E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২ সাংবাদিকসহ ৪ জনের নামে থানায় মামলা

২০১৫ জুলাই ২৭ ১৮:০৬:১৪
২ সাংবাদিকসহ ৪ জনের নামে থানায় মামলা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জয়নগরে দু’ শিশুকে গাছের সঙ্গে দড়ি ও শিকল দিয়ে বেঁধে সাজানো ছবি তৈরি করে সংবাদ মাধ্যম ও ফেসবুকে প্রচার করে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করার অভিযোগে দু’ সাংবাদিকসহ চারজনের নামে মামলা(৪২) দায়ের করা হয়েছে।

রবিবার রাতে শ্যামনগর উপজেলার জয়নগর গ্রামের আব্দুল মাজেদ গাজীর ছেলে আনিছুর রহমান বাদি হয়ে তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইনের ২০০৬ এর ৪৭(১) ধারায় এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামীরা হলেন, শ্যামনগর উপজেলার বাদঘাটা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রদূতের শ্যামনগর প্রতিনিধি প্রভাষক সামিউল আজম মনির, উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুস সামাদ গাজীর ছেলে দৈনিক পত্রদূত থেকে সদ্য অব্যাহতি দেয়া কাশিমাড়ি প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম, গোপালপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হান্নান গাইনের ছেলে আব্দুর রশিদ গাইন ও জয়নগর গ্রামের আবুল গাজীর ছেলে ইউনুছ গাজী।

মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামীরা মিথ্যা ও আজগুবি তথ্য সরবরাহকারি ও সরকারের ভাবমুর্তি নষ্টকারি। এরই ধারাবাহিকতায় সাংবাদিক সামিউল মনির ও রবিউল ইসলাম অপর দু’ আসামীর সহযোগিতায় গত ১৭ জুলাই উপজেলার জয়নগর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে মোঃ নাসিম(১০) ও ইসমাইল তরফদারের ছেলে ইয়াছিনকে (৯) ইসমাইল তরফদারের বাড়ি থেকে পাঁচগজ দূরে একটি ছত্রাকযুক্ত আমাগাছের সঙ্গে দড়ি ও শিকল দিয়ে পেচিয়ে জোরালোভাবে বেঁধে ছবি তোলে। পরে ওই ছবি ও প্রতিবেদন ২১ জুলাই দৈনিক পত্রদূত পত্রিকা, ওয়েব সাইট,ফেসবুক ও ইন্টারনেটে মিথ্যাভাবে প্রচার করে। বিষয়টি শিশু নির্যাতন শীর্ষক শিরোনামে প্রচার করে সারাজেতে আলোচিত করে রাষ্ট্র ও সরকারে ভাবমুর্তি নষ্ট করে। এ ছাড়া মামলায় আসামী সামিউল আযম মনির ও রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার আড়ালে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করার অভিযোগ করা হয়।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক আব্দুস সাত্তার জানান, অাসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়ের জয়নগর গ্রামের ইয়াছিন ও নাসিমকে বাড়ির পাশের রাস্তার বেড়া তুলে ফেলার অভিযোগে মারপিট ও কিছুক্ষণ চার হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে প্রতিবেশি গোলাম মোস্তফা ও তার ছেলে গোলাম রহমান। পরে তাদের মা ওই শিশু দু’টিকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

বিষয়টি নিয়ে ২১ জুলাই দৈণিক পত্রদূত পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রাতেই আব্দুল হামিদ বাদি হয়ে শ্যামনগর থানায় বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। গ্রেফতার করা হয় গোলাম মোস্তফাকে।

এ ঘটনার পরদিন দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, সমকালসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, ওয়েবসাইড ও ফেসবুকে ছবিসহ প্রকাশিত হয়। এতে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। দৈনিক কালের কণ্ঠ, জনকণ্ঠ, যুগান্তর, প্রজন্মের ভাবনাসহ স্থানীয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছবি ও সংবাদ সাজানো বলে ছাপা হয়। এতে সাংবাদিকদের উপর ক্ষুব্ধ হন পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।

একপর্যায়ে তারা ঘটনার তদন্তে নেমে পত্রদূত, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার,সমকাল, বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদন ও ছবি সাজানো বলে প্রমান পান। পুলিশ দু’ শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কে কিভাবে তাদেরকে গাছের সঙ্গে শিকল ও দড়ি দিয়ে বেঁধে ছবি উঠিয়েছিল তা প্রকাশ করে। ইসমাইল তরফদারের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ওই ঘটনায় ব্যবহৃত দড়ি ও শিকল।


(আরএনকে/এসসি/জুলাই,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test