজন রয়েছে কয়েক’শ হাজার কোটি মাছের পোনা।

ফকিরহাট রেনু পোনা সমিতির সভাপতি খান লিয়াকত হোসেন জানান, এ অঞ্চলে চাষীদের প্রতিবছর কয়েক’শ হাজার কোটি পোনার চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ২৫/৩০ কোটি পোনা হ্যাচারি থেকে সরবরাহ হয়। বাকি পোনা নদ-নদী থেকে আহরণ করে চাহিদা মেটাতে হয়।

কিন্তু এবার নদীতে পোনার সংকট দেখা দিয়েছে। হ্যাচারীতেও উৎপাদন কম হয়েছে। হ্যাচারীতে ঝুঁকিমুক্ত মানসম্মত পোনার অভাব রয়েছে। তাছাড়া রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজির কারণে খরচ বেশি হচ্ছে। যা পাওয়া যাচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত কম। ফলে দামও অস্বাভাবিক।

বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষী সমিতির আহ্বায়ক ফকির মহিদুল ইসলাম সুমন জানান, ভোলা, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, বরগুনা, সাতক্ষীরা, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভন্ন নদ-নদীতে পোনা সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীরা এখানে বিভিন্ন মোকামে নিয়ে আসেন। এই পোনা ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারীসহ দক্ষিনাঞ্চলের চাষীরা সংগ্রহ করেন।

ফকিরহাট উপজেলা চাষী সমিতির সভাপতি কাজী আবু বক্কর নান্নু জানান, এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস মৎস্য চাষ। বর্তমান সময় মৎস্য ঘেরে পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময়। এ সময় ঘেরে পোনা ছাড়তে না পারলে চাষীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ঋণের বোঝা কাঁধে করে পরিবার পরিজনসহ পথে বসতে হবে। সরকারও কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে। দিশেহারা চিংড়ি চাষীসহ সংশ্লিষ্টরা নানা দাবিতে মানববন্ধন, সমাবেশসহ আন্দোলনের কর্মসূচী অচীরেই ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র মন্ডল বলেন, নদ-নদীতে যথেচ্ছ পোনা আহরণ, সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ নিধনের ফলে এবার প্রাকৃতিক উৎস্য থেকে পোনা তেমন পাওয়া যায়নি। তাছাড়া এ বছর হ্যাচারিগুলোতেও কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রায় উৎপাদন না হওয়ার কারণে গলদা পোনার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভিন্ন উৎস থেকে এ চাহিদা পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

(একে/পিএস/জুন ১৩, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test