E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শেরপুরে স্থানাভাব নিয়ে শংকায় চাল কল মালিকরা

২০১৪ মে ১৮ ১৬:০১:০৫
শেরপুরে স্থানাভাব নিয়ে শংকায় চাল কল মালিকরা

শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর জেলায় চলতি বোরো মওসুমে সরকারীভাবে ৩৮ হাজার ৫৫৩ মেট্রিক টন চাল এবং ২ হাজার ৮৩২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলায় বোরো ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। কিন্তু শেরপুর সদর উপজেলায় খাদ্য গুদামগুলোতে স্থানাভাবের কারণে শুরুতেই সংগ্রহ অভিযান বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

এজন্য শেরপুর সদরের গুদামগুলো থেকে অন্যস্থানে চাল পরিবহন করে গুদামের জায়গা খালি করা জরুরী হয়ে পড়েছে বলে চালকল মালিক ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারীভাবে বোরো সংগ্রহের জন্য এবার চাল প্রতি কেজি ৩১ টাকা এবং ধান প্রতি কেজি ২০ টাকা দর নির্ধারন করা হয়েছে। কৃষকরা সরাসরি খাদ্যগুদামে হাজির হয়ে ধান বিক্রী করতে পারবেন। চালকল মালিকদের নিকট থেকে চাল সংগ্রহ করা হবে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৩৮৭ জন চাল কল মালিকের সাথে প্রাথমিকভাবে চুক্তি করা হয়েছে। গত ৩০ মে থেকে বোরো সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে এবং আগামী এ সংগ্রহ অভিযান চলবে ৩০ আগষ্ট পর্যন্ত।
সূত্রমতে, শেরপুর সদর উপজেলার ১৩ টি এলএসডি খাদ্যগুদামের মোট ধারণ ক্ষমতা ৭ হাজার মে. টন। বর্তমানে এসব গুদামগুলোতে মজুদকৃত ধান-চাল-গম রয়েছে প্রায় ৬ হাজার মে. টন। সদর উপজেলায় এবার বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করা হয়েছে চাল ২১ হাজার ৫৬৮ মে. টন এবং ধান ৭৪৩ মে. টন। এ অবস্থায় যদি সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান-চাল সংগ্রহ করা হয় তাহলেও নির্ধারিত সময়ে তিনবার গুদাম খালি করতে হবে। গুদামের জায়গা খালি না হলে বর্তমান অবস্থায় শেরপুর সদরের খাদ্যগুদামগুলোতে মাত্র দুই/আড়াই হাজার মে. টনের বেশী বোরো সংগ্রহ নেওয়া সম্ভব হবেনা।
জেলা চাউল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রওশন জানান, এবারের সরকারী সংগ্রহ নীতিমালায় কিছুটা ক্রুটি রয়েছে। এতে সংগ্রহ অভিযান বাঁধাগ্রস্ত হতে পারে। তিনি জানান, নীতিমালায় খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তিবদ্ধ চালকল মালিকদের ১৫ দিনের মধ্যে সরকারী খাদ্য গুদামে সম্পুর্ণ চাল সরবরাহ করার বাধ্যবাদকতা রয়েছে। কিন্তু খাদ্যগুদামগুলোতে স্থানাভাব প্রকট। আমরা চালকল মালিকরা গুদামে চাল দিতে প্রস্তত আছি। কিন্তু এখনতো গুদামেই জায়গা নেই। সব চাল নিয়ে তারা শেষ করতে পারবেনা। জেলায় বর্তমানে গুদামগুলোতে মাত্র ৭ হাজার মে. টন জায়গা খালি আছে। তিনি স্থানীয় সমস্যা এবং সামনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বিবেচনায় বোরো সংগ্রহ নীতিমালা পরিবর্তন করে চুক্তিবদ্ধ চালকল মালিকদের সরবরাহের মেয়াদ কিছুটা বাড়ানোর দাবি জানান।
শেরপুর এলএসডি খাদ্যগুদামের সংরক্ষণ ও ছলাছল কর্মকর্তা মোা. আসাদুজ্জামান খান গুদামের স্থানাভাবের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের নিকট শেরপুর সদরের গুদাম থেকে মজুদ ধান-চাল-গম অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য জানিয়েছি। কেননা, এবারের বোরো সংগ্রহ নীতিমালায় চুক্তিবদ্ধ চালকল মালিকদের চুক্তির ১৫ দিনের মধ্যে চাল সরবরাহের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটওয়ারী বলেন, শেরপুরের চালের মান খুবই ভাল। এখানকার খাদ্য গুদামের চাল অন্যান্য জেলায় নেওয়ার জন্য সবাই মুখিয়ে থাকে। যে কারণে আমরা আশা করছি, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখানকার গুদামের মজুদ খাদ্যশষ্য অন্যত্র পরিবহনের মাধ্যমে গুদাম খালি করে বোরো সংগ্রহ সফল করতে পদক্ষেপ নেবেন।
শেরপুর এলএসডি খাদ্যগুদামে ১৭ মে শনিবার এবারের বোরো সংগ্রহ অভিযান আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন হুইপ আতিউর রহমান আতিক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হায়দার আলী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-জেলা চাউল কল মালিক সমিতির সভাপতি আশরাফুল আলম সেলিম, শেরপুর চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রকাশ দত্ত, সংগ্রহ কমিটির সদস্য ফখরুল মজিদ খোকন, জিয়াউল হক বিএসসি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে হুইপ আতিক গুদামের স্থানাভাবের সমস্যাটি যাতে দ্রুত সমাধান হয় সেজন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ করে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।
(এইচবি/এএস/মে ১৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test