E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রায়পুরে বিদ্যালয় মেরামতের নামে লুটপাটের অভিযোগ

২০১৫ জুলাই ১০ ১১:৪৮:৫১
রায়পুরে বিদ্যালয় মেরামতের নামে লুটপাটের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারের নামে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের গত এপ্রিল ও মে মাসে পৃথক সরকারি বরাদ্ধের ১৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা জুন ক্লোজিং এর নামে লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার, দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্লাষ্টার, উপজেলা প্রকৌশলী, পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে এ লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় স্থানীয় সচেতন মহলের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে কয়েকজন প্রধান শিক্ষক অনিয়মের কথা স্বীকার করলেও অন্যরা সম্পূর্ণ কাজ করেছেন বলে দাবি করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রনালয় কর্তৃক ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রায়পুর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামতের জন্য পৃথক ৭টি বিদ্যালয়ের অনুকুলে ১লাখ টাকা ও ১৬টি বিদ্যালয়ের অনুকুলে ৩০ হাজার টাকা হারে ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং ২৪ বিদ্যালয়ের অনুকুলে ২০ হাজার টাকা হার ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয় মেরামত অথবা যেসব বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে সে বিদ্যালয়গুলোতে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণে বরাদ্দের টাকা ব্যয়ের জন্য বলা হয়েছে। এতে বলা রয়েছে স্ব স্ব বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ের কাজ সম্পন্ন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্লাষ্টার এবং উপজেলা প্রকৌশলীর কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে ওই বরাদ্ধের টাকা তুলে নিবেন। কিন্তু এ কাজে সংশ্লিষ্টরা দূর্নীতি ও অনিয়ম করে টাকাগুলো লুটপাট করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দু’দিন সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক লাখ টাকার বরাদ্দে চরমহনা সোলতান আহম্মেদ, চরপাগলা কাগীবাড়ী, মধ্যে রায়পুর, কেরোয়া মানজুরা, উত্তর গাইয়ারচর, দক্ষিন চরকাছিয়া কদমআলী ও উত্তর চরবংশী জাপরিয়া সরকারি প্রথমিক বিদ্যায়ল এবং ৩০ হাজার টাকার বরাদ্দে রাখালিয়া-২, চরবামনী, কাঞ্চণপুর, রায়পুর এলএম, সেন্ট্রাল কেরোয়া, রায়পুর বালিকা সরকারী, পূর্ব চরপাতা, পূব সোনাপুর, চরবংশী-২, পূর্ব চরলক্ষী, বরোচর, চরআবাবিল এছি, পূর্ব উদমারা, চরআবাবিল, রাখালিয়া-১ ও বেপারীর চর সরকারি প্রথমিক বিদ্যায়ল এবং ২০ হাজার টাকার বরাদ্দে মধ্য কলাকোপা দিনারুন্নেছা, দেনায়েতপুর, চরপাতা এসএইচএম, লুধুয়া, কেরোয়া সিরাজিয়া, মধ্য কেরোয়া, দক্ষিন কেরোয়া, পশ্চিম সাগরদি, দক্ষিণ পশ্চিম রাখালীয়া, ঝাউডগি, মধ্য কাঞ্চনপুর, হায়দরগঞ্জ টিআরএম, চরমোহড়া, চরবগা, গাইয়ারচর, চরকক্ষি, চরপাঙ্গাসীয়া, দক্ষিণ গাইয়ারচর, কেরোয়া ডগী, পশ্চিম চরলক্ষী, দক্ষিণ রায়পুর বিএন, মধুপুর ও পশ্চিম চর আবাবীল সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়গুলো বরাদ্দের টাকা নিয়ম অনুযায়ই মেরামত ও নতুন শ্রেনীকক্ষ নির্মাণ না করে অনিয়মের মাধ্যমে কাজ শেষ দেখিয়ে বিল জমা দিয়েছেন।

অনিয়মের বিষয়ে যোগাযোগ করলে চরবামনী সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম বলেন, জুন ক্লোজিংয়ের কারনে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাড়াহুরো করে বিল জমা দেওয়া হয়েছে। এখন না হলেও পরে আস্তে আস্তে কাজ হবে। এদিকে চরবংশী-২, চরআবাবিল এসসি, পূর্ব উদমারা ও রাখালিয়া-১ সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব নয়। তারপরও সম্পূর্ণ কাজ করে বিল জমা দেওয়া হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।

এব্যাপারে রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী আক্তার হোসেন ভূইয়া বলেন, সরজমিনে তদন্তে গিয়ে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দে স্কুলগুলোর কাজের অনিয়ম হওয়ায় ওই সব বিদ্যালয়ের বিল বন্ধ করা হয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দের কাজগুলো তদন্ত করে বিল দেওয়া হবে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার ভারপ্রাপ্ত আঞ্জুমানারা বিথী জানান, এখানে আমি নতুন যোগদান করেছি। কাজ তদারকির দায়িত্ব আমার নয়। তবুও সরকারি বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের মান সঠিক কী না প্রকৌশলীর মাধ্যমে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

(এমআরএস/এসসি/জুলাই১০,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test