E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরের লালপুর-বনপাড়া সড়কের বেহাল অবস্থা

২০১৫ জুলাই ০৯ ১৭:২২:৩৫
নাটোরের লালপুর-বনপাড়া সড়কের বেহাল অবস্থা

মামুনুর রশীদ,নাটোর :সামান্য বৃষ্টি হলেই হাটু পানি আর কাদাতে লুটোপুটি খায় যানবাহন। শুকনো মৌসুমে ধুলো-মাটিতে অবস্থা এমন হয়, যেন সদ্য ট্রাক্টর দিয়ে চষে যাওয়া আবাদের জমি। দীর্ঘদিন ধরে নাটোরের লালপুর-বনপাড়া আঞ্চলিক সড়ক এমনই অবস্থা বিরাজ করছে।

খানা খন্দের সৃষ্টি হলেও তা স্থায়ী সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয় না। শুধুমাত্র ঈদ আসলেই নিম্ন মানের ইটের খোয়া ও বালি দিয়ে গর্তগুলো ভর্তি করে দেওয়া হয়। ক’দিন যেতে না যেতেই যানবাহনের চাকায় পিষে তা লাল-হলুদ রংয়ে ধুলোয় পরিণত হয়ে পুর্বের অবস্থা ফিরে যায়।

ফলে যানবাহন চলে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। এতে যাত্রিদের ভোগান্তি সহ দুর্ভোগের শিকার হতে হয় প্রতিনিয়িত। মাস যায়, বছর যায় এই এলাকার মানুষের ভোগান্তির শেষ হয় না। বর্তমানে ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষগুলোকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে এই সড়কে। এমনই হতাশা আর কষ্টের কথা জানালে লালপুর এলাকার সাধারন মানুষ।

বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই লালপুর-বনপাড়া আঞ্চলিক সড়কের অধিকাংশ এলাকায় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে লালপুর বাজার সংলগ্ন এলাকা, ভূইয়াপাড়া ও চকনাজিরপুর মোড়ে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে। সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের সামনে দেখা যায়, একটি ট্রাকের চাকা সড়কের গর্তে পুঁতে পড়েছে। অন্য একটি ট্রাক দিয়ে ঠেলে এবং ট্রাক্টর দিয়ে টেনে সেটি তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রায় এক ঘন্টা প্রানান্ত চেষ্টার পর অবশেষে ট্রাকটিকে টেনে তোলা হয়। পথচারীরা জানান, এই অবস্থা শুধু একদিনের নয়, মাঝে মধ্যেই এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। এই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে অনেক যানবাহনের যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে পড়ছে এমনও নজির রয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, এই সড়কে প্রতিনিয়ত ছোট খাটো দুর্ঘটনায় পড়ে যাত্রিদের ভোগান্তি সহ দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। অন্যদিকে ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষগুলোকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। গোপালপুর পৌর এলাকার ভিতরের ভাঙ্গা অংশে মাঝে মধ্যে ইট ফেলে যান চলাচলের উপযোগী করা হলেও যাত্রি ও যানবাহন চালকদের দুভোর্গ কমছেনা। অথচ সড়ক ও জনপথ বিভাগ দীর্ঘ দিন ধরে স্থায়ী ভাবে সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে তারা অভিযোগ করেন।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা দাবী করেছেন, সড়কের বেশির ভাগ এলাকায় পানি নিষ্কাষণের ব্যবস্থা থাকলেও এই এলাকায় নেই। ফলে বৃষ্টির পানি সড়কে জমে থাকার কারণে প্রতি বছর এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। স্থানীয় পৌরসভার অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। পৌরসভা উদ্যোগ নিলেই এই সমস্যা অনেকাংশ লাঘব হবে।

একই কথা জানালেন স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের কোল ঘেঁষে পৌরসভা নির্মিত পানি নিস্কাশনের ড্রেন রয়েছে। অথচ এই ড্রেনের সাথে সড়কের পানি নেমে যাওয়ার মত কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে থাকে। এতেই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।

গোপালপুর পৌরসভার মেয়র মঞ্জুরুল ইসলাম বিমল জানান, সড়কটি পৌরসভার নয়, সড়ক বিভাগের। তারাই পানি নিষ্কাষণের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নিবেন। অথচ সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই সড়কটি গত দু’বছর ধরে চলাচলের জন্য অযোগ্য হয়ে আছে। কিন্তু তারা স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহন করেন না।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল মোত্তালিব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেন। বারবার আবেদন করায় তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয় বলে জানান তিনি।

নাটোর-১ সংসদ সদস্য (লালপুর-বাগাতিপাড়া) অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ার কথা স্বীকার করে জানান, সংসদে বিষয়টি তুলে ধরায় সড়কটি সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দেন।

নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিকরুল ইসলাম জানান, জনসাধারনের দুভোর্গ রোধে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সড়কটি মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হবে। ইতিমধ্যেই সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ইট, বালি ও খোয়া দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া এই জেলা সড়ক পুনঃনির্মানের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে । াচিরেই টেন্ডার আহবান করা হবে।


(একে/এসসি/জুলাই০৯,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test