E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

তাড়াশে পুলিশের অর্থ বাণিজ্য

২০১৫ জুলাই ১৮ ১৫:২৩:০৬
তাড়াশে পুলিশের অর্থ বাণিজ্য

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :সারাদেশে সরকারি নিদের্শ অনুসারে চলমান লাইন্সেস বিহিন মটর সাইকেল ও অন্যান্য গাড়ী আটকে অভিযানে তাড়াশ থানা পুলিশের পোয়াবারো। ইতিমধ্যে তাড়াশ থানা পুলিশ অবৈধ গাড়ী আটকের নামে অর্থ বাণিজ্য শুরু করেছে। গত ২দিনে পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তা লাইন্সেস বিহিন মটর সাইকেল আটকের নামে বিপুল পরিমানে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানাগেছে, সরকারী নিদের্শ মোতাবেক গত ৩জুন থেকে এ অভিযান চলার কথা থাকলেও পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে তা শিথিল করে ৩জুলাই পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয় এবং ৪জুলাই থেকে অবৈর্ধ লাইন্সেস বিহিন মটর সাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন আটক শুরু করে। তারই অংশ হিসেবে সারাদেশে পুলিশের অভিযান শুরু হয়। তাড়াশ থানা পুলিশ গত ১৬ জুলাই থেকে এ অভিযান শুরু করে। অভিযান শুরুর প্রথম দিনেই বেশ কিছু মটর সাইকেল আটক করলেও তার চেয়ে বেশী লাইন্সেস বিহীন মটর সাইকেল ধরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় মটর সাইকেল মালিক ও চালককে রাস্তায় জনসম্মুখে পুলিশের নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। আবার সরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার নিদের্শে ও রাজনৈতিক নেতাদের চাপে ইতিমধ্যে অর্ধশত মটর সাইকেল আটকের পর তা মোটা অংকের বিনিময়ে নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে বলে নির্ভর যোগ্য সুত্রে জানাগেছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাযায়, চলমান পুলিশের অভিযানের অংশ হিসেবে তাড়াশ থানা পুলিশ গত ২দিনে উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লাইন্সেস বিহীন মটরসাইকেল আটক করার পর দেনদরবার করে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে অর্ধশত মটর সাইকেল।

গত বুধবার তাড়াশ থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমান ও সঙ্গীয় পুলিশ কনস্টবল আব্দুল মজিদ তাড়াশ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের গেট থেকে দেশীগ্রামের সোহেল রানা নামের এক ছাত্রর মটর সাইকেল আটক করে। পরে ৫০০শত টাকা দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে তাড়াশ থানার পুলিশ কনস্টবল আব্দুল মজিদ ওই মটরসাইকেল চালককে সঙ্গে নিয়ে তাড়াশ মহরী সেরেস্তার নিকট গাড়ী থামিয়ে ৫০০টাকার পরিবর্তে ৩০০টাকা দিতে চাইলে তাকে মারপিট শুরু করে কনস্টাবল আব্দুল মজিদ। প্রকাশ্যে জনসম্মুখে ওই মটর সাইকেল চালক ও মালিক সম্মান শ্রেণীর ছাত্র সোহেল রানাকে মারপিট শুরু করে। পুলিশের মারপিট দেখে স্থানীয় জনতা এ ঘটনায় হতবিহবল হয়ে পরে। পরে তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ এটিএম আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই ঘটনার সত্যতা পেলেও ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশ কনস্টবল আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি বরং পুলিশ কনস্টবল আব্দুল মজিদ এক প্রতিমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে নিজেকে দাপট দেখিয়ে চলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ কনস্টবল আব্দুল মজিদ প্রকাশ্যে মন্ত্রীর লোক বলে দাপটের সাথে বলে বেড়ায় আমায় কেউ কিছুই করতে পারবেনা। তাছাড়া গত বৃহস্পতিবার রাতে তাড়াশ থানার এসআই শামসুল ইসলাম দেশীগ্রাম ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান থেকে লাইন্সেস বিহীন মটরসাইকেল ধরে তা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ওই রাতে ভোগলমান চারমাথা থেকে ২টি লাইন্সেস বিহীন মটর সাইকেল আটক করে। শুরু হয় টাকার দরবার। এঘটনার সময় উপস্থিত স্থানীয় ভোগলমান বাজারের জনতা জানান, দেশীগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মটরসাইকেল ও পুলিশের সাথে দেনদরবার করে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়েছে। এমনি ভাবে গত ২দিনে তাড়াশ থানার পুলিশ থেকে শুরু করে অফিসার পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত লাইন্সেস বিহীন মটরসাইকেল ধরে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে।

লাইন্সেস বিহীন মটর সাইকেল মালিকরা আতংকে থাকলেও সচেতন মহল টাকা নিয়ে মটর সাইকেল ছেড়ে দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে। অভিজ্ঞ মহল মনে করে সরকার যে উদ্দেশ্যে লাইন্সেস বিহীন মটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন বন্ধ করার প্রদক্ষেপ ও সরকারের উদ্দেশ্য বেস্তে যেতে বসেছে কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার কারণে। পুলিশের এ অর্থ বানিজ্য বন্ধ করা না হলে সরকারী নিদের্শ অনেকাংশে সফলতা আসবেনা। মাঝখানে পকেট ভারী হবে পুলিশের। নাগরিক সমাজ বিষয়টি পুলিশের উধ্বর্তন কর্তপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছে।

(এমএমএইচ/এসসি/জুলাই১৮,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test