E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলেজ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করার আগেই বিল প্রদান!

২০১৫ জুলাই ১৬ ১৯:৪৪:৩৭
কলেজ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করার আগেই বিল প্রদান!

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধিন তিনটি কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মানের কাজ শুরু না করেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে প্রায় ৪২ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে ২০১৪-৪৫ অর্থ বছরে সিরাজগঞ্জ জেলার ১৩ টি বেসরকারী কলেজে একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য সময় শেষের দিকে আসায় তড়িঘড়ি করে ১৩ মে দরপত্র আহবান করা হয়। জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিলো ২ জুন। প্রতিটি কলেজের জন্য প্রায় এক কোটি ৩৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এর মধ্যে তিনজন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ২২ জুন থেকে ২৫ জুনের মধ্যে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।

কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, কার্যাদেশ নেয়ার পর পরই কয়েকজন ঠিকাদারকে বিল প্রদানের জন্য শিক্ষা কার্যালয় থেকে প্রক্রিয়া শুরু হয়। যেহেতু ৩০ জুনের মধ্যে বিল উত্তোলন করতে না পারলে টাকা ফেরত যাবে। এ কারণে সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের দিয়ে পরিমাপ বইতে মাপঝোখ লিখে ১৩ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিল প্রদান করা হয়। অথচ এ সকল কলেজের কোন কাজই শুরু হয়নি। কলেজ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো হচ্ছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলপ ডিগ্রী কলেজ এর ঠিকাদার মের্সাস মোহাম্মদ আলী, বেলকুচি ডিগ্রী কলেজ ঠিকাদার মেসার্স লতা কন্সট্রাকশন এবং কামারখন্দ উপজেলার সামসুদ্দিন সেলিনা মোমোরিয়াল কলেজ ঠিকাদার মেসার্স তালুকদার ট্রেডার্স। এই তিনটি কলেজের বিপরীতে কাজ না করেই বিল প্রদান করা হয়েছে।

গত রবিবার ১২ জুন কলেজে গুলো ঘুরে দেখা গেছে, কামারখন্দ সামসুদ্দিন সেলিনা মোমোরিয়াল কলেজ ভবনের মাটি কাটার কাজ চলছে, সলপ কলেজে ইটবালু নিয়ে রাখা হয়েছে, এবং বেলকুচি ডিগ্রী কলেজেও মালামাল রাখা দেখা গেছে। সাইটের কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে আলম মিয়া, আলহাজ হোসেন ও ছাব্বির মিয়া বলেন, আমরা মাটি কাটছি, খোয়া ভাঙ্গাও শেষ। বৃষ্টির কারনে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। দুই একদিনের মধ্যে পিলার তৈরির জন্য নিচে ঢালাই করা হবে। সলপ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোছাঃ হাসিনা খাতুন বলেন, কলেজের সাইটে ইটবালু খোয়া এসেছে। ঠিকাদারের লোকজন বৃষ্টির কারণে কাজ করতে পারছেনা। তারা ঈদের পর কাজ শুরু করবে।

এ বিষয়ে ঠিকাদারের মধ্যে মেসার্স মোহাম্মদ আলীর স্বত্বাধীকারী মোঃ শাহিন মিয়া বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবে সকল মালামাল সাইটে নেয়া হয়েছে। ঈদের পরে জোরদিয়ে কাজ শুরু হবে। ১৫ লাখ টাকার বিল করা হয়েছে। ৩০ জুনের মধ্যে বিল না নিলে টাকা ফেরত যাবে বিধায় এই বিল করা হয়েছে। ওই পরিমান কাজ শেষ করার পর বিল নেয়া হবে। সাইটের কাজের দায়িত্ব কর্মকর্তা উপ-সহকারি প্রকৌশলী এনামুল হক, নূর নবী ও চাদ আলী বলেন, সকল মালামাল সাইটে যাওয়ায় তাদেরকে বিল দেয়া হয়েছে। সকল বিষয়গুলো বগুড়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে।

সার্বিক বিষয়ে বগুড়ার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কাজ কিছু করার পরই প্রাথমিক ভাবে তিনটি ঠিকাদারকে ৪২ লাখ টাকা বিল প্রদান করা হয়েছে। এ পরিমান কাজ ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে। যে কারণে কোন অসুবিধা হবেনা। তা ছাড়া মালামাল সাইটে পৌঁছানো সাপেক্ষে অগ্রিম বিল দেয়ারও বিধান আছে।

(এসএস/পি/জুলাই ১৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test