E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফেঁসে যাচ্ছেন সেই দুলাল!

২০১৫ জুলাই ২৩ ২০:৪৭:৪০
ফেঁসে যাচ্ছেন সেই দুলাল!

বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশাল সরকারি শিশু সদনের দুই শিশুকে নির্যাতনের সত্যতা পেয়েছে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি। দু’এক দিনের মধ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তদন্তে শিশু সদনের (উত্তর) কম্পাউন্ডার মো. দুলাল মিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশও করেছে কমিটি।

অভিযোগের সত্যতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তদন্ত কমিটির সাথে সম্পৃক্ত এক সদস্য। নাম না প্রকাশের শর্তে তিনি জানান, দুই শিশু নির্যাতনের যে ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল এ থেকেই তদন্ত কমিটি নির্যাতনে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। তাছাড়া শিশু সদনে কর্মরত একাধিক কর্মচারী এবং কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলে অভিযোগের প্রমান পেয়েছেন তদন্ত কমিটি। জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও এর বাইরে কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি জানান, আগামী দু’এক দিনের মধ্যে প্রতিবেদনটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

ধারণা করা হচ্ছে তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়া মাত্রই অভিযুক্ত কম্পাউন্ডার মো. দুলাল মিয়ার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে সমাজসেবা অধিদপ্তর। সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে প্রথম ধাপে বিভাগীয় এবং পরবর্তীতে শিশু নির্যাতন আইনেও মামলা দায়ের করা হতে পারে। সেখানে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কম্পাউন্ডার দুলালের ভবিষ্যৎ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠতে পারে। এমনকি তাকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্তও নিতে পারে দপ্তরটি। পাশাপাশি শিশু নির্যাতন আইনিও তার সাজা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত কম্পাউন্ডার দুলাল মিয়াকে অনেক আগেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’

বিষয়গুলোর সত্যতা নিশ্চিত করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) জুলফিকার হায়দার জানান, যদি কোন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয় সেক্ষেত্রে শিশু নির্যাতন আইনের ২০১৩ এর ৭০ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা সহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে।

সঙ্গত গত ১৩ জুলাই সকালে বরিশাল সরকারি শিশু সদনের শিশুর ডালিয়া (১০) এবং আঁখি (৯) ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায় একই দপ্তরে কর্মরত কম্পাউন্ডার দুলাল মিয়া। অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করা ওই নির্যাতনের ৩ মিনিটের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে দশ জুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

ওই দিন গভীর রাতে নির্যাতনকারী কম্পাউন্ডার মো. দুলালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরদিন ১৫জুলাই সকালে ঘটনা তদন্তে বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। একই দিন ঢাকা থেকে বরিশালে এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং নির্যাতিত দুই শিশুর সঙ্গে কথা বলেন দপ্তরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) জুলফিকার হায়দার।

এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দুই কর্মকর্তাকে ১৫ জুলাই রাতে শোকজ করে বিষয়টির ব্যাখ্যা লিখিত আকারে চেয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। ওই দুই কর্মকর্তা হলেন-বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজ কুমার ঘরামি ও সরকারি শিশু পরিবার বালিকা (উত্তর) উপ-তত্ত্বাবধায়ক ইসরাত আরা খানম।

(টিবি/পি/জুলাই ২৩, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test